ভূরাজনৈতিক পরিবর্তন আসছে, স্বল্পোন্নত দেশগুলোকেও পড়তে হচ্ছে টানাপোড়েনের মধ্যে: ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ
উন্নয়নশীল দেশগুলোতে সরকার যত বেশি জনসমর্থনপুষ্ট হবে, বৈদেশিক অর্থনৈতিক স্বার্থের সঙ্গে দেশের রাজনৈতিক স্বর্থের সমন্বয় করাও তত বেশি সহজ হবে। একইসঙ্গে, গণতান্ত্রিক সরকারগুলো বিদেশি শক্তি বা বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর অন্যায় ও অন্যায্য সুযোগ নেওয়ার প্রবণতা তত বেশি সামলানো যেতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও অর্থনীতিবিদ ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
তিনি বলেছেন, "পরিবর্তনশীল ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতির সঙ্গে বিশ্বব্যাপী আন্তঃদেশীয় সম্পর্কের সমীকরণ ক্রমশ জঠিল হচ্ছে। স্বল্পোন্নত দেশগুলোকেও এই টানাপোড়েনের মধ্যে পড়তে হচ্ছে।"
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) তিন দিনব্যাপী উন্নয়নবিষয়ক সম্মেলনের আজ (৯ ডিসেম্বর) শেষদিনে 'বিকাশমান বৈশ্বিক ব্যবস্থা ও ভূরাজনীতি: স্বল্পোন্নত দেশগুলোর কী বাস্তবতা'- শীর্ষক বক্তৃতায় ড. ওয়াহিদউদ্দিন বলেন, "এই ধরনের পরিবর্তনে (ভূরাজনৈতিক) ঝুঁকিও আছে, আবার লাভবান হওয়ার সুযোগও আছে। ঝুঁকি মোকাবেলা করে ভূরাজনীতি ও ভূঅর্থনীতির পরিস্থিতি সামাল দেওয়া বাংলাদেশের মত স্বল্পোন্নত দেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।"
এমন পরিস্থিতিতে, সরকারের প্রতি যত জনসমর্থন থাকবে, বৈদেশিক অর্থনৈতিক স্বার্থের সঙ্গে তার রাজনৈতিক স্বার্থের সমন্বয় করা ততটাই সহজ হবে বলে জানান তিনি।
বক্তৃতায় পরাশক্তিদের দ্বন্দ্ব নিয়ে এই অর্থনীতিবিদ বলেন, "এখন চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের যে দ্বৈরথ চলছে, তা স্নায়ুযুদ্ধ থেকে অনেকটাই ভিন্ন। কারণ, এখন একেবারে বিচ্ছিন্ন হওয়া সম্ভব নয়। যুক্তরাষ্ট্র ও চীন এত দিন ধরে শুল্কযুদ্ধ চালালেও এখন পর্যন্ত তারা পরস্পরের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য অংশীদার। অন্যদিকে স্নায়ুযুদ্ধের আদর্শিক ভিত্তি ছিল, বিষয়টি ছিল একদম সোজাসাপটা।"
"চীন-যুক্তরাষ্ট্রের বিষয়টি সেরকম নয়, যদিও চীন নিজেদের মডেল সম্প্রসারণের চেষ্টা করছে। সেটি আমাদের খেয়াল রাখা উচিত," যোগ করেন তিনি।
একইসঙ্গে, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি চীনকে কোনোভাবেই উপেক্ষা করা সম্ভব নয় বলেও মন্তব্য করেন এই অর্থনীতিবিদ।