দেশে প্রতি লাখে ১১৪ জন ক্যান্সারে আক্রান্ত: বিএসএমএমইউ-এর গবেষণা
দেশে প্রতি লাখে ১১৪ জন ক্যান্সারে আক্রান্ত। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) এর পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগ এর উদ্যোগে পরিচালিত জনসংখ্যাভিত্তিক ক্যান্সার রেজিস্ট্রি কার্যক্রমে এ তথ্য উঠে এসেছে।
৫১-৬০ বছর বয়সীদের মধ্যে ক্যান্সার আক্রান্তের হার সব থেকে বেশি। পুরুষদের মধ্যে স্বরনালির ক্যান্সার ও নারীদের মধ্যে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্তের হার বেশি।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) বিএসএমএইউ সুপার স্পেশালিস্ট হাসপাতালে আয়োজিত এক সম্মেলনে গবেষণার ফলাফল তুলে ধরা হয়। পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এবং প্রধান গবেষক ডা. মো. খালেকুজ্জামান ক্যান্সার রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম তুলে ধরেন।
২০২৩ সালের ১ জুলাই থেকে চলতি বছর ৩০ জুন পর্যন্ত কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার পুমদি, শাহেদল, আড়াইবাড়িয়া এবং গোবিন্দপুর উপজেলায় এ গবেষণা পরিচালিত হয়। মোট ২৭৭৮৭টি বাড়িতে থাকা সর্বমোট ১ লক্ষ ১৬ হাজার ৪ শত ৭৫ জনকে রেজিস্ট্রির অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে; এর মধ্যে পুরুষ ৪৮.৪ শতাংশ ও নারী ৫১.৬ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বৎসর বয়সী নারী (১৬.৫ শতাংশ) এবং পুরুষের (১৮.০ শতাংশ) মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্যান্সার রোগী পাওয়া গেছে।
গবেষণায় আরো দেখা গেছে, ক্যান্সার রোগীদের মধ্যে ২৮.৬ শতাংশ ব্যক্তির উচ্চরক্তচাপ, ১১.৩ শতাংশ ব্যক্তির ডায়াবেটিস, ৮.৩ শতাংশ ব্যক্তির হার্টের রোগ এবং ৩ শতাংশ ব্যক্তির কিডনি জটিলতা বা স্ট্রোক-এর মতো শারীরিক জটিলতা বিদ্যমান রয়েছে।
ক্যান্সার আক্রান্ত ৭৩.৫ শতাংশ পুরুষের মধ্যে নিয়মিত ৪১.২ শতাংশ পুরুষের ধূমপান করার ইতিহাস রয়েছে। পাশাপাশি ও ৬১.৫ শতাংশ নারীর ধোঁয়াবিহীন তামাক সেবন করার এবং ৬৪.৭ শতাংশ পুরুষ ও ৭৫.৪ শতাংশ নারীর নিয়মিত পান-সুপারি খাওয়ার ইতিহাস রয়েছে বলে গবেষণার ফলাফলে জানানো হয়েছে।
ক্যান্সার রোগীদের মধ্যে ১৩ শতাংশ শুধু কেমোথেরাপি, ১১.৩ শতাংশ শুধু সার্জারি, ২.৩ শতাংশ রেডিওথেরাপি, ৯.৭ শতাংশ প্যালিয়েটিভ সেবা এবং ৫৯.৫ শতাংশ উল্লিখিত সবগুলোর একের অধিক সেবা গ্রহণ করেছেন। রেজিস্ট্রিকৃত ক্যান্সার রোগীর ৪.৫ শতাংশ কোনো প্রকার চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করেননি।
সেমিনারে আলোচকরা ক্যান্সার প্রতিরোধের তথ্যসমূহ তুলে ধরা, ক্যান্সার নির্ণয় কেন্দ্রগুলো একটি নেটওয়ার্কের আওতায় আনা, ক্যান্সার রোগ সংক্রান্ত কার্যক্রম অব্যাহত রাখা, রোগীদের রেজিস্ট্রি সঠিকভাবে রাখা, চিকিৎসা সুবিধা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেন।