কোটাবিরোধী আন্দোলন: বৃষ্টি উপেক্ষা করে সড়ক অবরোধে বরিশালের শিক্ষার্থীরা
টানা পঞ্চম দিনের মতো সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিলের দাবিতে অবরোধ কর্মসূচি পালন করছেন বরিশালের শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের অংশ হিসেবে কাফনের কাপড় জড়িয়ে সড়ক অবরোধ করে রাখেন তারা। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি ব্রজমোহন কলেজের শিক্ষার্থীরা পৃথক স্থানে এই অবরোধ কর্মসূচি পালন করে।
রোববার (৭ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে শিক্ষার্থীরা বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনের বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক এবং ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত নতুল্লাবাদ বাস টার্মিনালে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে অবস্থান নেন। এ সময় অনেক শিক্ষার্থীকেই কাফনের কাপড় পরে থাকতে দেখা যায়। থেমে থেমে বৃষ্টির মধ্যেও তারা সড়কে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যান। কোটা বাতিলের দাবিতে প্লেকার্ড হাতে নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায় তাদের।
শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচিতে স্থবির হয়ে পড়ে বরিশাল-কুয়াকাটা-ঢাকা মহাসড়কের যান চলাচল। ভোগান্তিতে পড়েন দূরপাল্লার ও অভ্যন্তরীণ রুটের গাড়ির যাত্রীরা।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থী নুসরাত বলেন, 'মেধার ভিত্তিতে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না করে রাষ্ট্র নাগরিকদের সাথে বৈষম্যমূলক আচরণ করছে। মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশ পেয়েছি। স্বাধীনতার সূর্য সন্তান মুক্তিযোদ্ধারে প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা আমৃত্যু। এই আন্দোলনেও অনেক মুক্তিযোদ্ধার সন্তান রয়েছেন। আমাদের একটাই দাবি, কোনো বরাদ্দ কোটায় নয় মেধায় চাকরি হবে'।
সরকারি ব্রজমোহন কলেজের শিক্ষার্থী জুবায়ের বলেন, 'চাকরি মেধার ভিত্তিতে হবে। এখানে কোটা বহাল স্পষ্ট বৈষম্য। আমরা বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাব'।
আন্দোলনকারীরা ঘোষিত ৪ দফা বাস্তবায়ন না হলে আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দিবেন বলে হুঁশিয়ারি জানান।
এ নিয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আবদুল কাইউম বলেন, 'শিক্ষার্থীদের সাথে আমরা কথা বলছি। সড়কে চলাচলকারীদের যেন দুর্ভোগ না হয় সে বিষয়টা গুরুত্ব দিতে শিক্ষার্থীদের বলা হচ্ছে'।
বরিশাল মেট্রোপলিটন এয়ারপোর্ট থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) লোকমান হোসেন বলেন, 'শিক্ষার্থীরা দাবি আদায়ে সড়ক অবরোধ করেছে। তাদের সাথে আমরা কথা বলছি সড়ক ছাড়ার জন্য। তারা বলেছেন সড়ক ছাড়বেন, তবে এখনও সড়কে রয়েছে। দ্রুতই হয়ত ক্যাম্পাসে ফিরে যাবেন'।
উল্লেখ্য, গত ৫ জুন সরকারি প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধাসহ অন্য কোটা বাতিল করে জারি করা পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। ফলে সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল হয়। মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তানের করা এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ এ রায় দেন। এর প্রতিবাদে সোমবার থেকে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কোটা পদ্ধতি বাতিলের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন।