ঢাকার কাছেই মৃত্যু হয়েছে এটিএম খালেকুজ্জামানের, ধারণা পুলিশের
প্রখ্যাত অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামানের ছেলে এটিএম খালেকুজ্জামান কুশলের (৪৬) ময়নাতদন্ত শেষ হয়েছে। মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) দুপুরে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
মুঠোফোনে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মুলাদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুর রহমান। তিনি জানান, লাশ নিতে এটিএম খালেকুজ্জামানের দুই ভগ্নিপতি এসেছিলেন। তারা এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ করেননি। পরবর্তীতেও অভিযোগ করতে পারবেন। তবে পরিবারেরও ধারণা দুর্ঘটনাবশত মৃত্যু।
ওসি বলেন, 'এটিএম খালেকুজ্জামান একা থাকতেন। তিনি বিয়ে করেননি। স্বজনদের মধ্যে শুধুমাত্র মায়ের সাথে যোগাযোগ ছিল। মরদেহ উদ্ধারের পর তার শরীরে কোথাও আঘাতের চিহ্ন পরিলক্ষিত হয়নি। মোবাইল, জাতীয় পরিচয়পত্র সবকিছুই পকেটে পাওয়া গেছে।'
নিহতের স্বজন জিয়াউদ্দিন জুয়েল জানান, তারা লাশ বুঝে পেয়ে ঢাকায় ফিরছেন। দাফন শেষে পরিবারের সাথে আলাপ করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বরিশালের পুলিশ সুপার মো. ওয়াহিদুল ইসলাম বলেন, 'খুলনা যাওয়ার জন্য ঢাকার বাসা থেকে বের হলেও তার লাশ পাওয়া যায় বরিশালের জয়ন্তী নদীতে। তার মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আমরা তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে খালেকুজ্জামানের সর্বশেষ অবস্থান-সহ বিভিন্ন বিষয় খতিয়ে দেখব। কোন অসঙ্গতি পেলে এবং ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পরে অবশ্যই পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
এই কর্মকর্তা বলেন, প্রাথমিকভাবে আমাদের মনে হচ্ছে ঢাকার আশপাশে কোথাও মৃত্যু হয়েছে তার। মরদেহটি ভাসতে ভাসতে মুলাদীর জয়ন্তী নদীতে এসেছে।
শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. রেফায়েতুল ইসলাম জানিয়েছেন, 'অর্ধগলিত থাকায় মরদেহের শরীরের তেমন কোথাও আঘাতের চিহ্ন শনাক্ত করা যায়নি, তবে ভিসেরা রিপোর্টের জন্য আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। কোনো অসঙ্গতি থাকলে প্রতিবেদনে উঠে আসবে।'
উল্লেখ্য, খুলনায় একটি চাকরি হয়েছে এমন তথ্য মাকে জানিয়ে ২৪ অক্টোবর ঢাকার সূত্রাপুরের বাসা থেকে বের হন এটিএম খালেকুজ্জামান। ৩০ অক্টোবর তার গলিত মরদেহ পাওয়া যায় মুলাদীর জয়ন্তী নদীতে। ২০১২ সালে বড় ভাই কামরুজ্জামান কবীরকে হত্যার ঘটনায় – ২০১৪ সালে এটিএম খালেকুজ্জামানকে যাবজ্জীবন দণ্ড দেন আদালত। সম্প্রতি তিনি জামিনে বের হয়ে একা থাকতেন।
গতকাল সোমবার দুপুর আড়াইটার দিকে উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের নাতিরহাট এলাকায় জয়ন্তী নদীতে লাশটিকে ভাসতে দেখে স্থানীয়রা। এরপর সেটি উদ্ধারের পর পকেট থেকে মেলে একটি জাতীয় পরিচয়পত্র।
খবর পেয়ে পুলিশ এসে মরদেহটি মর্গে পাঠায়, এবং খালেকুজ্জামান কুশলের পরিবারকে লাশ শনাক্তের জন্য জানায়।