দিল্লি সফরে ৯০টি বিদেশি মিশনকে নির্বাচন বিষয়ে ব্রিফ করবেন পররাষ্ট্র সচিব
আসন্ন দিল্লি সফরে ৯০টি বিদেশি মিশনকে বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচনের ব্যাপারে ব্রিফ করবেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।
আগামী জাতীয় নির্বাচনের প্রাক্বালে অনুষ্ঠিতব্য বাংলাদেশ ও ভারতের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকে অংশ নিতে আজ বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) নয়াদিল্লি যাচ্ছেন পররাষ্ট্রসচিব।
এ নিয়ে বুধবার মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, "আমি মনে করি না— অপ্রয়োজনীয় অন্য কোনো হিডেন (লুকোনো) এজেন্ডা আছে।"
"যেহেতু নির্বাচন সামনে, তাদের পক্ষ থেকে যদি কোনো কিছু জানার থাকে সেটা অবহিত করতে পারব। তবে আমি প্রধানমন্ত্রী থেকে আলাদা কোনো বার্তা নিয়ে যাচ্ছি না," বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, "আপনারা মেলাতে পারেন। গত এক বছরে আমাদের অগ্রগতি রয়েছে। সেগুলো নিয়ে আমরা একটা সেশন চালাতে পারি এবং নির্বাচনের পরে বা আগামী বছরে আমরা কোন কোন জায়গায় আরও বেশি জোর দিতে পারি তা নিয়ে আলোচনা করতে পারি। যেন সময় নষ্ট না হয়, বিশেষ করে যোগাযোগের ক্ষেত্রে।"
ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিনয় কোয়াত্রার আমন্ত্রণে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির পর দ্বিতীয় দফায় শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) দিল্লিতে পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠক হতে যাচ্ছে।
"এই সফরে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ আমরা করব। দিল্লিতে ৯০টি অ্যাম্বাসি আছে, তাদের সাথে আমি একটি ইন্টারেক্টিভ সেশনে যোগ দিব," বলেন মাসুদ বিন মোমেন।
"এসমস্ত মিশন প্রধানদেরকে আমাদের উন্নয়নের যে অগ্রগতি তা ব্রিফ করব। পাশাপাশি দেশের বর্তমান পরিস্থিতি, জাতীয় নির্বাচন, বিশেষ করে একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে সরকারের কমিটমেন্ট, নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতি নিয়ে তাদের ব্রিফ করব," বলেন তিনি।
পর্যবেক্ষকদের ব্যাপারে তাদের প্রশ্ন থাকতে পারে উল্লেখ করে তিনি বলেন, "পর্যবেক্ষকদের এপ্লিকেশন ডেট বাড়ানো হয়েছে, তা জানাবো। দিল্লী যেসমস্ত মিশন আছে তাদের অনেকে মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে তাদের পরিচয় পেশ করার লাইনে আছে। তাদেরকে শিডিউলগুলো দিব।"
চলতি বছরে দুইবার এফওসি করার কারণ ব্যাখ্যা দেন পররাষ্ট্রসচিব। তিনি জানান, "পর্যালোচনা করার জন্য যেতেই পারি। একাধিকবার হবে না (এফওসি) এমন কোথাও বলা নাই। বছরের প্রথমে হয়েছে, এখন আবার বছরের শেষে হচ্ছে। এর মধ্যে প্রচুর অগ্রগতি হয়েছে।"
সভায় আলোচনার বিষয়ে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, "এটা একটা রুটিন মেকানিজম। সেখানে দুদেশের সব বিষয় নিয়ে আলোচনা করি। ভারতের সঙ্গে আমাদের এ বৈঠকে অগ্রাধিকার পাবে রাজনীতি, প্রতিরক্ষা, নিরাপত্তা, বাণিজ্য-বিনিয়োগ, কানেক্টিভিটি, জ্বালানি. বিদ্যুৎ ও অভিন্ন নদী সংক্রান্ত, আঞ্চলিক, উপ-আঞ্চলিক এবং বহুপাক্ষিক সহায়তা সংক্রান্ত বিষয়, উন্নয়ন সহায়তা, কনস্যুলার সংক্রান্ত সহযোগিতার বিষয়। এর বাইরেও আলোচনা হতে পারে।"
পররাষ্ট্রসচিব বলেন, "জাতিসংঘসহ বিভিন্ন বহুপাক্ষিক ফোরামে কীভাবে আমরা একে অপরকে সহযোগিতা বাড়াতে পারি, সে বিষয়গুলো এখানে আলোচিত হবে। এক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বাংলাদেশ কি ধরনের ভূমিকা পালন করতে পারে, সেগুলো নিয়েও আলোচনা হবে। রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়েও তাদের আপডেট দেব।"
এজেন্ডায় শুরুতে রাজনীতির বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "ওদের নির্বাচন আছে সামনে। আমাদের নির্বাচন আছে। নির্বাচন পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী দুই দেশের মধ্যে যে সম্পর্ক, এটা তো খুবই বহুপাক্ষিক সম্পর্ক; ট্রেড আছে, বিনিয়োগ আছে, পিপল টু পিপল কন্টাক্ট আছে, ভিসা ইস্যু আছে— এগুলো যেন নির্বাচনের পরও স্মুথলি চলতে পারে।"
এ সফরকে রাজনৈতিক সফর বলা যায় কি না— জানতে চাওয়া হয় মাসুদ বিন মোমেনের কাছে।
তিনি বলেন, "রাজনৈতিক ব্যাখ্যা কীভাবে দেবেন আমি জানি না। আমি মনে করি- নিয়মিত যে মিটিং হয়, এটাও সেভাবে হবে। এটা ঠিক যে সামনে আমাদের নির্বাচন আছে।"