ডিএসএ মামলায় জগন্নাথের শিক্ষার্থী খাদিজার জামিন আরো চার মাস স্থগিত
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের (ডিএসএ) ২ মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরাকে হাইকোর্টের জামিনের আদেশ আরো চার মাসের জন্য স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ।
সরকারপক্ষের আপিল শুনানি নিয়ে সোমবার (১০ জুলাই) প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন ৪ সদস্যের আপিল বেঞ্চ এই আদেশ দেন। চার মাস পর এই আাপিলের শুনানি হবে বলে জানিয়েছেন আদালত।
আদালতে খাদিজার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী বি এম ইলিয়াস কচি ও ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুল আলম।
ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া সাংবাদিকদের বলেন, আজকে আপিল শুনানি চার মাসের জন্য স্ট্যান্ডওভার (মূলতবী) করেছেন আপিল বিভাগ। এইসময় পর্যন্ত খাদিজার জামিন স্থগিত থাকেবে।
এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে হাইকোর্ট তার জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন। তবে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন আদেশ স্থগিত করে আপিল বিভাগের শুনানির জন্য পাঠিয়ে দেন চেম্বার বিচারপতি।
অনলাইনে সরকারবিরোধী বক্তব্য প্রচার এবং বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নের অভিযোগে, ২০২০ সালে অক্টোবরে খাদিজাতুল কুবরা এবং অবসরপ্রাপ্ত মেজর দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কলাবাগান ও নিউমার্কেট থানায় আলাদা দুটি মামলা করে পুলিশ। এক সপ্তাহের ব্যবধানে করা দুটি মামলার এজাহারের অভিযোগ এবং বর্ণনা প্রায় একই রকম।
একটি মামলার বাদী নিউমার্কেট থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) খাইরুল ইসলাম এবং অন্যটির কলাবাগান থানার এসআই আরিফ হোসেন। তারা দুজনেই দায়িত্ব পালনকালে মুঠোফোনে ইউটিউবে খাদিজাতুল কুবরা ও মেজর (অব.) দেলোয়ার হোসেনের ভিডিও দেখতে পান। তারপর নিজ নিজ থানায় বাদী হয়ে মামলা করেন। গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর খাদিজাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার পর থেকে তিনি কারাগারে আছেন।
নিউমার্কেট থানার মামলায় এসআই খাইরুল ইসলাম বলেন, ২০২০ সালের ১১ অক্টোবর সকাল ৬টা ২৫ মিনিটে মুঠোফোনে মেজর (অব.) দেলোয়ারের ইউটিউব চ্যানেলে একটি ভিডিও দেখতে পান। 'হিউম্যানিটি ফর বাংলাদেশ' শিরোনামের ভিডিওর সঞ্চালক খাদিজাতুল কুবরার উপস্থাপনায় দেলোয়ার হোসেন তার বক্তব্যে বাংলাদেশের বৈধ গণতান্ত্রিক সরকার উৎখাতের বিভিন্ন নির্দেশনা দেন। মামলাটি রেকর্ড করা হয় সকাল ৮টা ১০ মিনিটে। মামলার এজাহারের সঙ্গে তিন পাতার স্ক্রিনশট ও ভিডিও–সংবলিত সিডি সংযুক্ত করা হয়।
মামলায় অভিযোগ আনা হয়, খাদিজাতুল কুবরা ও দেলোয়ার ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে দেশের বৈধ সরকারকে উৎখাতের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী, সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মনগড়া, বানোয়াট, মিথ্যা, মানহানিকর অপপ্রচার চালিয়ে আসছিলেন। আসামিরা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে শত্রুতা, ঘৃণা, বিদ্বেষ সৃষ্টির অপচেষ্টাসহ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের প্রয়াস চালাচ্ছে।