কোটা আন্দোলন: আদালতের পর্যবেক্ষণ বাস্তবায়নে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের ইউজিসির চিঠি
কোটা পুনর্বহাল করে হাইকোর্টের রায়ের ওপর স্থিতাবস্থা দেওয়ার সময় সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরে যাওয়াসহ যে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন, তা বাস্তবায়নে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের চিঠি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। এছাড়া শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকেও শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসের ভেতরে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আজ সোমবার (১৫ জুলাই) একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) ইউজিসির সচিব ফেরদৌস জামান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে আদালতের দেওয়া পর্যবেক্ষণ ও নির্দেশনাসমূহ প্রতিপালনের জন্য উপাচার্যদের নির্দেশ দেওয়া হয়।
জানতে চাইলে ইউজিসির সচিব ফেরদৌস জামান টিবিএসকে বলেন, 'সর্বোচ্চ আদালত থেকে ইউজিসির চেয়ারম্যান বরাবর একটি নির্দেশনা এসেছিল। আমরা সেটি সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের কাছে পাঠিয়েছি।'
এদিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের কার্যক্রম যাতে ক্যাম্পাসে সীমাবদ্ধ থাকে, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে উপাচার্যদের নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। নির্দেশনার বিষয়টি একাধিক উপাচার্য নিশ্চিত করেছেন।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য টিবিএসকে বলেন, 'আমাদের লিখিত কোনো নির্দেশনা শিক্ষা মন্ত্রণালয় দেয়নি। তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে মৌখিকভাবে বলা হয়েছে, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের কার্যক্রম যেন ক্যাম্পাসের মধ্যে আবদ্ধ থাকে, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে। তাদের আন্দোলন যাতে সাধারণ মানুষের ভোগান্তির কারণ না হয়।'
গত ৫ জুন সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। এরপর গত ৯ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করেন। পরদিন আবেদন শুনানি শেষে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের ওপর এক মাসের স্থিতাবস্থা দেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ।
সেই সময় আদালত তার পর্যবেক্ষণে আন্দোলনকারী ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনায় মনোনিবেশ করার নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাসে ফিরিয়ে নিয়ে শিক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করবেন বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য/প্রক্টর ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের কাছে প্রত্যাশা রাখেন।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা চাইলে আইনজীবীর মাধ্যমে তাদের বক্তব্য আদালতের কাছে তুলে ধরতে পারবেন। আদালত মূল দরখাস্তটি নিষ্পত্তিকালে তাদের বক্তব্য বিবেচনায় নেবে বলেও পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করা হয়।