ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়ে দেশের বাজারকে অস্থিতিশীল করতে চায় বিএনপি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ শনিবার (২৩ মার্চ) বলেছেন, ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাক দিয়ে দেশের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার অস্থিতিশীল করা এবং দাম বৃদ্ধি করাই বিএনপির মূল লক্ষ্য।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশে অনেক ভোগ্যপণ্য ভারত থেকে আসে এবং এ ধরনের আহ্বান মানুষের ভোগান্তি এবং পণ্যের দাম বাড়বে।
'ভারতের সঙ্গে আমাদের হাজার হাজার কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে এবং বৈধভাবে কিছু সীমান্ত বাণিজ্যও হয়। আপনারা ভারত থেকে আসা পেঁয়াজ খাবেন, আপনাদের নেত্রী ভারতের শাড়ি পরবেন, আপনাদের মাঠের নেত্রীরাও ভারতীয় শাড়ি পরবেন, ভারত থেকে আসা গরুর মাংস দিয়ে সেহেরি খাবেন, ইফতার করবেন। কয়েকদিন আগে আপনাদের নেত্রী চিকিৎসার জন্য ভারতে গিয়েছিলেন... আর আপনারা ভারতীয় পণ্য বয়কটের আহ্বান করছেন — এগুলো ভণ্ডামি ছাড়া আর কিছুই নয়,' বলেন তিনি।
চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন সংক্রান্ত সমন্বয় সভায় যোগ দিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন হাছান মাহমুদ।
সোমালি জলদস্যুদের ছিনতাইকৃত বাংলাদেশি জাহাজ ও নাবিকদের উদ্ধারে সরকার কী ধরনের ভূমিকা রাখছে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সরকার নাবিক ও জাহাজের কোনো ক্ষতি ছাড়াই উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, 'গতবার যখন এমভি জাহান মনি হাইজ্যাক হয়েছিল, তখন তাদেরকে মুক্ত করতে ১০০ দিন লেগেছিল। এখন আমরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব জিম্মিদের মুক্ত করার চেষ্টা করছি।'
সরকার শিগগিরই নাবিক ও জাহাজটিকে উদ্ধার করতে সক্ষম হবে বলে আশা প্রকাশ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
চট্টগ্রাম উন্নয়ন সমন্বয় সভার বিষয়ে জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে এবং আমরা প্রকল্পের সমন্বয়কে গুরুত্ব দিয়েছি।
তিনি বলেন, 'প্রকল্পের কাজ শেষ হতে আড়াই বছর বাকি আছে। আমরা এ প্রকল্পের নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের গুরুত্ব নিয়েও আলোচনা করেছি।'
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী বে-টার্মিনালের জন্য ইতোমধ্যে বন্দর কর্তৃপক্ষকে বিনামূল্যে পাঁচশত একর জমি হস্তান্তর করেছেন।
'তারা আরও ৩০০ একর জমি পাবে, যার জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ আবেদন করেছে। চট্টগ্রাম বন্দর ইতোমধ্যে ডিপি ওয়ার্ল্ড এবং সিঙ্গাপুর বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করেছে,' মন্ত্রী আরও জানান।
তিনি আরও বলেন, কাজটি তিন ভাগে করা হবে। একটি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, আরেকটি সিঙ্গাপুর বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং অন্যটি ডিপি ওয়ার্ল্ড করবে। বিশ্বব্যাংকসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানও সেখানে যোগ দিচ্ছে। এটি একটি বড় অগ্রগতি,' হাছান মাহমুদ বলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বে-টার্মিনাল হলে এটি হবে চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়েও বড় একটি নতুন বন্দর।
বিভাগীয় কমিশনার তোফায়েল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়েশা খান; শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী নজরুল ইসলাম চৌধুরী; সংসদ সদস্য মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, মহিউদ্দিন বাচ্চু, এমএ ছালাম, এমএ মোতালেব; সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়; ডিআইজি নুরে-আলম মিনা; চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মো. ফকরুজ্জামান।