জুয়েলারি শিল্পের জন্য দেওয়া প্রস্তবের একটিও নেই প্রস্তাবিত বাজেটে: বাজুস
বাংলাদেশ জুয়েলার্স এসোসিয়েশন (বাজুস) দেশের জুয়েলারি শিল্পে চোরাচালান বন্ধ এবং বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে প্রাক-বাজেট আলোচনায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) যে ১৫টি প্রস্তাব দিয়েছিল, তার একটিও ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবনায় নেই বলে জানিয়েছে স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সংগঠনটি।
রোববার (৯ জুন) রাজধানীর পান্থপথের বসুন্ধরা শপিংমলে বাজুস কার্যালয় প্রস্তাবিত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানায়, জুয়েলারি শিল্পে যখন নতুন নতুন শিল্প-কারখানা গড়ে ওঠায় উৎসাহ দেওয়ার কথা— তখন এনবিআর নীতি সহায়তা নিয়ে এগিয়ে আসছে না।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য প্রদান করেন বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ট্যারিফ অ্যান্ড ট্যাক্সেশনের চেয়ারম্যান ও কার্যনির্বাহী সদস্য আনোয়ার হোসেন। এ সময় বাজুসের মুখপাত্র ডা. দিলীপ কুমার রায়, উপদেষ্টা রুহুল আমিন রাসেলসহ উপস্থিত ছিলেন আরও অনেকে।
আনোয়ার হোসেন বলেন, "বাজুসের পক্ষ থেকে আমরা অর্থমন্ত্রীর কাছে বাজেট প্রস্তাবনা দিয়েছিলাম। গত কয়েকটি বছরের প্রাক বাজেট বৈঠকে এনবিআর চেয়ারম্যান বাজুসের দাবি পূরণের অঙ্গিকার করলেও, বাস্তবে জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ছলচাতুরির আশ্রয় নিচ্ছেন। জুয়েলারি শিল্পে যখন নতুন বিনিয়োগের সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে, তখন এনবিআর নীতি সহায়তা নিয়ে এগিয়ে আসছে না।"
তিনি বলেন, "উল্টো সারাদেশের জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ভ্যাট আদায়ের নামে হয়রানি করা হচ্ছে। ১০ টাকা ভ্যাট আদায়ের আড়ালে ৯০ টাকা ঘুষ নেয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড।"
বাজুসের দাবি— ব্যাগেজ রুল সংশোধন করার মাধ্যমে সোনার বার ও রূপার বার আনা বন্ধ করতে হবে। ব্যাগেজ রুলের সুবিধা নিয়ে অবাধে সোনার বার বা পিণ্ড বিদেশ থেকে দেশে প্রবেশ করছে। চোরাচালানের মাধ্যমে বিদেশে অর্থ পাচার হয়। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। কিন্তু প্রকৃত অর্থে সোনা চোরাচালান বন্ধে কার্যকর প্রস্তাবিত বাজেটে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি বলে দাবি করে বাজুস।
আনোয়ার হোসেন জানান, "বাজেট পাস হওয়ার আগে বাজুসের দাবিগুলো পুনঃবিবেচনায় নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে অর্থমন্ত্রীর কাছে।"
দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে— সোনার অলংকার, রূপা বা রূপার অলংকার বিক্রির ক্ষেত্রে আরোপিত ভ্যাট হার ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ করা; ইএফডি মেশিন যত দ্রুত সম্ভব সব জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানে বিতরণ করা; অপরিশোধিত সোনার ক্ষেত্রে আরোপিত সিডি (কাস্টম ডিউটি) ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে আনা; আংশিক পরিশোধিত সোনার ক্ষেত্রে সিডি ১০ শতাংশের পরিবর্তে আইআরসি ধারী এবং ভ্যাট কমপ্লায়েন্ট শিল্পের জন্য ৫ শতাংশ করা; সোনা পরিশোধনাগার শিল্পের কাঁচামাল হিসেবে সোনার বর্জ্য ব্যবহারের জন্য প্রস্তাবিত শুল্ক হার ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১ শতাংশ করা; হীরা কাটিং এবং প্রক্রিয়াজাত করণের উদ্দেশ্যে যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান দ্বারা আমদানি করা ডায়মন্ডের শুল্ক কমিয়ে আনাসহ আরও বেশ কয়েকটি দাবি জানানো হয়েছে।