যে অভিজ্ঞতার মুখোমুখি ভূমিকম্পের উৎসস্থল রামগঞ্জের বাসিন্দারা
শনিবার (২ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যে ভূমিকম্পটি অনুভূত হয় তার উৎপত্তিস্থল ছিল লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলা শহর থেকে ১০ কিলোমিটার পূর্বে। দূর্যোগ মনিটরিং প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ডিজাস্টার অ্যালার্ট অ্যান্ড কোঅর্ডিনেশন সিস্টেম এ তথ্য জানিয়েছে। ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৫.৫।
ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল লক্ষ্মীপুর হলেও সৃষ্ট ভূমিকম্পের কারণে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত লক্ষ্মীপুর জেলাব্যাপী বড় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তবে জেলার বিভিন্ন স্থানে কয়েকটি স্থাপনায় ফাটল ধরার তথ্য জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা জানান, ভূমিকম্পের সময় তাদের বিল্ডিং কেঁপে উঠেছে। এ ধরনের ভূকম্পন এলাকায় আর দেখা যায়নি। মনে হচ্ছিল ঘরবাড়ি-গাছপালা তাদের ওপর ভেঙে পড়ছে।
সদর উপজেলার বাসিন্দা মোশাররফ ছৈয়াল জানান, তাদের এলাকায় চর শামসুদ্দিন দাখিল মাদরাসা মসজিদের মিনার পুরো ফেটে গেছে।
একই এলাকার বাসিন্দা বাবুল মার্টিনী জানান, তাদের এলাকার শান্তিরহাট বাজারে দুটি দোকানঘরের দেয়াল ফেটে গেছে।
ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল রামগঞ্জের দল্টাবাজার এলাকার বাসিন্দা মো. বাহার উদ্দিন রাজন বলেন, 'ঘটনার সময় আমি হঠাৎ খাট থেকে পড়ে গিয়ে ভয় পেয়ে যাই। জীবনে এমন ভূমিকম্প আর দেখিনি।'
জেলার বিভিন্ন স্থানে অন্তত ২০–২৫ জন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজকের ঘটনা দেখার পর সবাই ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত।
কিন্ত ভূমিকম্প সহনশীল স্থাপনা নির্মাণের ক্ষেত্রে লক্ষ্মীপুর জেলা এবং উপজেলা শহরগুলোর প্রস্তুতি কেমন?—জানতে চাইলে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জুলফিকার হোসেন বলেন, পৌরসভা লক্ষ্মীপুর শহরে সাত তলা ভিতের ৭৫ ফুট উচ্চতা পর্যন্ত ভবন নির্মাণের অনুমোদন দেয়। সেক্ষেত্রে অনুমোদনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড মেনেই ডিজাইন অনুমোদন করা হয়। কিন্ত সাততলার বেশি ভবনের অনুমোদন দেয় গণপূর্ত বিভাগ।
অন্যদিকে লক্ষ্মীপুর গণপূর্ত বিভাগের সদ্য বিদায়ী নির্বাহী প্রকৌশলী লাবণ্য বড়ুয়া বলেন, 'আমি এক বছর লক্ষ্মীপুরে ছিলাম। এ সময়ে লক্ষ্মীপুরে বড় কোনো স্থাপনার অনুমোদন দেওয়া হয়নি।'
অন্যদিকে ভূমিকম্পের সংবাদ ও তথ্য রেকর্ডকারী জার্মানিভিত্তিক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ভলকানোডিসকোভারীর ইতোমধ্যে লক্ষ্মীপুর জেলায় অনুভুত ভূমিকম্পের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে। তালিকা অনুসারে ১৯৭০ থেকে ২ ডিসেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত লক্ষ্মীপুর জেলায় মোট ১৫২টি ভূমিকম্প অনুভূত হয়।