সংকট উত্তরণে জাতীয় ঐক্য ও সংলাপ জরুরি: ঢাবি সাবেক ভিসি আখতারুজ্জামান
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে উদ্ভুত সংকটে জাতীয় ঐক্য ও সংলাপ জরুরি বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান।
তিনি বলেছেন, "এই মুহুর্তে যেটি প্রয়োজন এবং আমি দাবি রাখি, সেটি হলো একটি জাতীয় ঐক্যের। সেটির জন্য সংলাপের বিকল্প নাই।"
আজ (শনিবার) বেলা সাড়ে ১১ টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে আওয়ামী লীগ সমর্থক শিক্ষকদের সংগঠন নীল দল আয়োজিত এক মানববন্ধনে তিনি একথা বলেন।
অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, "জাতীয় সংকট উত্তরণের জন্য জাতীয় সংলাপ জরুরি। সেজন্য সরকারের উচ্চ মহল থেকে এই উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। কেননা এ জাতি যে উচ্চতায় উপনীত হয়েছে, সেখান থেকে আমরা পশ্চাতে যেতে পারি না।"
"এখন যে সংকট তৈরি হয়েছে, এটা জাতীয় সংকট। এটা একাডেমিক কোনো সংকট নয় ।এই জাতীয় সংকট তৈরি হয়েছে পলিটিক্যাল স্থবিরতার কারণে। জাতীয় সংকট জাতীয়ভাবেই সমাধান করা প্রয়োজন", যোগ করেন তিনি।
শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, "তারা কিন্তু জাতিকে আরেকটি শিক্ষা দিল এবং তারা ইতিহাসের একটি অংশ হল। ন্যায্যতা ও অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কীভাবে নিয়মতান্ত্রিকভাবে আন্দোলন-সংগ্রাম পরিচালনা করতে হয়, সেটি বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনায় শিক্ষার্থীরা যেভাবে প্রমাণ করেছিল, তার পুনরাবৃত্তি ঘটল ১ জুলাই থেকে।"
দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, "আমরা ছাত্রশূণ্য ক্যাম্পাস দেখতে চাই না। আমরা চাই অবিলম্বে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হোক। যাতে শিক্ষার্থীরা নিজ ক্যাম্পাসে এসে জীবন গড়ার সুযোগ পায়, সেই কাজটি আমাদের অগ্রাধিকার পাওয়া উচিত।
মানববন্ধনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক নিজামুল হক ভূঁইয়া বলেন, "আমরা সবসময় কোটার যৌক্তিক সমাধান চেয়েছি। তবে তৃতীয় পক্ষ শিক্ষার্থীদের বিপথে পরিচালনা করে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে।"
মানববন্ধন শেষে শিক্ষকরা মিছিল নিয়ে রাজু ভাস্কর্য ঘুরে ৫ দফা দাবিতে উপাচার্য অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাদের কার্যালয়ে গিয়ে স্মারকলিপি দেন। এর আগে মানববন্ধনে স্মারকলিপিটি পড়ে শোনান নীলদলের আহ্বায়ক অধ্যাপক মোহাম্মদ আমজাদ আলী।
স্মারকলিপিতে ৫ দফা দাবি জানায় নীল দল। সেগুলো হলো,
১. কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে ক্যাম্পাসে সংঘটিত সকল ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের অবিলম্বে শাস্তির ব্যবস্থা করা
২. আবাসিক হলগুলোতে বৈধ এবং নিয়মিত শিক্ষার্থীদের অবস্থান নিশ্চিত করতে নীতিমালা প্রণয়ন করা
৩. আবাসিক হলগুলোতে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ, শিক্ষার্থীদের জীবনমানের উন্নয়ন, স্বাধীন মতপ্রকাশ এবং যেকোনো ধরনের নির্যাতন-নিপীড়ন রোধে নীতিমালা প্রণয়ন করা,
৪. গ্রন্থাগারগুলোতে শুধু বৈধ শিক্ষার্থীদের প্রবেশ নিশ্চিতকরণে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা,
৫. বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সকলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।