বাংলাদেশে ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে ভারত
শুক্রবার (১ মার্চ) বাংলাদেশে ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়।
ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্যের মহাপরিচালক সন্তোষ কুমার সারঙ্গী স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে বলা হয়েছে, ন্যাশনাল কো-অপারেটিভ এক্সপোর্টস লিমিটেডের মাধ্যমে পেঁয়াজের চালানটি বাংলাদেশে পাঠানো হবে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. আবদুস সামাদ আল দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'কী দামে কিংবা কোন প্রতিষ্ঠান পেঁয়াজ পাঠাবে—এ ধরনের স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর বা মডালিটিজ এখনও ঠিক হয়নি। আমরা আশা করছি শিগগিরই এটি ঠিক হবে এবং আমদানি শুরু হবে।'
প্রসঙ্গত, আগের বছরগুলোর তুলনায় এবার ভরা মৌসুমে দেশে পেঁয়াজের দাম অনেক বেড়েছে।
ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্যমতে, ১ মার্চ ভোক্তা পর্যায়ে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ১২০ টাকায় পৌঁছেছে, যা গত বছরের একই তারিখের চেয়ে ৩৫ টাকা বেশি।
তথ্যে বলা হয়েছে, দেশি পেঁয়াজের বর্তমান দাম গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৭১.৪২ শতাংশ বেশি।
ভারতীয় কর্তৃপক্ষ পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর বাংলাদেশের পেঁয়াজের বাজার অস্থির হয়ে ওঠে। ২০২৩ সালের ৮ ডিসেম্বর ভারত চলতি বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল।
তার আগে ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর অভ্যন্তরীণ সরবরাহ নিশ্চিতের জন্য রপ্তানি সীমিত করতে ভারত ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতি টন পেঁয়াজের ন্যূনতম রপ্তানি মূল্য ৮০০ ডলার বেঁধে দেওয়ার পাশাপাশি পণ্যটির ওপর ৪০ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক আরোপ করে।
ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়ার পর বাংলাদেশে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ২০-২৫ টাকা বেড়েছে।
ভারত পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পর ট্যারিফ কমিশন বিকল্প দেশ থেকে পণ্যটি আমদানির সুপারিশ করেছিল। কিন্তু ব্যবসায়ীরা এ পরামর্শ মানতে খুব একটা আগ্রহ দেখাননি।
চট্টগ্রাম বন্দর থেকে সংগৃহীত সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে বন্দর দিয়ে চীন ও পাকিস্তান থেকে ১ হাজার ৪৫৪ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে।
২০২২ সালের মে মাসে বাংলাদেশ সরকার স্থানীয় কৃষকদের সহায়তা দেওয়ার জন্য ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ করে দেয়, যার ফলে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যায়।
বাংলাদেশে পেঁয়াজের বার্ষিক উৎপাদন ৩.৫ মিলিয়ন টনের বেশি, আর চাহিদা প্রায় ২.৮ মিলিয়ন টন। উৎপাদন বেশি হওয়ার পরও স্টোরেজ ও ব্যবস্থাপনা জটিলতার কারণে বিশাল পরিমাণ—মোট উৎপাদনের ২৫ শতাংশ বা তার বেশি—পেঁয়াজ নষ্ট হয় বলে দেশ পণ্যটির আমদানির ওপর নির্ভরশীল।