গাজীপুরে অগ্নিদগ্ধের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনার পরদিন বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন গাজীপুরের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার। ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে গাজীপুর জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মো. সফিকুল ইসলাম ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করার কথা জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে গাজীপুর জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম, গাজীপুরের পুলিশ সুপার কাজী শফিকুল আলম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাউছার আহাম্মেদ, কালিয়াকৈর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজমেরী হোসেন, কালিয়াকৈর থানার ওসি এ এফ এম নাসিম ও মৌচাক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সাইফুল আলম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এ সময় আবুল ফাতে মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, গ্যাসের আগুনে ৩৬ জন দগ্ধ হয়েছে। তাদের মধ্যে ৩৪ জন ঢাকায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি আছেন আর দুইজন স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
তিনি আরো বলেন, গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হুমায়ুন কবিরকে প্রধান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অন্য দুই সদস্য হলেন কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাউছার আহাম্মেদ ও গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরিফিন। কমিটিকে আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
কালিয়াকৈর উপজেলার তেলিরচলা এলাকায় শফিকুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি বুধবার সন্ধ্যায় নিজের ঘরের ভিতর এলপি গ্যাস সিলিন্ডারে চুলার সংযোগ দেওয়ার সময় সিলিন্ডারের চাবি ভেঙ্গে গেলে ঘরের ভিতর গ্যাস ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় তিনি নিজে বাঁচার জন্য গ্যাস সিলিন্ডার ঘরের বাইরে গলিতে ফেলে দেন। পরে গ্যাস ছড়িয়ে পড়লে পাশের চুলার আগুন গ্যাসের সংস্পর্শে আসলে আগুন ধরে যায়। এ সময় ছড়িয়ে পড়া গ্যাসের আগুনে আশপাশের নারী-পুরুষ ও শিশু মিলিয়ে ৩৬ জন দগ্ধ হয়। পরে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
গাজীপুরের পুলিশ সুপার কাজী শফিকুল আলম বলেন, "এখানে যে ঘটনা ঘটেছে, সেটি খুবই মর্মান্তিক। এ ধরনের ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না হয় এজন্য জনসচেতনতা প্রয়োজন। আইনের কাঠামো থেকে যারা এর ব্যত্যয় ঘটাবে তাদের বিরুদ্ধে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নিব। এখানে যারা গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করেন, তাদের ডিলারশিপ ঠিক আছে কিনা সেগুলো দেখা হবে। এখানে মানুষের মধ্যে সচেতনতার অভাব রয়েছে।"
গাজীপুর জেলা প্রশাসক বলেন, "এখানে খুবই ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। যারা থাকেন তাদের গ্যাস ও বিদ্যুৎ ব্যবহারে অভিজ্ঞতা কম। যার কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের দিয়ে অগ্নি মহড়া দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। যাতে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আর না ঘটে। অগ্নিদগ্ধদের সার্বিক সহযোগিতা করা হবে এবং সার্বক্ষণিক তাদের খোঁজ খবর রাখা হচ্ছে।"
এদিকে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার তেলিরচলা এলাকায় এলপি সিলিন্ডারের লিকেজ থেকে গ্যাস বের হয়ে চুলার আগুনের সংস্পর্শে এসে আগুন জ্বলে অগ্নিদগ্ধের সংখ্যা বেড়ে ৩৬ জনে দাঁড়িয়েছে।