কোটা আন্দোলনের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সমন্বয়ককে ডিবি পরিচয়ে তুলে নেওয়ার অভিযোগ
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার অন্যতম সমন্বয়ক আরিফ সোহেলকে ডিবি ও সিআইডি পরিচয়ে তুলে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আরিফ সোহেল বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের (৪৭তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী। তিনি পরিবারের সাথে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন আমবাগান এলাকায় ভাড়া থাকতেন।
আরিফ সোহেলের পরিবারের সদস্যদের দাবি, গতকাল শনিবার দিবাগত রাত পৌনে ৪টার দিকে আমবাগান এলাকার ভাড়া বাসা থেকে ডিবি ও সিআইডি পরিচয়ে ৮-১০ জন লোক তাকে তুলে নিয়ে যায়।
আরিফ সোহেলের বাবা মো. আবুল খায়ের জানান, গতকাল শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে ৮-১০ জন বাসার নিচে এসে গেটে নক করে। আরিফের বড় ভাই মোহাম্মদ আলী জুয়েল নিচে নেমে গেট না খুলে তাদের পরিচয় জানতে চান। একপর্যায়ে জুয়েল তার বাবা আবুল খায়েরকে ডেকে আনেন। ওই লোকেরা তখন আবুল খায়েরকে বাসার গেট খোলার অনুরোধ জানান এবং আরিফের পরিবারের সঙ্গে চা খাবেন বলে জানান। তারা নিজেদের ডিবি ও সিআইডির লোক বলে পরিচয় দেন।
আবুল খায়ের আরও জানান, তালা খুলে দেওয়ার পর তারা বাসার দ্বিতীয় তলায় এসেই সবার মোবাইল ফোন নিয়ে নেন। তারা জুয়েলের কম্পিউটারের পাসওয়ার্ড নিয়ে কম্পিউটারের বিভিন্ন ড্রাইভ চেক করে বেশ কয়েকটি ছবি তোলেন। এরপর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আরিফ সোহেল ও জুয়েলের সঙ্গে কথা বলবেন জানিয়ে তাদের তৈরি হতে বলেন। জুয়েল কেন যেতে হবে জানতে চাইলে ওই লোকেরা আন্দোলনসহ দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলার জন্য যেতে হবে বলে জানিয়ে তাদের নিয়ে যান।
এরপর আবুল খায়ের আশুলিয়া থানা, সাভার মডেল থানা ও সাভারে ঢাকা জেলা গোয়েন্দা শাখা ডিবি (উত্তর) কার্যালয়ে খোঁজ নিয়েও সন্তানদের বিষয়ে কোনো তথ্য পাননি। একপর্যায়ে বড় ছেলে জুয়েলের সঙ্গে ফোনে তার কথা হয়। জুয়েল তখন জানান যে ওই লোকেরা গেন্ডা এলাকায় তাকে নামিয়ে দিয়ে শুধু আরিফকে নিয়ে গেছেন।
এ বিষয়ে আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এফ এম সায়েদ বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো সমন্বয়ককে আমাদের থানায় আনা হয়নি। এমনকি কাউকে তুলে নেওয়ার বিষয়ে আমাদের কাছে তথ্য নেই।
ঢাকা জেলা গোয়েন্দা শাখা ডিবির (উত্তর) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ডিবি পরিচয়ে রাতে কাউকে তুলে আনার বিষয়টি আমার জানা নেই। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাবি শাখার কোনো সমন্বয়ককে আমরা আটক বা গ্রেপ্তার করিনি।