কার্ডের বিপরীতে বিক্রি হবে ওএমএসের চাল-আটা
চাইলেই যে-কেউ লাইনে দাঁড়িয়ে সরকারের খোলা বাজারে বিক্রি (ওএমএস) কর্মসূচি থেকে আর চাল বা আটা কিনতে পারবেন না। এখন থেকে ওএমএসের পণ্য কিনতে লাগবে কার্ড।
যারা ওএমএসের নিয়মিত ক্রেতা, তাদেরকে জাতীয় পরিচয়পত্র দেখিয়ে ডিলারদের কাছ থেকে কার্ড নিতে হবে। পাশাপাশি প্রতিদিন একই ক্রেতা চাল বা আটা কিনতে পারবেন না। একটি কার্ডের বিপরীতে একটি পরিবার সপ্তাহে একদিন ওএমএস থেকে সর্বোচ্চ ৫ কেজি চাল ও ৫ কেজি আটা কিনতে পারবেন।
রোববার সচিবালয়ে বোরো সংগ্রহ অভিযান-২০২৩-এ অগ্রগতি, কার্ডের মাধ্যমে ওএমএস বিতরণ ও সামগ্রিক খাদ্য পরিস্থিতি-সংক্রান্ত সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার এ তথ্য জানান।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, টিসিবি কার্ডের মতো ওএমএস কার্ডও চালু করা হবে। কার্ডের বিপরীতে সপ্তাহে একবারের জন্য ওএমএসের পণ্য সংগ্রহ করতে পারবেন ক্রেতারা।
সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, 'আমরা সারা দেশে এলাকাভিত্তিক মাইকিং করছি। যাদের ওএমএসের পণ্য প্রয়োজন তারা ডিলারদের কাছে এনআইডি কার্ড জমা দিচ্ছেন। সেখান থেকে একটি পরিবারের একজনকে বেছে নিয়ে বাকি কার্ড ফেরত দেওয়া হচ্ছে। এতে করে একই পরিবারের একাধিক ব্যক্তির ওএমএসের পণ্য সংগ্রহ করার সুযোগ থাকছে না।'
ইতিমধ্যেই পরীক্ষামূলকভাবে ওএমএসের পণ্য সরবরাহ শুরু হয়েছে জানিয়ে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, আগামী তিন-চার মাসের মধ্যে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। একজন কার্ডধারী সপ্তাহে ৫ কেজি করে চাল ও ৫ কেজি করে আটা পাবেন। যাদের প্রয়োজন তাদের সবাইকেই কার্ড দেওয়া হবে।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, গত সাড়ে চার বছরে করোনা, ঘুর্ণিঝড়, হাওরে বন্যা ও সর্বশেষ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মতো নানান ধরনের দূর্ভোগ গেছে। এর মধ্যেও দেশে খাদ্যের সরবরাহ, মজুতসহ সামগ্রিক কর্মসূচিগুলো ঠিকমতো পরিচালনা করা সম্ভব হয়েছে। চালের দামও রয়েছে স্থিতিশীল। যদিও বিশ্ব খাদ্য ও কৃষি সংস্থার পূর্ভাবাস ছিল বিশ্বে দুর্ভিক্ষ হবে। সেটা মোকাবিলা করা সম্ভব হয়েছে।
চলতি অর্থবছরে সরকার সাড়ে ১২ লাখ টন চাল ও ৪ লাখ টন ধান সংগ্রহ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। আগামী আগস্ট পর্যন্ত এই পরিমাণ চাল ও ধান সংগ্রহ করা হবে।
খাদ্যমন্ত্রী জানান, ২৪ জুন পর্যন্ত ৬ লাখ ৫৬ হাজার ৫৭৮ টন চাল ও ১ লাখ ১৫ হাজার ২৭২ টন ধান কেনা হয়েছে।
তিনি বলেন, এ বছর ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। চালের মানও ভালো। ২৫ জুন দেশে খাদ্যের (চাল, ধান ও গম মিলিয়ে) ১৮ লাখ ৬৭ হাজার ৬০৭ টন এবং ৩০ জুন পর্যন্ত আপদকালীন মজুত হিসেবে ১২ লাখ টন চাল ও ২ লাখ টন গম থাকলেই যথেষ্ট।
মন্ত্রী জানান, খাদ্য উৎপাদন, মজুদ, বিপণন, পরিবহন-সংক্রান্ত আইন শিগগিরই পাশ হবে। আইনটি পাশ হলে চালসহ অন্যান্য খাদ্যপণ্যের বাজারে কারসাজি, অনিয়ম বন্ধ হবে।