হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তার দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো শাহবাগে বিক্ষোভ
বাংলাদেশে হিন্দুদের মন্দির ও বাড়িঘরে হামলার প্রতিবাদ ও নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে বিক্ষোভ করেছেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যরা।
আজ শনিবার (১০ আগস্ট) বিকেল ৩টার দিকে শাহবাগ মোড় অবরোধ করে দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ করেন তারা। এতে শাহবাগ ও আশপাশের সড়কগুলোয় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
শিক্ষার্থীসহ হাজারো মানুষ কর্মসূচিতে অংশ নেন। এ সময় তারা 'জাগো রে জাগো, হিন্দু জাগো', 'তুমি কে আমি কে, হিন্দু হিন্দু', 'স্বাধীন দেশে স্বাধীন নাই', 'জ্বালাও পোড়াও বন্ধ করো, মানুষ হওয়ার চেষ্টা করো', 'তুমি কে, আমি কে, বাঙালি বাঙালি' ইত্যাদি স্লোগান দেন।
পাশাপাশি 'আমরা এ দেশ ছাড়ব না', 'অল আইজ অন মাইনোরিটিস', 'দেশটা আজও স্বাধীন নয়, আমার মন্দিরে হামলা হয়', 'হিন্দুদের নিরাপত্তা চাই', 'স্বাধীন দেশে সংখ্যালঘুরা স্বাধীন না কেন', 'মন্দিরে হামলা কেন? জবাব চাই জবাব চাই', 'সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন চাই,' ইত্যাদি প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন।
কর্মসূচি থেকে বিক্ষোভকারীরা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দেশজুড়ে হিন্দুদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের আহ্বান জানান। তারা এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
এর আগে গতকাল শুক্রবার (৯ আগস্ট) চার দফা দাবিতে শাহবাগে জড়ো হন বিক্ষোভকারীরা। তাদের দাবিগুলো হলো সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠন করতে হবে, সংখ্যালঘু সুরক্ষা কমিশন গঠন করতে হবে, সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সংঘটিত সব ধরনের হামলা প্রতিরোধে কঠোর আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে এবং সংখ্যালঘুদের জন্য ১০ শতাংশ সংসদীয় আসন বরাদ্দ করতে হবে।
৮ দফা দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ
এদিকে শাহবাগে পৃথক মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু ফোরাম। কর্মসূচি থেকে তারা আটটি দাবি জানিয়েছেন।
তাদের দাবিগুলো হলো-
- সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিচারের জন্য দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠন করে দোষীদের দ্রত শাস্তি, ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে;
- অবিলম্বে 'সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন' প্রণয়ন করতে হবে
- 'সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয়' গঠন করতে হবে
- হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টকে হিন্দু ফাউন্ডেশনে উন্নীত করতে হবে। পাশাপাশি বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টানধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টকেও ফাউন্ডেশনে উন্নীত করতে হবে
- 'দেবোত্তর সম্পত্তি পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ আইন' প্রণয়ন এবং 'অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন' যথাযথ বাস্তবায়ন করতে হবে
- প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সংখ্যালঘুদের জন্য উপাসনালয় নির্মাণ এবং প্রতিটি হোস্টেলে প্রার্থনাকক্ষ বরাদ্দ করতে হবে
- 'সংস্কৃত ও পালি শিক্ষা বোর্ড' আধুনিকায়ন করতে হবে এবং
- শারদীয় দুর্গাপূজায় ৫ দিন ছুটি দিতে হবে।
সমাবেশ থেকে দাবি আদায়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে তিন দিনের সময় বেধে দেওয়া হয়। অন্যথায় সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি দেন তারা।
আগামীকাল রবিবার বিকেল ৫টায় জাতীয় শহিদ মিনারে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন কর্মসূচি করার কথা রয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু ফোরামের।