রাশিয়ার কৃষিপণ্যকে সাশ্রয়ী মূল্যের মনে করে ঢাকা, সমস্যা অর্থ প্রদান প্রক্রিয়ায়
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় আসছেন। তার দেশ 'সর্বোত্তম, সবচেয়ে সাশ্রয়ী' মূল্যে বাংলাদেশে বেশকিছু কৃষিপণ্য সরবরাহ করতে আগ্রহী।
বাংলাদেশের কর্মকর্তারা রুশ মন্ত্রীর সফরকে ঘিরে এই তথ্য জানিয়েছেন।
রাশিয়া জি-টু-জি( দু দেশের সরকারি পর্যায়ে চুক্তি) ভিত্তিতে বিভিন্ন খাদ্যপণ্য, যেমন- হলুদ মটর, ছোলা, লাল মসুর, সবুজ মসুর ডাল এবং সূর্যমুখী তেল সরবরাহে- বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা সম্প্রসারণে আগ্রহী।
বাংলাদেশ যদি এই সুনির্দিষ্ট ক্ষেত্রে সহযোগিতা উন্নয়নে আগ্রহী হয়, তাহলে রাশিয়ানরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করবে।
রাশিয়ার উপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আলোকে বাংলাদেশ সম্ভবত অর্থপ্রদানের সমস্যাগুলোতে ফোকাস করবে, কারণ অফারটি দামের ক্ষেত্রে খুব সাশ্রয়ী মনে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ ৭ থেকে ৮ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ সফর করবেন।
বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টা ১৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন তাকে স্বাগত জানাবেন।
নগরীর একটি হোটেলে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় যৌথভাবে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হবেন তারা।
বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদে পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকা ল্যাভরভ আগামীকাল শুক্রবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
সফরকালে রাশিয়া-বাংলাদেশ সম্পর্কের বর্তমান অবস্থা বিস্তারিতভাবে খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা।
তিনি বলেন, দুই পক্ষ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সমস্যা নিয়েও মতবিনিময় করবে।
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরে তারা খাদ্য, সার, জ্বালানি এবং রোহিঙ্গা সংকটের মতো বিষয় নিয়েও আলোচনা করতে পারেন।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন,'ইউক্রেন সঙ্কটের পর থেকে বিশ্বজুড়ে যে জটিল পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে আমরা তা নিয়ে আলোচনা করব। আমাদের যে সমস্যাগুলো আছে সেগুলো আমরা তুলে ধরব।'
রাশিয়ার সঙ্গে দীর্ঘদিনের সম্পর্কের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, যত দ্রুত সম্ভব ইউক্রেন সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য রাশিয়াকে অনুরোধ করতে পারে বাংলাদেশ।
ঢাকায় রাশিয়ার দূতাবাস জানিয়েছে, দুই দেশ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের উন্নয়নের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করবে এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ইস্যুতে মতামত বিনিময় করবে।
এর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বলেন, ল্যাভরভের সফরে বাংলাদেশ রোহিঙ্গা ইস্যুটি উত্থাপন করবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'তিনি যেদিন এখানে আসবেন সেদিন আমাদের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হবে। রোহিঙ্গা ইস্যু সহ আমাদের অনেক দ্বিপক্ষীয় বিষয় আলোচনা করার আছে।'
বাংলাদেশ সফর শেষ করে ৯ থেকে ১০ সেপ্টেম্বর নয়াদিল্লিতে জি-২০ সম্মেলনে যোগ দেবেন ল্যাভরভ।
এর আগে গত বছরের নভেম্বরে ২২তম আইওআরএ মন্ত্রী পরিষদের বৈঠকে যোগ দিতে ল্যাভরভের বাংলাদেশ সফরের কথা ছিল, কিন্তু শেষ মুহূর্তে সফরটি স্থগিত করা হয়।
দিল্লিতে, ল্যাভরভ দুটি পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে বক্তব্য দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এর মধ্যে ৯ সেপ্টেম্বর, ওয়ান প্ল্যানেট অধিবেশনে- টেকসই উন্নয়ন এবং স্থিতিশীল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করা; এবং ১০ সেপ্টেম্বর ওয়ান ফিউচার অধিবেশনে- গণতন্ত্রীকরণের মূল কাজগুলোর বিষয়ে বক্তব্য দেবেন ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে- বিশ্বের সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর ভূমিকাকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি ডিজিটাল রূপান্তর বাস্তবায়নের গুরুত্ব তুলে ধরবেন।