সরবরাহ সংকটে কাঁচামরিচের দাম কেজিতে বাড়ল ৮০ টাকা
সরবরাহ সংকটে রাজধানীতে সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ৮০ টাকা বেড়ে কাঁচামরিচের দাম এখন ৩২০ টাকায় দাঁড়িয়েছে। একইসঙ্গে বিভিন্ন সবজির দামও বেড়েছে কেজিপ্রতি সর্বনিম্ন ৫ টাকা।
শুক্রবার (১৬ আগস্ট) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মগবাজার, মালিবাগ বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, চাহিদার চেয়ে বাজারে কাঁচামরিচের সরবরাহ কম। তাদের বেশি দামে কিনতে হচ্ছে বিধায় দাম বেড়ে গেছে প্রতিদিনের রান্নার এই আবশ্যকীয় অনুষঙ্গের।
কারওয়ান বাজারের কাঁচামরিচ বিক্রেতারা হাবিবুর রহমান বাচ্চু বলেন, "গত সপ্তাহের চেয়ে পাইকারিতে ৮০ টাকা বেশি দিয়ে ২৭৫ টাকা দিয়ে কিনেছি। ফলে আমরা ৩০০ টাকা কেজি বিক্রি করছি।"
তিনি বলেন, "বাজারে এখন দেশি মরিচ কম। যে কাঁচা মরিচ পাওয়া যায় সেগুলো ৮০ শতাংশ ভারতীয়। দু দিন ধরে আমদানিও কম। শুক্রবারে আমাদানি হয়নি। তাই কালকে দাম আরও বাড়তে পারে।"
এদিকে, মগবাজারে প্রতিকেজি কাঁচামরিচ ৩২০ টাকা বিক্রি হতে দেখা গেছে।
জুলাই মাসে আন্দোলন, অবরোধ ও কারফিউ পরিস্থিতিতে মরিচের দাম ৩৫০ টাকা ছাড়ায়— যা চলতি আগস্ট মাসের শুরুতে কমে আসে। সপ্তাহ না ঘুরতেই সেই দাম এখন আবারও বেড়েছে।
এদিকে, গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর কমেছে সবজি, ডিম ও মুরগির দাম। ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ২০ টাকা কমে ১৭০ টাকা হয়েছে। এখনও একই দামে বিক্রি হচ্ছে মুরগি।
তবে সবজির দাম সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ৫ টাকা করে বেড়েছে।
মগবাজারের সবজি বিক্রেতা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ঢেঁড়স ও পোটল, উভয়ই ৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতিটি সবজিতেই কেজিতেই সর্বনিম্ন ৫ টাকা বেড়েছে।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সহসভাপতি এসএম নাজের হোসেন বলেন, এখন চাঁদাবাজি নেই; দাম বরং কমার কথা।
"কিন্তু মিলগুলো সবসময় রাজনৈতিক অস্থিরতাকে কাজে লাগিয়ে অতিরিক্ত মুনাফা করায় ব্যস্ত থাকে। গত এক-দেড় মাস যেহেতু অস্থিরতা ছিল, তারা এ সুযোগকে কাজে লাগিয়েছে। এটা অপ্রত্যাশিত। নতুন সরকারের উচিত কঠোরভাবে মনিটরিং করা," যোগ করেন তিনি।
চালের বাজার এখনোও চড়া
রাজনৈতিক অস্থিরতাকে কেন্দ্র করে বৃদ্ধি পেয়েছে চালের দাম, শুক্রবার পর্যন্ত চালের বাজার চড়াই দেখা গেছে।
চাল ব্যবসায়ী মোহম্মদ রাহাত বলেন, "ভালো মানের চাল ৬৫ টাকা কেজির নিচে কেনাই যায় না। এখন যে চাল ৫৫ টাকা দিয়ে কেনা হয়, সেটার ভাত নরম হয়ে যায়। এক বেলা খাবার পর সেই ভাত পরের বেলায় আর খাওয়া যায় না, নষ্ট হয়ে যায়। আমরা চাই অন্তত পক্ষে ৫০ টাকায় যেন ভালো মানের চাল পাওয়া যায়।"
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে চালের চড়া দাম এখনো একই অবস্থায় রয়েছে। বাজারে মিনিকেট ৭০ থেকে ৭২ টাকা, নাজিরশাইল ৭০ থেকে ৭৫ টাকা, পাইজাম ৫৮ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে— যা আগের চেয়ে কেজিপ্রতি ৪ থেকে ৫ টাকা করে বাড়তি। মোটা চাল স্বর্ণা বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৫৬ টাকায়।