পানিতে ভাসছে সাতক্ষীরা
পানিতে ভাসছে সাতক্ষীরার নিম্নাঞ্চল। এতে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছে এ অঞ্চলের মানুষ। বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় সৃষ্টি হয়েছে এ জলাবদ্ধতা।
অভিযোগ উঠেছে, সংযুক্ত নদী-খাল দিয়ে পানি প্রবাহে বাধা তৈরি করে জলাবদ্ধতা সৃষ্টির অন্যতম কারণ। প্রশাসন বলছে, নদী ও খাল খনন প্রকল্প শেষ হলে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পাবে মানুষ। তবে এই মুহূর্তে পানি প্রবাহে বাধা সৃষ্টিকারী বাঁধ ও নেটপাটা অপসারণ করা হবে।
তালা সদরের মাঝিয়াড়া, খড়েরডাঙ্গা এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বিস্তীর্ণ এই জনপদের পানি খড়েরডাঙ্গা থেকে কপোতাক্ষ নদ অভিমুখী সংযোগ খাল দিয়ে নিষ্কাশিত হয়। তবে পানি প্রবাহে প্রতিবন্ধকতা থাকায় খাল দিয়ে নিষ্কাশন হচ্ছে না পানি।
মাঝিয়াড়া গ্রামের বাসিন্দা সৈয়দ খালিদ হাসান জানান, জনপদের পানি খাল দিয়ে অপসারণ হয়। তবে খড়েরডাঙ্গা বিলে থাকা মাছের ঘেরের ভেঁড়িবাঁধ পানি প্রবাহে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। পানি খালে গিয়ে পড়ছে না। ফলে আটকে থাকা পানিতে ভাসছে হাজারো মানুষ। একটি অংশের পুরো রাস্তা-ঘাট, ঘরবাড়ি পানিবন্দি।
অন্যদিকে সাতক্ষীরা সদর, আশাশুনি ও তালা উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, রাস্তায় পানি, কারো ঘরের মধ্যেও পানি ঢুকে পড়েছে।
আশাশুনি উপজেলার বুধহাটার দাশপাড়ার তিন মাস ধরে পানিবন্দি আছে ৩৫০ পরিবার। বুধহাটা ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক বলেন, 'পানি নিষ্কাশনের চেষ্টা করেও সুফল মিলছে না। শ্যালোমেশিন লাগিয়ে পানি কমানোর চেষ্টা করেছি, তবে বৃষ্টি এলে আবার ডুবে যাচ্ছে। পাশে বেতনা নদীর খনন কাজ চলছে; ফলে নদী দিয়ে পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না।'
আশাশুনি উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান অসীম বরণ চক্রবর্তী জানান, 'উপজেলার চারটি ইউনিয়নের মানুষই কমবেশি পানিবন্দি। খালে নেটপাটা দিয়ে পানি নিষ্কাশন পথে বাধা সৃষ্টি করেছে এক শ্রেণির ঘের ব্যবসায়ী। বিষয়টি প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে।'
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ূন কবির বলেন, 'সাতক্ষীরায় জলাবদ্ধতা একটা বড় সমস্যা। জলাবদ্ধতা দূর করতে নদী ও খাল খনন প্রকল্প চলমান রয়েছে। খনন কাজ শেষ হওয়ার পর জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পাবে সাতক্ষীরার মানুষ। তবে খালে অবৈধ নেটপাটা দিয়ে অনেকে পানি নিষ্কাশনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে; সেগুলো উচ্ছেদে অভিযান চলছে। মাছের ঘেরের বেড়িবাঁধও কিছু কিছু এলাকায় পানি প্রবাহে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে, লোকালয় প্লাবিত হচ্ছে। সেই বাধাগুলোও দূর করে জনপদ থেকে পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা করা হবে।'