যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি থেকে ১৫ বছরের জন্য এলএনজি কিনবে সরকার
যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক কোম্পানি এক্সিলারেট গ্যাস মার্কেটিং লিমিটেড পার্টনারশিপ থেকে ১৫ বছর মেয়াদে এলএনজি কেনার চুক্তি করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ কর্পোরেশন (পেট্রোবাংলা)।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের এ চুক্তির প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।
বুধবার (২৫ অক্টোবর) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ প্রস্তাবসহ আরও ২৪টি প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রি পরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান এ তথ্য জানান।
জানা গেছে, এক্সিলারেট গ্যাস মার্কেটিং লিমিটেড পার্টনারশিপ আগামী ২০২৬ ও ২০২৭ সালে ০.৮৫ এমটিপিএ এলএনজি সরবরাহ করবে। এরপর ২০২৮ থেকে ২০৪০ সাল পর্যন্ত কোম্পানিটি প্রতি বছর ১ এমটিপিএ এলএনজি সরবরাহ করবে।
এই কোম্পানি থেকে কেনা প্রতি এমএমবিটিইউ (এক মিলিয়ন ব্রিটিশ থার্মাল ইউনিট) এলএনজির দাম হবে সরবরাহ করা তারিখে ব্রেন্টের ১৩.৩৫% এর সাথে ০.৩০ ডলার যোগ করে যে দাম হয় সেটি। বিষয়টি এমন যে, ২০২৬ সালের জানুয়ারিতে সরবরাহ করা এলএনজি ব্রেন্টের দাম যদি ১০০ ডলার হয় তাহলে বাংলাদেশ ওই কোম্পানিকে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির জন্য দাম দেবে ১৩.৬৫ (১৩.৩৫+০.৩০) ডলার।
বর্তমানে কক্সবাজারের মহেশখালীতে স্থাপন করা এক্সিলারেট এনার্জি বাংলাদেশ লিমিটেডের এলএনজি টার্মিনাল ব্যবহার করে পেট্রোবাংলা। কাতার ও কুয়েতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে তরলীকৃত এলএনজি কিনে এনে এই টার্মিনালে তা গ্যাসে রূপান্তর করা হয়। এরপর ওই গ্যাস জাতীয় গ্যাস সঞ্চালন গ্রিডে সরবরাহ করা হয়।
এক্সিলারেট এনার্জি বাংলাদেশের দৈনিক তেলকে গ্যাসে রূপান্তর করার ক্ষমতা এতদিন ছিল ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট (এমএমসিএফডি)। সম্প্রতি সেটি বাড়িয়ে ৬০০ এমএমসিএফডি করেছে কোম্পানিটি। পেট্রোবাংলাকে এই ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট ক্ষমতা ব্যবহারের জন্য চুক্তি সংশোধনের অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
পাশাপাশি ভিটল এশিয়া পিটিই লিমিটেড, সিঙ্গাপুর থেকে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার বা এক কার্গো এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। স্পট মার্কেট থেকে এই এলএনজির প্রতি এমএমবিটিইউর দাম পড়বে ১৭.৫৫ মার্কিন ডলার। এতে মোট খরচ হবে ৭৬২ কোটি টাকা। এটি চলতি বছরে স্পট মার্কেট থেকে ২৩তম এলএনজি কেনার প্রস্তাব।
অন্যদিকে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনকে (বিপিসি) ২০২৪ সালের জন্য সৌদি আরামকো এবং আবুধাবির অ্যাডনক থেকে ১৫ লাখ টন অপরিশোধিত জ্বালানি তেল সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে কেনার অনুমোদন দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।
এছাড়া, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে জামালপুর ও মুন্সিগঞ্জে দুটি সৌর বিদ্যুৎ স্থাপনের দরপ্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে। এ দুটি কেন্দ্রের একটি থেকে ১৮০ মেগাওয়াট এবং অপরটি থেকে ১৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আসবে। প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টা বিদ্যুতের জন্য ১১ টাকা দরে সরকারকে ২০ বছর মেয়াদে বিদ্যুৎ দেবে প্রকল্প দুটি।
এর বাইরে গতকালের বৈঠকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের ২০২৪ সালের বই কেনা, ১.১৫ লাখ টন বিভিন্ন ধরনের সার কেনার অনুমোদন পেয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। এছাড়া ৬ হাজার টন মসুর ডাল, ৪০ লাখ লিটার রাইস ব্রান তেল, ৮০ লাখ লিটার সয়ারিন তেল কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।