‘ইউএস, ইউকে, ফ্রান্সে এমন ঘটনা ঘটলে বিদেশি মিশন কি বিবৃতি দেয়?’ - প্রশ্ন মোমেনের
হিরো আলমের বিষয়ে ঢাকায় বিদেশি মিশন থেকে দেওয়া যৌথ বিবৃতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, অন্য দেশে যখন এ ধরনের ঘটনা বা কোনো হত্যাকাণ্ড ঘটে তখন তো কিছু বলেন না।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, 'এটি গ্রহণযোগ্য নয়। শুধু বাংলাদেশে কিছু ঘটলে তারা শোরগোল করে। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স বা অন্যান্য দেশে যখন একই ধরনের ঘটনা ঘটে তখন কেউ কিছু বলেন না।'
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এ সময় তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্ন করেন, বিদেশে বাংলাদেশি নাগরিক নিহত হলে এসব দেশ তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে কিছু বলে কি না। বাংলাদেশি এক নাগরিকের নিহতের বিষয় উল্লেখ করে তিনি জানতে চান, সে বিষয়ে কি কেউ কিছু বলেছে? জাতিসংঘ বা রাষ্টদূতরা দলবেঁধে কি কোনো বিবৃতি দিয়েছেন?
মন্ত্রী বলেন, 'তাদের (বিদেশি কূটনীতিকদের) জিজ্ঞাসা করুন। আপনারা কেন তাদের জিজ্ঞাসা করেন না? কেন তারা বিবৃতি দেন না?'
মোমেন বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করতে কারা এই হিরো আলমের ওপর হামলা করেছে তা জানা দরকার। 'আমরা জানি না। আপনারা কখনোই জানেন না... নির্বাচন বানচালের জন্য এই অপকর্মগুলো করা হয়।'
মোমেন বলেন, সাংবাদিকদের এটা খুঁজে বের করা উচিত। 'আমাকে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন দিন যে, দেশগুলো তাদের নিজস্ব দেশে একই রকম ঘটনা ঘটলে এমন বিবৃতি জারি করেছে।'
পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, এ ধরনের বক্তব্য প্রকাশ বা সম্প্রচার বন্ধ করার সময় এসেছে।
এক প্রশ্নের জবাবে মোমেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করতে চান এবং সে কারণে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আসছেন।
এর আগে ঢাকায় বিদেশি মিশন হিরো আলমের ওপর হামলার সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের পূর্ণ তদন্ত ও জবাবদিহির আহ্বান জানিয়েছে।
এক যৌথ বিবৃতিতে বিদেশি মিশনগুলো বলেছে, 'আমরা হিরো আলম নামে পরিচিত ঢাকা-১৭ আসনের প্রার্থী আশরাফুল আলমের ওপর ১৭ জুলাই হামলার নিন্দা জানাই। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সহিংসতার কোনো স্থান নেই।'
ঢাকায় অবস্থিত কূটনৈতিক মিশনগুলো বলেছে, 'আসন্ন নির্বাচনের সঙ্গে জড়িত প্রত্যেকেরই নিশ্চিত করা উচিত যে তারা অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হবে।'
যৌথ বিবৃতিতে কানাডা, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, নেদারল্যান্ড, নরওয়ে, স্পেন, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদলের দূতাবাস বা হাইকমিশনের কর্মকর্তারা স্বাক্ষর করেছেন। এ ছাড়া হিরো আলমের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
ঢাকা-১৭ উপনির্বাচনে জয়ী মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন, 'নির্বাচন শেষ হওয়ার মাত্র ২০ মিনিট আগে যা ঘটেছিল তা অনাকাঙ্ক্ষিত।'
আরাফাত বলেন, 'আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই। সংশ্লিষ্ট দলগুলো আওয়ামী লীগের শুভাকাঙ্ক্ষী হতে পারেনি। এটা নির্বাচনকে নষ্ট করার উদ্দেশ্যে করা হয়েছে।'
তিনি বলেন, দোষীদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনা উচিত।
ঢাকা-১৭ উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলম গত ১৭ জুলাই বনানী এলাকার একটি ভোটকেন্দ্র থেকে বের হওয়ার সময় শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হন।