কারাদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন অধিকারের আদিলুর ও এলান
২০১৩ সালে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রকাশ করার দায়ে তথ্য যোগাযোগ ও প্রযুক্তি অ্যাক্টের (আইসিটি) মামলায় ২ বছরের কারাদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেছেন মানবাধিকার সংগঠন 'অধিকার'-এর সম্পাদক আদিলুর রহমান খান ও পরিচালক এ এস এম নাসির উদ্দিন এলান।
একইসাথে এই মামলায় জামিন চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। সোমবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আপিল ও জামিন আবেদনটি দাখিল করেছেন এই দুইজনের আইনজীবী রুহুল আমিন ভুঁইয়া।
তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, আপিল ও জামিন আবেদনের পাশাপাশি এই মামলায় দেওয়া অর্থদণ্ড স্থগিতের আবেদন করা হয়েছে।
তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) আইনের ৫৭ ধারার এই মামলায় গত ১৪ সেপ্টেম্বর আদিলুর রহমান খান ও পরিচালক এ এস এম নাসির উদ্দিনকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেন ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াতের আদালত। সেইসঙ্গে আসামীদের ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।
এই রায় ঘোষণার পর আদিলুর রহমান খান ও এ এস এম নাসির উদ্দিনকে কারাগারে পাঠানো হয়।
মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান নিয়ে ২০১৩ সালের ১০ জুন মানবাধিকার সংস্থা অধিকার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ওই প্রতিবেদনে শাপলা চত্বরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে ৬১ জন নিহত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়।
পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান নিয়ে অসত্য ও বিকৃত তথ্য প্রচারের অভিযোগে আদিলুর রহমান খান ও নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা হয়।
এই মামলায় পুলিশের প্রতিবেদনে বলা হয়, আদিলুর ও নাসির উদ্দিন ৬১ জনের মৃত্যুর 'বানোয়াট, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও মিথ্যা' তথ্যসংবলিত প্রতিবেদন তৈরি ও প্রচার করে জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি করেন, আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নের অপচেষ্টা চালান এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সরকার ও রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি দেশে-বিদেশে চরমভাবে ক্ষুণ্ন করেন।
আরও বলা হয়, তারা মুসলমানদের মনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে বিরূপ মনোভাবের সৃষ্টি করেন, যা তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনের ৫৭(১) ও (২) ধারায় অপরাধ।
২০১৩ সালের ১২ সেপ্টেম্বর আদিলুর রহমান খান ও এ এস এম নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে এই মামলায় অভিযোগ আমলে নেন ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল। এরপর ২০১৪ সালের ৮ই জানুয়ারি শুরু হয় এই মামলার বিচারকাজ।
কিন্তু উচ্চ আদালতে আসামিদের আবেদনের প্রেক্ষিতে তিন বছরের জন্য স্থগিত থাকে বিচারকাজ। পরে ২০১৭ সাল থেকে শুরু হয় এই মামলার শুনানি
আইনজীবী রুহুল আমিন ভুঁইয়া টিবিএসকে জানান, 'গত ১৪ সেপ্টেম্বর নিম্ন আদালতের রায়ে আদিলুর রহমান খানকে প্রথম শ্রেণির ডিভিশন সুবিধা দেওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তবে এখনো সে সুবিধা দেওয়া হয়নি।'