শীত এসেছে, কিন্তু ঠাণ্ডা লাগছে না কেন?
১৯৯৮ সালে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়তেন আসমা নুসরাত। সেবারের ডিসেম্বরের কথা তার মনে আছে। তাদের ছিল যৌথ পরিবার, থাকতেন মিরপুর ছয় নম্বরে। তাদের পাকা বাড়িটির চাল ছিল টিনের। টানা তিন-চারদিনও ঝির ঝির বৃষ্টির মতো কুয়াশা ঝরতো তখন। ডিসেম্বরে স্কুল বন্ধ। তাই ঘরেই কাটত সারাদিন। ঘরের মেঝেতে শতরঞ্জি বিছানো থাকত, বাতাস ঢোকার পথ ঘুলঘুলিগুলো আটকে দেওয়া হতো কাগজ নয়তো কাপড় দিয়ে। সন্ধ্যায় লেপ, কাঁথা বা কম্বল নিয়ে বাড়ির প্রায় সকলে ড্রইং কাম টিভি রুমে হাজির হয়ে যেত। সেখানে ভারি কার্পেট পাতা থাকত। টিভির ঘোষকেরা স্যুট-টাই পরে উপস্থিত হতো, ঘোষিকারা শাড়ির ওপর শাল জড়াতো। বড়রা দোকান বন্ধ করে বেশি রাত হওয়ার আগেই ঘরে ফিরত। গরম পানি করা থাকত তাদের জন্য। হাত-মুখ ধুয়ে সবাইকে নিয়ে রান্নাঘরে জড়ো হতো। রান্নাঘরে পাটের তৈরি ভারি চট বিছানো ছিল। খাবার ফুটত চুলায়, সেখান থেকে নিয়ে গরম গরম থালায় পরিবেশন করা হতো। রাতে ঘুমানোর সময় মশারির ওপর ভারি কাপড় মেলে দেওয়া হতো ঠাণ্ডা কমানোর জন্য।
সকালে গরম পানিতে হাত-মুখ ধুয়ে ভারি উলের সোয়েটার পরতেন নুসরাত, মাথায় জড়াতেন স্কার্ফ, চাচাত ভাইয়েরা কান ঢাকা মাংকি টুপি পরত, বাবা ও চাচারা দোকানে যাওয়ার আগে গায়ে জ্যাকেট পরে গলায় মাফলার জড়িয়ে নিতেন। দাদীর ঘরে দিন-রাত চলত রুম হিটার।
সেবারের শীতকাল তীব্র যেমন ছিল, দীর্ঘও ছিল। যেদিন রোদ উঠত, সেদিন বাড়ির সব লেপ-কাঁথা ঘরের চালের ওপর মেলে দেওয়া হতো, নুসরাত ও তার ভাই-বোনেরা চালে বসে রোদ পোহাতেন।
২০০৮ সালে নুসরাত পড়তেন কলেজে। শীতে কলেজে যাওয়ার সময় কলেজ ড্রেসের ওপর সোয়েটার জড়িয়ে নিতেন। আর মোজা লাগিয়ে পা ঢাকা জুতা পরতেন। বান্ধবীরা গা ঘেষাঘেষি করে হাঁটতেন যেন ঠাণ্ডা কম লাগে।
২০১৬ সালে নুসরাতের ছেলে আহনাফের জন্ম হয়। তবে সে বছর ঠাণ্ডা বেশি ছিল না, ছেলের নিরাপত্তার কথা ভেবে অবশ্য একটি রুম হিটার কিনে রেখেছিলেন তিনি।
২০১৮ সালের জানুয়ারিতে নুসরাতের ভাইয়ের বিয়ে হয়। তার মনে আছে, বিয়ের দিন এবং তার পরেরও কয়েকদিন খুব ঠাণ্ডা পড়েছিল।
পরের আলোচনায় যাওয়ার আগে আমরা কয়েক বছরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রার হিসাব দেখে নিই।
স্থান | সময় | তাপমাত্রা (সেলসিয়াস) |
ঢাকা | ১৮ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫৩ | ৪.৫ ডিগ্রি |
ফরিদপুর | ১৮ জানুয়ারি, ১৯৬৪ | ৪.১ ডিগ্রি |
শ্রীমঙ্গল | ৪ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৮ | ২.৮ ডিগ্রি |
ময়মনসিংহ | ১১ জানুয়ারি, ১৯৭৮ | ৪.৩ ডিগ্রি |
রাজশাহী | ১২ জানুয়ারি, ১৯৮৯ | ৪.৬ ডিগ্রি |
ফেনী | ২৫ জানুয়ারি, ১৯৯৫ | ৭.১ ডিগ্রি |
ডিসেম্বরের ৩ তারিখে আবহাওয়া অধিদপ্তর প্রকাশিত পূর্বাভাসে জানানো হয়েছিল, মাসের শেষদিকে দেশের কোথাও কোথাও মৃদু বা মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছিল, শীত কিছুটা দেরিতে আসবে এবং শীতকালের দৈর্ঘ্যও কম হবে। প্রথম পূর্বাভাস মেলেনি কারণ সেটি ছিল লং রেঞ্জ ফোরকাস্ট (এলআরএফ)। আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, 'এলআরএফ করা হয় আগের ত্রিশ-চল্লিশ বছরের আবহাওয়া পরিস্থিতি এবং আবহাওয়ার গ্লোবাল মডেল বিশ্লেষণ করে। এটা অনেকসময়ই মেলে না। সাধারণত তিনদিনের মধ্যে করা পূর্বাভাস মিলে যেতে দেখা যায়।'
দ্বিতীয় পূর্বাভাস কিন্তু মিলে যাচ্ছে, এখনো শীতের তীব্রতা অনুভূত হচ্ছে না। এর কারণ মূলত এল নিনো বা প্রশান্ত মহাসাগরীয় গরম স্রোত। এর প্রভাবে পেরুভিয়ান কোস্টে এখন স্বাভাবিকের চেয়ে তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি এবং বাংলাদেশ, ভারত বা মায়ানমারে শীতের তীব্রতা কম।
আবহাওয়াবিদ এসএম কামরুল হাসান বলেন, 'এল নিনো একটা ন্যাচারাল প্যাটার্ন। দুই বছর পর এটি ফিরে আসতে পারে; আবার ৭ বছরের পার্থক্যও হতে পারে। এর প্রভাবে বাংলাদেশ, ভারত, মায়ানমারের মতো দেশগুলোয় বৃষ্টির পরিমাণ কমে যায়, সেই সঙ্গে দক্ষিণ দিকের বাতাস বয়ে আনে জলীয় বাষ্প। ফলে শীত অনুভূত হয় কম। এবারে শীতের তীব্রতা অনুভূত না হওয়ার পেছনের কারণ উইন্টার এল নিনো। ডিসেম্বর যেরকম যাচ্ছে, জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিও প্রায় একই রকম যাবে। মার্চ, এপ্রিল পার হয়ে মে মাসে গিয়ে আমরা আবহাওয়া নিউট্রাল পাবো।'
এই আবহাওয়াবিদ বলেন, 'আশির দশক থেকেই মূলত প্রকৃতিকে আমরা তার স্বাভাবিক অবস্থায় পাচ্ছি না। ২০১৮ সালেও তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২.৬ ডিগ্রি রেকর্ড করা হয়েছিল। অথচ ১৯৮১ সালের পর কিন্তু গড় তাপমাত্রা কোনো বছরই ২৫.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামেনি। গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে পৃথিবী।'
২০২২ সালের ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১২ থেকে ১১ ডিগ্রির মধ্যে। এবছর একই সময়ে তাপমাত্রা ছিল ১৪ ডিগ্রির আশপাশে। গত বছর ২৪ ডিসেম্বর নওগাঁ, পঞ্চগড়ের ওপর দিয়ে বয়ে গিয়েছিল শৈত্যপ্রবাহ। ওইদিন তেঁতুলিয়া ও বদলগাছিতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া সৈয়দপুর, দিনাজপুর, বরিশাল, চুয়াডাঙ্গা, রাজশাহী, মাদারিপুরেও তাপমাত্রা ছিল ১০ ডিগ্রির কিছু বেশি।
অথচ এবছরের ২৪ ডিসেম্বর দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে তেঁতুলিয়ায় ১১.১ ডিগ্রি। বদলগাছির তাপমাত্রা ১২.৫ ডিগ্রির নীচে নামেনি। যশোরে ছিল ১৫.৬ ডিগ্রি, বরিশালে ১৪.৬ ডিগ্রি, মাদারীপুরে ১৪.৪ ডিগ্রি। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে ফিরে গেলে দেখব, ২৪ ডিসেম্বর তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৮.৩ ডিগ্রি আর ২০ ডিসেম্বর চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্রা নেমেছিল ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
নুসরাতের মা আন্জুমান আরার বিয়ে হয়েছিল ১৯৮৩ সালের ডিসেম্বরে। তাদের মোহাম্মদপুরের বাড়িতে এলাহী খাবারের ব্যবস্থা হয়েছিল। তবে গরুর মাংস খেয়ে বিপাকে পড়েছিলেন অনেকে। কারণ শীতে চর্বি জমে গিয়েছিল হাতে। পরে সাবান দিয়ে ঘষে, গরম পানি ঢেলে রেহাই মিলেছিল।
বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে মিরপুরে শশুরবাড়িতে আসতে আসতে সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিল আন্জুমান আরার। তখনকার মিরপুরে গাছ-গাছালি ছিল অনেক। সন্ধ্যার আগেই কুয়াশারা নেমে এসেছিল দলে দলে। নতুন বউ ঘরে ঢুকে বসেছিলেন ঘুমাতে যাওয়ার আগ পর্যন্ত। পরদিন সকালে উঠে দেখেন উঠান-দাওয়া সব ভিজে আছে।
আন্জুমান আরা বলছিলেন, 'তখনকার শীতকাল মানে লেপ-তোষকও ভেজা ভেজা, কুয়াশায় দশ গজ দূরের লোকও ভালো করে দেখা যেত না।'
প্রকৃতিতে উষ্ণতা বেশি টের পাওয়া যাচ্ছে চলতি শতকের শুরু থেকে। আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বিষয়টির ব্যাখ্যা করে বললেন, '২০০০ সালের পর অন্তত আটটি উষ্ণ বছর পেয়েছি আমরা। এর মধ্যে ২০১৪ সাল ছিল বেশি উষ্ণ। এবারের শীত শুরু হওয়ার আগেই আমরা একে ওয়ার্ম উইন্টার আখ্যা দিয়েছিলাম। সেটি ওই এল নিনোর প্রভাব পর্যালোচনা করেই।'
তিনি এর সঙ্গে আরো কিছু কারণ যুক্ত করেন। এক. ট্রান্সবাউন্ডারি এয়ার পলিউশন বা আন্তঃসীমান্তীয় বায়ু দূষণ, যা এক দেশে উদ্ভূত হয়, অন্য দেশেও প্রভাব ফেলে। বাতাসের মান বিবেচনায় ভারতের দিল্লি পৃথিবীর সবচেয়ে দূষিত শহর। এর বাতাস আমাদের দেশেও ছড়িয়ে পড়ে আর হিট অ্যাবজর্ব করে। দুই. ভূমধ্যসাগর থেকে বঙ্গোপসাগর ছুয়ে আসা দক্ষিণা বাতাস জলীয় বাষ্প ছড়িয়ে দেয় পুরো দেশে। জলীয় বাষ্প নিজেই গ্রিন হাউজ গ্যাস। অর্থাৎ উষ্ণতা ধারক বা হিট অ্যাবজরভার। তিন. গেল বর্ষায় বৃষ্টি কম হওয়ায় বাতাসে ভেসে বেড়ানো তাপ মাটিতে মিশে যেতে পারেনি যা শীতকে উষ্ণ করছে। চার. চলতি বছরে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের ৬৯টি আগ্নেয়গিরি থেকে ৭২ বার অগ্নুৎপাত ঘটেছে, যা বিশ্বের তাপমাত্রা বৃদ্ধি করেছে। পাঁচ. ইউক্রন-রাশিয়া যুদ্ধে এবং গাজায় ইসরায়েলি হামলায় টনকে টন বোমা বিস্ফোরিত হচ্ছে, যা বৈশ্বিক উষ্ণায়নে ভূমিকা রাখছে।
শীতের তীব্রতা হিসাব করা হয় রাতের তাপমাত্রা ধরে। সূর্যের আলো ফুরিয়ে এলে রাতের পরিবেশ শীতল হতে থাকে। কিন্তু আকাশ মেঘলা থাকলে বাতাসে ছড়ানো তাপ উর্ধ্বাকাশে উঠে যেতে পারে না। তাই রাতে গরম অনুভূত হয়।
ঢাকার তাপমাত্রা উষ্ণ হওয়ার জন্য মানবসৃষ্ট কিছু কারণও চিহ্নিত করলেন আবুল কালাম মল্লিক। যেমন- ময়লা নিষ্কাশনে অব্যবস্থাপনা। প্রচুর ময়লা এদিক-সেদিক ছড়ানো থাকে। বেশিদিন জমে থাকলে তা থেকে মিথেন গ্যাস তৈরি হয়, যা তাপ ধরে রাখে। ঢাকায় গাছ-পালা ও জলাশয় বিপজ্জনক মাত্রায় কমে গেছে, যা গরম বাড়াচ্ছে। ঢাকার বাসা-বাড়ি, অফিস-আদালত, গাড়ির এয়ার কন্ডিশন ব্যাপক হারে গরম ছড়াচ্ছে পরিবেশে এবং রাতের বেলায় ডিজেল চালিত ট্রাকগুলো শহরজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে। ঢাকার মধ্যে এবং চারপাশ ঘিরে শিল্প এলাকা গড়ে উঠেছে যেগুলো কার্বন, ক্লোরো-ফ্লোরো কার্বন নিঃসরণ ঘটাচ্ছে। একই ভূমিকা রাখছে বুড়িগঙ্গা, ধলেশ্বরী, শীতলক্ষ্যার তীর ধরে গড়ে ওঠা ইটভাটাগুলোও।
সমাধানের কোনো উপায় আছে কি না তা জানতে চেয়েছিলাম এই আবহাওয়াবিদের কাছে। তিনি বললেন, 'কিছু বৈশিষ্ট্য পুনরুদ্ধারে বা নবায়নে প্রকৃতিই কেবল ভূমিকা রাখতে পারে তার নিজস্ব উপায়ে। জলবায়ু উদ্বাস্তুদের আপনি টাকা দিয়ে পুনর্বাসিত করতে পারেন কিন্তু প্রকৃতিতে স্বাভাবিক অবস্থা কি ফিরিয়ে আনতে পারবেন? সদ্য সমাপ্ত কপ-২৮ থেকে আগামী পাঁচ বছরকে অধিক সংকটকাল বলে ঘোষণা করা হয়েছে। মানবজাতির আশু কর্তব্য গ্রিন হাউজ গ্যাসের উৎপাদন কমিয়ে আনা। তাদের জন্য অন্য প্রাণিও কষ্ট পাচ্ছে।'
কামরুল হাসান বলছিলেন, 'গমে যখন ফুল আসে তখন প্রকৃতি ঠাণ্ডা না থাকলে ফুল ফলে পরিণত হয় না। যাদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা আছে মেঘলা আবহাওয়ায় তাদের কষ্ট বাড়ে। শীতকালে শীত, বর্ষায় বৃষ্টি; প্রকৃতি স্বাভাবিক থাকলে সবারই মঙ্গল। অন্যথা হলে প্রজননে, উৎপাদনে, জীবনযাত্রায় সমস্যা তৈরি হবেই।'
নুসরাতের মা আন্জুমান আরাও বললেন, 'শীতকালে ঠাণ্ডার কষ্ট আছে মানি, কিন্তু এই মৌসুমে ঠাণ্ডা না লাগলে শরীরে নানান অস্বস্তি তৈরি হয়। আমাদের বাড়িতে মালশায় (মাটির পাত্র) কয়লা রেখে তাপ পোহাতে দেখেছি মা-খালাদের, আমরা ছোটরাও মালশা ঘিরে বসতাম, তাপ পেলে ভারি আরাম হতো। এখন সে আরাম আর পাই না।'
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রেও শীতের মৌসুম শুরু হয়ে গেছে। কিন্তু দেশটির বেশিরভাগ অংশ জুড়েই তেমন ঠাণ্ডা অনুভূত হচ্ছে না।
তাপমাত্রা পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে জলবায়ু গবেষণা গোষ্ঠী ক্লাইমেট সেন্ট্রাল জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শীতকালের উষ্ণতা অন্যান্য ঋতুর চেয়ে প্রায় ৭৫ শতাংশ দ্রুত বাড়ছে। সংস্থাটি যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ২৪০টি স্থানের তাপমাত্রা গবেষণা করে এ তথ্য তুলে ধরেছে। তাদের মতে, ১৯৭০ সালের পর থেকে এসব স্থানের মধ্যে ২৩৩টি অর্থাৎ ৯৭ শতাংশ স্থানেই উষ্ণতা বেড়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের আবহাওয়ার এ খবর সিএনএনসহ অন্যান্য সংবাদমাধ্যমের।
মানব সৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে শীতকাল দ্রুত উষ্ণ হচ্ছে এবং এটি তুষার, পর্যটন, শীতকালীন ক্রীড়া, স্থানীয় অর্থনীতি, খাবারসহ নানা বিষয়ের ওপর প্রভাব ফেলছে।
বিশ্বের আরেক প্রান্তে যুক্তরাজ্য এবার বড় দিন পালন করেছে তুষার ছাড়া। কাগজে-কলমে হোয়াইট ক্রিসমাস, কিন্তু এবার তুষারের কোনো দেখা নেই।
এ নিয়ে খবর প্রকাশ করেছে বিবিসি। যেটির শিরোনাম ছিল এমন-: 'ক্রিসমাস ইভ: ১৯৯৭ সালের পর থেকে সবচেয়ে উষ্ণ…'।
এদিন লন্ডনের তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৫.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ১৯২০ সালের পর প্রথমবারের মতো দেশটি এমন 'উষ্ণ' ক্রিসমাস পালন করল। সেবার তাপমাত্রা ছিল ১৫.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এছাড়াও ২০১১ সালের ক্রিসমাস ছিল স্কটল্যান্ডের জন্য এ পর্যন্ত সবচেয়ে উষ্ণ বড়দিন। সেবার দিনটিতে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১৫.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
বিশ্বের সকল প্রান্তেই আবহাওয়া মর্জি বদলে যাচ্ছে। আমরাও সেই অবস্থার শিকার। দেশে শীত আছে, কিন্তু শীত নেই।