কারাগার থেকে বেরিয়েই পরীক্ষার হলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খাদিজা
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় ১৫ মাস পর কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েই পরীক্ষার হলে বসেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরা।
আজ থেকে তার ফাইনাল সেমিস্টারের পরীক্ষা শুরু হয়েছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান ভবনে তিনি পরীক্ষা দিচ্ছেন। সকাল ১০টা থেকে ৪ ঘণ্টার পরীক্ষা শুরু হলেও কারামুক্ত হয়ে পরীক্ষার হলে প্রবেশ করতে বেলা সাড়ে ১১টা বেজে যায় তার। বেলা ১টায় পরীক্ষা শেষ হবে।
খাদিজা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তবে তিনি পুনঃভর্তি নিয়ে ২০২০-২১ সেশনে পরীক্ষা দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তার বোন সিরাজুম মুনিরা।
সোমবার (২০ নভেম্বর) সকাল ৯টার দিকে মুক্তি পেয়ে কারাগার থেকে বের হয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন তিনি।
মুক্তির পর কারা ফটকে দাঁড়িয়ে খাদিজা গণমাধ্যমকে বলেন, "আমার সঙ্গে অন্যায় হয়েছে। বিনা দোষে আমি প্রায় ১৫ মাস জেল খাটলাম। এর চেয়ে বেশি কিছু আর এখন বলতে চাই না। বলার মতো মনমানসিকতা আমার নেই।"
কারাগারে কাটানো সময়ের কথা স্মরণ করে খাদিজা বলেন, "কারাগারের ভেতরে খুব বেশি ভালো ছিলাম না। নামাজ পড়ে, রোজা রেখে আর লেখাপড়া করে সময় কাটিয়েছি। আজকে আমার স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা। তাই এখান থেকে সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করব।"
গত ১৬ নভেম্বর খাদিজাতুল কুবরার জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা লিভ টু আপিল খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ।
প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন।
এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে হাইকোর্ট তার জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন।
তবে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন আদেশ স্থগিত করে আপিল বিভাগে শুনানির জন্য পাঠিয়ে দেন চেম্বার বিচারপতি।
অনলাইনে সরকারবিরোধী বক্তব্য প্রচার এবং বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার অভিযোগে ২০২০ সালে অক্টোবরে খাদিজাতুল কুবরা এবং অবসরপ্রাপ্ত মেজর দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কলাবাগান ও নিউমার্কেট থানায় আলাদা দুটি মামলা করে পুলিশ।
এক সপ্তাহের ব্যবধানে করা দুটি মামলার এজাহারের অভিযোগ এবং বর্ণনা প্রায় একইরকম। একটি মামলার বাদী নিউমার্কেট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) খাইরুল ইসলাম এবং অন্যটির কলাবাগান থানার এসআই আরিফ হোসেন।দুই বাদীই দায়িত্ব পালনকালে মুঠোফোনে ইউটিউবে ঘুরতে ঘুরতে খাদিজাতুল কুবরা ও মেজর (অব.) দেলোয়ার হোসেনের ভিডিও দেখতে পান। তারপর দুজনই নিজ নিজ থানায় বাদী হয়ে মামলা করেন।
গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর খাদিজাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারপর থেকে তিনি কারাগারে ছিলেন। আর দেলোয়ার বিদেশে পলাতক।