সরকারি কর্মকর্তাদের ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগের মধ্যেই সচিবদের সঙ্গে বৈঠক ডেকেছে মন্ত্রিপরিষদ
আজ (৪ জুলাই) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে সমস্ত সরকারি সচিবদের একটি বৈঠকের জন্য তলব করা হয়েছে। বৈঠকে সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আসা দুর্নীতির অভিযোগ আলোচনার মূল বিষয়বস্তু হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
৮৪ জন সচিবের এ বৈঠকে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। বর্তমান সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর এটি এ জাতীয় দ্বিতীয় বৈঠক। প্রথম বৈঠক আয়োজিত হয়েছিল এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে।
কয়েকজন সাবেক এবং বর্তমান সরকারি কর্মকর্তা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের বিষয়টি সম্প্রতি প্রকাশ্যে আসার পর তা ব্যাপক জনরোষের জন্ম দিয়েছে। তারই মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে সচিবদের বৈঠকের জন্য তলব করা হলো।
শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তাদের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের তথ্য জনসম্মুখে আসার পর সরকার কয়েকজন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব থেকে অপসারণ করার পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্ত শুরু করার নির্দেশ দেয়া এবং নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তির দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে আদালতের আদেশ জারি করা সহ তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়েছে।
বিষয়টি সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে, যা নিয়ে জাতীয় সংসদ এবং মন্ত্রিসভায় আলোচনা হয়েছে।
এসব উদ্বেগ নিরসনে এবং অনিয়ম রোধে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন বিকেল সাড়ে ৪টায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে এ বৈঠক ডেকেছেন।
বৈঠকের আলোচ্যসূচির মধ্যে রয়েছে সততা, সুশাসন, সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারের প্রতিশ্রুতি এবং ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটের যথাযথ বাস্তবায়ন।
সরকারি কর্মকর্তাদের অসদাচরণ এবং দুর্নীতি নিয়ে জাতীয় সংসদের ভেতরে এবং বাইরে সরকারের সাম্প্রতিক সমালোচনার কারণে এই বৈঠকটি বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ।
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজির আহমেদ এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তা মতিউর রহমানের মতো উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিদের ব্যাপক পরিমাণে অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়টি সাম্প্রতিক প্রকাশ পাওয়ার পরে জনসাধারণের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
এসব ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৯ জুন জাতীয় সংসদে দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের ঘোষণা দেন।
গত সোমবার (১ জুলাই) মন্ত্রিপরিষদ কমিটির বৈঠকের পর মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটের সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে অর্থবছরের শুরু থেকেই কর্মপরিকল্পনা তৈরি করতে সচিবদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
সংবাদ সম্মেলনের সময় প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের দৃঢ় অবস্থানের বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করে জোর দিয়ে বলেন, এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করার জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।