বিজিএমইএর প্রত্যাশা: তৈরি পোশাক ক্রেতা, ব্র্যান্ড বাংলাদেশ থেকে আরো বেশি পণ্য নেবে
তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান বলেছেন, পশ্চিমা ক্রেতা ও ব্র্যান্ডগুলো বাংলাদেশ থেকে তাদের পোশাক আমদানি বাড়াবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সম্প্রতি ব্ল্যাক ফ্রাইডে, ক্রিসমাস ডে, সাইবার মানডে ও বক্সিং ডের মতো উৎসবকে ঘিরে গত দুই মাসে খুচরা পর্যায়ে পোশাক বিক্রি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে উল্লেখ করে এ প্রত্যাশার কথা জানান তিনি।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর নিজের ব্যবসায়িক কার্যালয়ে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের সাথে আলাপকালে ফারুক হাসান বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সাইবার মানডে একটি মেগা-অ্যানুয়াল অনলাইন শপিং ইভেন্টে পরিণত হয়েছে।
এসব উৎসবকে ঘিরে কিছু খুচরা বিক্রেতা তাদের চাহিদা অনুাযায়ী পণ্য তলিকা চূড়ান্ত করেছে। এছাড়াও অন্যান্য অর্থনৈতিক সূচকগুলোও এখন অনুকূলে রয়েছে, যাতে করে ভোক্তারা আগের মতোই কেনাকাটা করতে পারেন।
এসব সূচক বিবেচনা করে পোশাক রপ্তানিকারকদের এই নেতা আশা করছেন, ক্রেতারা সামনের দিনগুলোতে তাদের অর্ডার নিশ্চিত করতে পারে। আর এটি আগামী সপ্তাহের মধ্যে স্পষ্ট জানা যাবে। কারণ, এখনো অনেকেই বড়দিনের ছুটি কাটাতে ব্যস্ত।
ফারুক হাসান বলেন, সাধারণত পোশাক রপ্তানিকারকরা প্রতিটি জাতীয় নির্বাচনের সময় নির্বাচনের মাসে তাদের অর্ডার কমিয়ে দেন।
এ বছর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে মুদ্রাস্ফীতিসহ এমন আরো কিছু কারণ এ খাতে আশঙ্কা যোগ করেছে। তবে বেশিরভাগ দেশ প্রায় ১৮ মাস পরে সুদের হার বাড়ানো বন্ধ করে দেওয়ায় নির্বাচনের পর এখন পশ্চিমা দেশগুলোতে পোশাকের চাহিদা বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিজিএমইএ সভাপতি আশা প্রকাশ করেন, পশ্চিমা গ্রাহকরা আগামী তিন মাসের মধ্যে আবারও কেনাকাটা শুরু করতে পারেন।
আশা সত্ত্বেও ফারুক হাসান অভ্যন্তরীণ কিছু চ্যালেঞ্জ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, যা তাদের ব্যবসার বৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করছে।
ফারুক হাসান বলেন, ব্যবসায়িক প্রক্রিয়ার সহজীকরণ, সরকারি অফিসে দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ এবং মেগা প্রকল্পের দ্রুত বাস্তবায়ন ব্যবসা বৃদ্ধির পূর্বশর্ত।
তিনি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে পণ্যের চালান নিশ্চিত করার জন্য গ্যাস ও বিদ্যুতের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহের প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দেন।
ফারুক হাসান বলেন, দেশে চাহিদার তুলনায় বিদ্যুতের উৎপাদন ক্ষমতা বেশি থাকার পরও বিতরণ ব্যবস্থার নানা দুর্বলতার কারণে শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো লোডশেডিংয়ের সম্মুখীন হচ্ছে।
তিনি সৌরশক্তিতে বিনিয়োগের জন্য কর সুবিধা প্রদানের নীতি বিবেচনা করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, বর্তমান সরকারের ধারাবাহিকতা তাদের অল্প সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সহায়তা করবে।
ফারুক হাসান জানান, শুল্ক-সম্পর্কিত হয়রানি পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে একটি বড় চ্যালেঞ্জ। শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য নির্দিষ্ট কিছু ব্যাংকিং-সম্পর্কিত নীতি প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।
তিনি বলেন, এলডিসি-পরবর্তী সময়ে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি বজায় রাখার জন্য এসব পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ হবে।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, বৈশ্বিক পোশাকের বাজারের আকার সংকুচিত হচ্ছে এবং বাংলাদেশ তার প্রতিযোগীদের চেয়ে ভাল করছে।