নির্বাচনের আড়াই বছর পর আদালতের রায়ে ভোট পুনর্গণনা, ৪ ভোটে জিতলেন পরাজিত প্রার্থী
২০২১ সালের ৩০ জানুয়ারি সিলেটের জকিগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই দিন ভোটগ্রহণ শেষে মেয়র পদে আব্দুল আহাদকে দুই ভোটে বিজয়ী ঘোষণা করেছিলেন রিটানিং কর্মকর্তা। এই ফল মেনে নিতে পারননি পরাজিত মেয়র প্রার্থী ফারুক আহমদ। ফলের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন তিনি।
অবশেষে নির্বাচনের প্রায় আড়াই বছর পর ফারুক আহমদকে চার ভোটে মেয়র পদে বিজয়ী ঘোষণা করেছেন আদালত।
সিলেট যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালত এবং নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. আরিফুজ্জামান বৃহস্পতিবার এই রায় ঘোষণা করেন।
আব্দুল আহাদ ও ফারুক আহমদ দুজনই আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন।
এসব তথ্য জানিয়ে মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী গোলাম রব্বানী চৌধুরী বলেন, ৫টি ভোট কেন্দ্রের ব্যালট পেপার পুনরায় গণনা চেয়ে আদালতে মামলা করেছিলেন ফারুক আহমদ। পরে আদালত বাদীপক্ষের সাক্ষী ও বিবাদী পক্ষের সাফাই সাক্ষী গ্রহণ করে ভোট পুনরায় গণনার নির্দেশ দেন। গণনায় ফারুক আহমদ ৪ ভোট বেশি পান।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ফলাফলে কারচুপির অভিযোগে করা মামলা দীর্ঘদিন চলার পর উভয়পক্ষের আইনজীবীদের উপস্থিতিতে কয়েক দফায় আদালতে ভোট গণনা করা হয়। এতে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী ফারুক আহমদের বৈধ ভোট হয় ২ হাজার ৭১, আর আব্দুল আহাদের বৈধ ভোট হয় ২ হাজার ৬৭।
বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে বিচারক ফারুক আহমদকে বিজয়ী ঘোষণা করে রায় দেন। রাত সাড়ে ৮টার দিকে আদালতের ওয়েবসাইটে রায়ের তথ্য প্রকাশ হয়।
এর আগে ভোটের দিন রিটার্নিং কর্মকর্তা ঘোষিত ফলাফলে আবদুল আহাদের বৈধ ভোট ঘোষণা করা হয় ২ হাজার ৮৩টি এবং নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে ফারুক আহমদের বৈধ ভোট ঘোষণা করা হয় ২ হাজার ৮১টি।
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় বিজয়ী ফারুক আহমদ বলেন, আদালত যে মানুষের শেষ ভরসা, তা-ই আজ প্রমাণ হলো। রায়ে জনগণের বিজয় হয়েছে।
এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে জকিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আব্দুল আহাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে আব্দুল আহাদের আইনজীবী সামসুল হক জানান, রায় প্রকাশের বিষয়ে তিনি অবগত নন। আব্দুল আহাদের বিরুদ্ধে রায় গেলে তিনি পরবর্তী করণীয় ঠিক করবেন। যদি আহাদ মনে করেন উচ্চ আদালতে যাবেন, তাহলে সেটা তিনিই সিদ্ধান্ত নেবেন।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ৩০ জানুয়ারি জকিগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আব্দুল আহাদ পান ২ হাজার ৮৩ ভোট আর ফারুক আহমদ পান ২ হাজার ৮১ ভোট। এরপর কারচুপির অভিযোগ তুলে জকিগঞ্জ সরকারী কলেজ কেন্দ্র, মধুদত্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়, আইডিয়াল কেজি স্কুল কেছরী, মাইজকান্দি মাদ্রাসা কেন্দ্র ও জকিগঞ্জ গার্লস হাইস্কুল কেন্দ্রের ভোট পুনরায় গণনার জন্য ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেছিলেন।