সাগরে ইলিশ ধরা পড়ছে: এক ট্রলারেই ৬০ লাখ টাকার ইলিশ, একদিনে ৭০ টন
রূপালি ইলিশের ঝিলমিল আলোয় হাসি ফুটেছে জেলেদের। সাগর থেকে ট্রলার প্রতি ১ থেকে ৯ হাজার ইলিশ নিয়ে কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে ফিরছেন জেলেরা। শুক্রবার (১৮ আগস্ট) একদিনে ৭০ মেট্রিক টনের বেশি ইলিশ আনা হয়েছে এখানে। সরবরাহ বেশি থাকায় দামও কিছুটা কমেছে।
শুক্রবার সকালে মৎস্য অবতরণ ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, ট্রলার থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ নামানোর পর অবতরণ কেন্দ্রের ৩টি পল্টুনে রাখার স্থান না পেয়ে খোলা মাঠেও ইলিশ মজুত করা হচ্ছে।
এসময় কথা হয় এফবি আল্লাহর দান ট্রলারের মাঝি আবদুল মালেকের সাথে। তিনি জানান, তার ট্রলারে ধরা পড়েছে ৯ হাজার ইলিশ। যা বিক্রি হয়েছে ৬০ লাখ টাকায়।
শুধু এই ট্রলার নয়; প্রতিটি ট্রলারে হাজারের বেশি ইলিশ নিয়ে ফিরছেন জেলেরা।
জেলে রফিকুল আনোয়ার জানান, শুক্রবার ইলিশ নিয়ে শতাধিক ট্রলার ঘাটে ফিরে। যেখানে একদিনে ৭০ মেট্রিক টনের বেশি ইলিশ আনা হয়েছে। সরবরাহ বেশি থাকায় আকারভেদে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা কমেছে প্রতিকেজি ইলিশের দাম।
ব্যবসায়ী জয়নাল আবেদীন জানিয়েছেন, অনেক দিন পর এত ইলিশের দেখা মিলছে। এগুলো এখান থেকে কিনে চট্টগ্রাম-ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রির জন্য নেয়ার প্রস্তুতি চলছে।
ব্যবসায়ী জানে আলম পুতু জানান, শুক্রবার সকাল থেকে এক কেজি সাইজের ইলিশ ১৩-১৫ শত টাকায়। তবে বড় ইলিশের দাম আলাদা।
মৎম্য অবতরণ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ বদরুদ্দৌজা জানিয়েছেন, অবতরণ কেন্দ্রে ক্রমান্বয়ে প্রতিদিনই বাড়ছে ইলিশের সরবরাহ। যার কারণে রাজস্ব আদায়ও বাড়ছে। গত ৩ দিনে কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে অবতরণ হয়েছে ১০০ মেট্রিক টনের বেশি ইলিশ। আর শুক্রবার একদিনে ৭০ মেট্রিক টনের বেশি ইলিশ সরবরাহ হয়েছে।
নাফ নদীতে আড়াই কেজি ওজনের ইলিশ
কক্সবাজারের টেকনাফে এক জেলের জালে ধরা পড়েছে ২ কেজি ৪০০ গ্রাম ওজনের ২টি ইলিশ মাছ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নাফ নদীতে জাল ফেলার পর রাত ৯টার দিকে মাছ দুটি ধরা পড়ে। গফুর মিয়া নামের এক জেলের কাছ থেকে ছয় হাজার টাকায় মাছ দুটি কিনে নেন টেকনাফ পৌরসভার বাসস্টেশন এলাকার মাছ ব্যবসায়ী মোজাহার আলম।
শুক্রবার সকালে তিনি এই জোড়া ইলিশের দাম হাঁকেন ১২ হাজার টাকা। মোজাহার আলম জানান, গতকাল রাত বেশি হওয়ায় ক্রেতা কমে গিয়েছিল। তাই মাছ দুটি ভালোভাবে বরফ দিয়ে রাখা হয়। আজ সকালে বিক্রির জন্য বাজারে আনা হয়েছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, আড়াই কেজির ইলিশ খুব কমই ধরা পড়ে। বড় আকৃতির ইলিশ দুটি দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন ক্রেতারা। এমন বড় ইলিশ তো আর প্রতিদিন দেখতে পাওয়া যায় না।
টেকনাফ উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, এর আগে গত মঙ্গলবার নাফ নদী থেকে আড়াই কেজির ওজনের আরেকটি ইলিশ ধরা পড়েছিল। নাফ নদীতে ছয় বছর মাছ ধরা বন্ধ ছিল। বর্তমানে নাফ নদী ইলিশের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। সাধারণত আড়াই কেজির ইলিশের দেখা সহজে মেলে না।