বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনকে সমর্থন করে যুক্তরাষ্ট্রের নীতি অব্যাহত থাকবে: মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর
বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনকে সমর্থন করে যুক্তরাষ্ট্রের নীতি অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর।
মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) ওয়াশিংটনে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন যে, তারা অনেকবার স্পষ্ট করেছেন বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনকে সমর্থন করে যুক্তরাষ্ট্র।
তিনি বলেন, "আমরা বিষয়টি প্রকাশ্যে স্পষ্ট করেছি। বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনায় বিষয়টি স্পষ্ট করেছি। যুক্তরাষ্ট্রের এই নীতি অব্যাহত থাকবে।"
জুলাইয়ে ম্যাথিউ মিলার বলেছিলেন, "আমি বুঝি না কেন কেউ আমাদের অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের আহবানে আপত্তি জানাবে। এর আগে অন্য একটি প্রশ্নের উত্তরে বলেছিলাম, অন্যান্য দেশ যখন আমাদের সাথে আমাদের নির্বাচনের প্রসঙ্গ তোলে, তখন আমরা এটিকে অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ বলে গণ্য করি না। আমাদের গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার সুযোগ হিসেবে আমরা সেই আলোচনাগুলোকে স্বাগত জানাই।"
এর আগে বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিতে বাইডেন প্রশাসনের প্রতি আহবান জানিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনকে চিঠি দেন ৬ মার্কিন কংগ্রেস সদস্য।
তারা বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে অভিযোগ করে উদ্বেগ প্রকাশ করেন সেখানে।
চিঠিতে লেখা হয়, '২০২৪ সালের জানুয়ারিতে নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতির চলমান অবনতি সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করতেই আমাদের এই চিঠি।'
এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে এই চিঠি দেওয়ার কিছুদিন আগেই বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে বাইডেন প্রশাসনকে এর বিপরীতে পদক্ষেপ নেওয়ার আহবান জানান মার্কিন কংগ্রেসের অপর ৬ সদস্য।
এছাড়া গত ২৪ মে বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ জাতীয় নির্বাচন যেন অনুষ্ঠিত হয়, সেজন্য নতুন একটি ভিসা নীতি ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র।
নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু না হলে তার জন্য দায়ী ব্যক্তি এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের এই নীতির আওতায় ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ দেওয়া হবে।
গত সপ্তাহে (৩ আগস্ট) বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসও বলেন, তার দেশ বাংলাদেশে একটি সহিংসতামুক্ত অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন চায়।
তিনি বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্র সহিংসতামুক্ত অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানে সকল রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ ও গণমাধ্যমের ভূমিকা থাকতে হবে। তবে কীভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে তা রাজনৈতিক দলগুলোই নির্ধারণ করবে।'
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া গত মাসে বাংলাদেশ সফরে এসে বলেন, বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং অন্য মন্ত্রীদের কাছ থেকে 'দৃঢ় প্রতিশ্রুতি' পেয়েছেন তিনি।
উজরা জেয়া বলেন, 'একটি সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ নির্ভর করে শক্তিশালী গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান এবং নির্বাচনে বাংলাদেশিদের ব্যাপক অংশগ্রহণ ও তাদের দেশের শাসনব্যবস্থার উপর।'
আন্ডার সেক্রেটারি আরও বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের বৈশ্বিক মানবাধিকার নীতির অংশ হিসেবে 'অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ' নির্বাচনকে সমর্থন করে। তারা বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের অংশীদার হিসেবে সেটি বাস্তবায়নে সহায়তা করতে ভূমিকা পালন করতে চায়।