শিক্ষক সেলিম হত্যা: বগুড়ায় শেখ হাসিনাসহ ১০১ জনের বিরুদ্ধে মামলা
এ লেখায় কিছু স্পর্শকাতর বর্ণনা রয়েছে
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় বগুড়ায় শিক্ষক সেলিম হোসেনকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ ১০১ জনের বিরুদ্ধে বগুরায় হত্যা মামলা করা হয়েছে। এছাড়া মামলায় অজ্ঞাত আরো ৩৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) রাতে নিহতের বাবা সেকেন্দার আলী বাদী হয়ে বগুড়া সদর থানায় মামলাটি করেন। মামলায় শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদেরকে হুকুমের আসামী করা হয়েছে।
মামলা করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বগুড়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ সাইহান ওলিউল্লাহ।
এর আগে গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা সরকার পতনের ১ দফা আন্দোলনের প্রথম দিন বগুড়া শহরের সাতমাথায় এলাকায় শিক্ষক সেলিম হোসেনকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়।
নিহত সেলিম হোসেনের বাড়ি বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার পীরব ইউনিয়নের পালিকান্দা গ্রামে। তিনি বগুড়া সদরের ইসলামপুরে হরিগাড়িতে বসবাস করতেন। তিনি কাহালু উপজেলার মুরইল লাইট হাউজ স্কুলের সহকারি শিক্ষক ছিলেন।
বগুড়া-৫ (ধুনট-শেরপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবুর রহমান মজনু এবং বগুড়া-৬ (সদর) আসনের সাবেক সাংসদ রাগেবুল আহসান রিপুসহ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক, শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, বগুড়া জেলা যুবলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক দুই সভাপতি ও সাবেক দুই সাধারণ সম্পাদক, শহর আওয়ায়ী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক, বগুড়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রির সভাপতি এবং জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ মাসুদুর রহমানসহ চেম্বারের সহসভাপতি এবং সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে এ মামলায় আসামী করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, শেখ হাসিনা এবং ওবায়দুল কাদেরের হুকুমে গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে বেলা তিনটায় বগুড়া শহরের সাতমাথা স্টেশন সড়কে আইএফআইসি ব্যাংকের সামনে আওয়ামী লীগের সাবেক দুই সাংসদসহ সাত নেতার নেতৃত্বে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালানোর পাশাপাশি ককটেল ও পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ করা হয়। এ সময় শিক্ষক সেলিম হোসেন রক্তাক্ত হন। বগুড়া পৌরসভার কাউন্সিলর আবদুল মতিন সরকার ও আমিনুল ইসলাম তাকে রামদা দিয়ে কুপিয়ে এবং কাউন্সিলর আরিফুর রহমান হকিস্টিক দিয়ে পিটিয়ে তাকে জখম করেন। পরে অন্য হামলাকারীরা অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে চলে যায়।
মামলায় আইনি সহায়তাকারী আইনজীবী ও বগুড়া জেলা বিএনপির সহসভাপতি আবদুল বাসেদ বলেন, "ছাত্র-জনতার শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ায় শেখ হাসিনা এবং ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশে তাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ কারণে এই দুজনকে হত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে আসামি করা হয়েছে।"