ভারতে মূল্যস্ফীতি ৩ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন
ভারতে খুচরা বা ভোক্তা মূল্যস্ফীতি (সিপিআই) জানুয়ারি মাসে ৫.১৯ শতাংশে নেমে এসেছে, যা তিন মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। ডিসেম্বরে এটি ছিল ৫.৬৯ শতাংশ।
এ পরিস্থিতি অর্থনীতির অন্যান্য সূচকে উচ্চ মূল্যহার নিয়ে চিন্তিত নীতি-নির্ধারকদের মধ্যে স্বস্তি বয়ে আনছে।
সোমবার পরিসংখ্যান মন্ত্রণালয় জানায়, গত মাসে ভোক্তা মূল্য সূচক আগের বছরের তুলনায় বেড়ে ৫.১০% এ পৌঁছেছে।
এই হার ব্লুমবার্গের অর্থনীতিবিদদের সমীক্ষা অনুযায়ী অনুমিত ৫ শতাংশের মাঝারি মানের কাছাকাছি।
শাকসবজি ও ডালের সরবরাহ বাড়ায় খাদ্যের দাম কমেছে। খাদ্যপণ্য সামগ্রিকভাবে মূল্যস্ফীতির অর্ধেকের জন্য দায়ী, যেটি গত ডিসেম্বরের ৯.৫৩ শতাংশ থেকে কমে ৮.৩০ শতাংশে নেমে এসেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লক্ষ্য ছিল ভোক্তা মূল্যস্ফীতি ৪% এর মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা।
খাদ্য ও জ্বালানির ব্যয় বাদ দিলে মূল্যস্ফীতির মূল পরিমাণ আরও কমে দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৬১ %, যা ২০১৯ সালের পর সর্বনিম্ন।
মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়ায় গত সপ্তাহে মুদ্রা কর্তৃপক্ষ কঠোর নীতিগত অবস্থান নিতে বাধ্য হয়।
এছাড়া গত সপ্তাহে, ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক (আরবিআই) সুদের হারও অপরিবর্তিত রেখেছিল।
কোটাক মাহিন্দ্রা ব্যাংক লিমিটেডের প্রধান অর্থনীতিবিদ উপাসনা ভরদ্বাজ বলেন, 'তারা আশা করছে আরবিআই যাতে খাদ্য মূল্যস্ফীতি নিয়ে সতর্ক অবস্থান বজায় রাখে।'
তিনি বলেন, খাদ্যপণ্যের দাম কমাতে সরবরাহ বাড়ানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।
এক বছর আগের তুলনায় জানুয়ারিতে আবাসনের দাম বেড়েছে ৩.২%, যেখানে পোশাক ও জুতার দাম বেড়েছে ৩.৩৭%; আর জ্বালানি ও বিদ্যুতের দাম কমেছে ০.৬%।
ব্লুমবার্গ অর্থনীতি কি বলে:
ভারতীয় অর্থনীতিবিদ অভিষেক গুপ্ত বলেন, জানুয়ারিতে তিন মাসের মধ্যে প্রথমবারের মতো ভোক্তা মূল্যস্ফীতি অনেক হ্রাস পেলেও, আমরা ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংককে তার কঠোর অবস্থান থেকে সরে আসতে দেখছি না।
মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকারকে আগামী কয়েক মাসের মধ্যে দেশব্যাপী নির্বাচনে তৃতীয় মেয়াদে প্রার্থী হতে সহায়তা করবে।
দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে তার প্রশাসন গম, চিনি ও অধিকাংশ জাতের ধানের রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে এবং মজুতদারির ওপর কড়াকড়ি আরোপ করেছে।
ভোজ্যতেল আমদানিতে আরও এক বছরের জন্য শুল্ক বাড়িয়েছে ভারত।
এছাড়া সরকার পরিসংখ্যানও প্রকাশ করেছে যে নভেম্বরে কারখানার উৎপাদন ২.৪০% থেকে বেড়ে ৩.৮% হয়েছে।