বিদেশে পলাতক আসামিদের দেশে ফিরিয়ে আনতে উচ্চ পর্যায়ের টাস্কফোর্স গঠন
বিদেশে অবস্থানরত দণ্ডপ্রাপ্ত কিংবা মামলার আসামিদের দেশে ফিরিয়ে এনে দণ্ড কার্যকর করতে আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে প্রধান করে ১১ সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের টাস্কফোর্স গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার।
এমনকি আসামিরা ইতিমধ্যে কোনো দেশের নাগরিকত্ব পেয়ে থাকলে, তাদেরকেও ফেরত আনতে কাজ করবে এই টাস্কফোর্স।
আইনমন্ত্রীর সভাপতিত্বে গঠিত টাস্কফোর্সের অন্য সদস্যরা হলেন: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, অ্যাটর্নি জেনারেল, পররাষ্ট্র সচিব, জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব, সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব, আইন সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার মহাপরিচালক ও প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের মহাপরিচালক।
গত ৭ মে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্মসচিব বেবী পারভীন স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, যেসব বাংলাদেশি নাগরিক বিভিন্ন মামলার আসামি, তাদেরকে বিদেশ থেকে বাংলাদেশে ফেরত এনে তাদের বিচার করা এবং দণ্ডদানের বিষয়ে পর্যালোচনা করার পাশাপাশি এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে এ টাস্কফোর্স।
বিদেশে অবস্থানরত কোন ধরনের আসামিদের বাংলাদেশে ফেরত এনে দণ্ড কার্যকর করা হবে, সে বিষয়ে প্রজ্ঞাপনে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু বলা হয়নি। তবে বিদেশে অবস্থানরত কোন কোন আসামিকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচার এবং দণ্ড কার্যকর করা হবে, তাদের তালিকা করবে এই টাস্কফোর্স।
টাস্কফোর্সের কার্যপরিধিতে বলা হয়েছে, বিদেশে অবস্থানরত আসামিদের (বাংলাদেশি নাগরিক) বিচারার্থে ও দণ্ডদানার্থে বাংলাদেশে আনার উদ্দেশ্যে তাদের নামের তালিকা প্রণয়ন করবে। যথাযথ সূত্র ব্যবহার করে আসামিদের অবস্থান চিহ্নিত করবে এই টাস্কফোর্স।
সংশ্লিষ্ট দেশ থেকে আসামিদের দেশে ফিরিয়ে আনার উপায় নির্ধারণ এবং ফেরত আনার কার্যক্রম তদারকি করবে টাস্কফোর্স।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, 'কোনো আসামি ইতিমধ্যে বিদেশে নাগরিকত্ব গ্রহণ করে থাকলে সেক্ষেত্রে তাকে ফিরিয়ে আনার উপায় নির্ধারণসহ এ-সংক্রান্ত কার্যক্রম তদারকি করবে টাস্কফোর্স।'
আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পলাতক খুনি এবং ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ও বিএনপির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকর করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে।
রোববার (২৬ মে) গণভবনে এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত তারেক রহমানকে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকর করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, 'এখন একটাই কাজ, ওই কুলাঙ্গারটাকে ফেরত নিয়ে আসা। ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি, গ্রেনেড হামলা মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি, দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন তারেক জিয়া যেখানেই থাক, আমরা তাকে ফিরিয়ে আনব।'
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'ইতিমধ্যে ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে আমরা আলোচনা করেছি, ওই সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি তারেক জিয়াকে যেন বাংলাদেশে ফেরত দেয়। আমরা তাকে নিয়ে এসে সাজা কার্যকর করব।'
এ সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনি যারা বিদেশে পলাতক রয়েছেন, তাদেরও ফিরিয়ে এনে সাজা কার্যকর করা হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
এর আগে ২০১৯ সালের অক্টোবরে এ ধরনের একটি টাস্কফোর্স গঠন করেছিল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। নতুন এই টাস্কফোর্স গঠন করে আগেরটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। নতুন টাস্কফোর্স আগের টাস্কফোর্সের কাজের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখবে।