৫ বছর আগে নির্মাণ সম্পন্ন হলেও চালু হয়নি ৮ রেল স্টেশন
লোকবলের অভাবে প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজ শেষ হওয়ার ৫ বছর পরেও আটটি রেলস্টেশন চালু করতে পারেনি বাংলাদেশ রেলওয়ে। কুমিল্লা, ফেনী ও গোপালগঞ্জ জেলার এসব স্টেশন ভবনের গ্রিল, দরজা, সিগনালিং ব্যবস্থা ও অন্যান্য মালামল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
দুটি প্রকল্পের আওতায় এসব স্টেশন নির্মাণ করা হয়েছিল। এর মধ্যে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে বিদেশ থেকে ঋণ করে। বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) সমাপ্ত প্রকল্পের প্রভাব মূল্যায়ন প্রতিবেদনে এই চিত্র উঠে এসেছে।
এরমধ্যে চারটি স্টেশন জাপানের অর্থায়নে লাকসাম-চিনকি আস্তানার মধ্যে ডাবল লাইন ট্র্যাক নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় নির্মিত। স্টেশনগুলো হলো – কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার নওটি, একই জেলার নাঙ্গলকোটের শার্শাদি, ফেনীর জেলার কালীদহ এবং মহুরীগঞ্জ।
এই প্রকল্পের আওতায় মোট ১১টি স্টেশন নির্মাণ করা হয়। বাস্তবায়ন কাজ শেষ হয় ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে।
বন্ধ থাকা অন্য ৪টি স্টেশন হলো – গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ার বোড়াশী, চন্দ্রদিঘলিয়া, কাশিয়ানির ছোট-বাহিরবাগ এবং চাপতা।
এসব স্টেশন কালুখালী-ভাটিয়াপাড়া সেকশন পুনবার্সন এবং কাশিয়ানি- গোপালগঞ্জ-টুঙ্গিপাড়া নতুন রেলপথ প্রকল্পের আওতায় নির্মাণ করা হয়। এই প্রকল্পের আওতায় মোট ১৯টি স্টেশন নির্মাণ করা হয়েছে। এই প্রকল্পের কাজও শেষ হয়ে ২০১৮ সালে।
আইএমইডির প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, গোবরা, বোড়াশী, চন্দ্রাদিঘলিয়া, ছোট বাহির বাগ এবং চাপতা – মোট ৫টি স্টেশনের প্রতিটিতে তিনটি করে স্টাফ কোয়ার্টার নির্মাণ করা হলেও ব্যবহার হচ্ছে না । ফলে স্টাফ কোয়ার্টারগুলো আগাছায় পরিপূর্ণ হয়ে আছে, এবং ভবনগুলোর জানালা, দরজা ও অন্যান্য অবকাঠামো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ।
বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা এস এম সলিমুল্লাহ বাহার জানান, এসব স্টেশনে জনবল নিয়োগ প্রক্রিয়া এখনো শেষ হয়নি। "দরকারি পদ সৃজনের প্রস্তাব জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। প্রক্রিয়া শেষ হলেই জনবল নিয়োগ দেওয়া হবে এবং স্টেশনগুলো চালু করা হবে"- বলেন তিনি।
আইএমইডির প্রতিবেদন অনুযায়ী, লাকসাম চিনকি আস্তানার মধ্যে ডাবল ট্র্যাক নির্মাণ প্রকল্পটির বাস্তবায়ন কাজ শুরু হয় ২০০৮ সালের জুনে। ৫ বছরে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ১০ বছরের বেশি লেগেছে কাজ শেষ করতে।
এই প্রকল্পে ব্যয় শুরুতে ছিল ৫০১ কোটি টাকা। পরে দুই বার ব্যয় বাড়ানো হয়। শেষপর্যন্ত প্রকল্পটি বাস্তবায়নে প্রয়োজন হয়েছে ১ হাজার ৮০৯ কোটি টাকা।
অন্যদিকে কালুখালী-ভাটিয়াপাড়া সেকশন পুনবার্সন এবং কাশিয়ানি–গোপালগঞ্জ-টুঙ্গিপাড়া নতুন রেলপথ নির্মাণের কাজ শুরু হয় ২০১০ সালের অক্টোবরে । এই প্রকল্পটিও শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৩ সালের জুনে। কিন্তু, কাজ শেষ হয়েছে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে।
শুরুতে প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছিল ১ হাজার ১০১ কোটি টাকা। শেষপর্যন্ত এই প্রকল্পে প্রয়োজন হয়েছে ২ হাজার ৩৫ কোটি টাকা।
আইএমইডির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুরুতে ভুলল প্রাক্কলন, নকশাগত ভুল এবং পরবর্তীতে কাজের পরিধি বেড়ে যাওয়ায় প্রকল্পগুলোর ব্যয় ও মেয়াদ বেড়েছে।