দৌলতদিয়ার ৭ নম্বর ঘাট বন্ধ, ৩৬ ঘণ্টা পর ফেরি চালু
ঘূর্ণিঝড় রিমালের কারণে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে বন্ধ থাকা ফেরি চলাচল ৩৬ ঘণ্টা পর মঙ্গলবার (২৮ মে) সকালে চালু হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে এদিন সকাল সাড়ে ৯টা থেকে ফেরি চলাচল শুরু হয়।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয় জানায়, ঘূর্ণিঝড় রিমালের কারণে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে রোববার (২৬ মে) রাত সাড়ে ৯টা থেকে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। তখন থেকেই বিভিন্ন ধরনের যানবাহন দৌলতদিয়া ও পাটুরিয়া ঘাটে আটকা পড়ে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের দৌলতদিয়া ফেরিঘাট থেকে ক্যানাল ঘাট পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার জুড়ে ঢাকামুখী পণ্যবাহী যানবাহনের লম্বা লাইন তৈরি হয়েছে। এদের বেশিরভাগ গাড়ি রোববার রাত থেকে নদী পাড়ি দেওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে।
এদিকে দৌলতদিয়া প্রান্তে চালু থাকা ৩, ৪ ও ৭ নম্বর ঘাটের মধ্যে ৭ নম্বর ঘাটটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় আপাতত বন্ধ রয়েছে। ৩ ও ৪ নম্বর ঘাট দিয়ে ফেরিতে যান পারাপারের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ঝড়ে পাটুরিয়া প্রান্তে একাধিক ঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হলেও গুরুতর মাত্রায় না হওয়ায় তা মেরামত করা হয়েছে।
দৌলতদিয়া ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, ৭ নম্বর ফেরি ঘাটের সংযোগ সড়ক ভেঙে পন্টুন দূরে সরে গেছে। পন্টুনের মাথা পানির নিচে তলিয়ে আছে। মোটা রশি দিয়ে পন্টুনটি ধরে রাখা হয়েছে।
সংযোগ সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ঘাটটি মঙ্গলবার চালু হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। বিকল্প হিসেবে ৩ ও ৪ নম্বর ঘাটের পন্টুনের সামনে ইটের টুকরো ফেলে প্রাথমিক সংস্কার করে ফেরি চালু করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
মেহেরপুর থেকে কাঁচা মরিচবোঝাই ট্রাকচালক রফিকুল ইসলাম বলেন, "রোববার সন্ধ্যায় রওনা হয়ে রাত ৯টার দিকে দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের কাছে লম্বা লাইনে আটকা পড়ি। তখনই জানতে পারি ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ফেরি বন্ধ। ৩৭ ঘণ্টার মতো আটকে থাকায় কাঁচামাল পচে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া, কাছে টাকা না থাকায় বাড়তি কষ্ট করতে হয়েছে।"
বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক মো. সালাহ উদ্দিন বলেন, "সকাল সোয়া ৯টার দিকে কর্তৃপক্ষের নির্দেশে দৌলতদিয়া থেকে ফেরি ছেড়ে যায়। বর্তমানে দৌলতদিয়ার ৩ ও ৪ নম্বর ঘাট দিয়ে যানবাহন পারাপার হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত ৭ নম্বর ঘাট মেরামত করা না পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।"
বিআইডব্লিউটিসি আরিচা কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক শাহ মো. খালেদ নেওয়াজ বলেন, পাটুরিয়া ঘাটেও কিছু সমস্যা হয়েছিল। তবে সেগুলো মেরামত করা হয়েছে।
"নদী শান্ত থাকায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতিতে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পাটুরিয়া থেকে দুটি বড় ও একটি ছোট ফেরি এবং দৌলতদিয়া থেকে দুটি বড় ও একটি ছোট ফেরি যানবাহন নিয়ে পারাপার কার্যক্রম শুরু করেছে। তেমন সমস্যা না হলে পর্যায়ক্রমে অন্যান্য ফেরিও চালু করা হবে," যোগ করেন তিনি।