সাম্প্রতিক গণহত্যার বিষয়ে আন্তর্জাতিকভাবে বিশ্বাসযোগ্য তদন্তের আশ্বাস পররাষ্ট্র উপদেষ্টার
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বাংলাদেশের সাম্প্রতিক গণহত্যার একটি নিরপেক্ষ ও আন্তর্জাতিকভাবে বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত পরিচালনা এবং এতে যথাযথ বিচারিক প্রক্রিয়া অনুসরণ নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
ক্যামেরুনের রাজধানী ইয়াউন্দে অনুষ্ঠিত ওআইসি'র ৫০তম পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের কাউন্সিলে (সিএফএম) বাংলাদেশের ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দ্বিতীয় বিপ্লবের ঘটনাগুলো তুলে ধরতে গিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৯-৩০ আগস্ট ক্যামেরুনের রাজধানী ইয়াউন্দে অনুষ্ঠিত সিএফএম-এ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বাংলাদেশের দুই সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন।
তৌহিদ হোসেন জোরপূর্বক গুম হওয়া সকল ঘটনা ও ব্যক্তির সুরক্ষা সংক্রান্ত জাতিসংঘ কনভেনশনে বাংলাদেশের যোগদানের বিষয়ে বৈঠকে উপস্থিত ওআইসি সদস্য দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের অবহিত করেন।
তিনি ওআইসি'র সাথে বাংলাদেশের অব্যাহত সম্পৃক্ততা ও ফিলিস্তিনের জন্য শান্তি প্রতিষ্ঠা, ইসলামফোবিয়া, মুসলমানদের বিরুদ্ধে ঘৃণা-অপরাধের মতো ঘটনাগুলোর নিন্দা জানানোর দৃঢ় প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, বাংলাদেশের পরিবহন ও যোগাযোগ অবকাঠামো শক্তিশালী করে ঢাকা ওআইসি সদস্য দেশগুলোর সঙ্গে আরও বাণিজ্য ও বিনিয়োগে যুক্ত হতে আগ্রহী।
এ বছর 'আন্তঃওআইসি পরিবহন ও যোগাযোগ অবকাঠামো' প্রতিপাদ্য নিয়ে সিএফএম অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও নিরাপত্তা বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়।
মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের ওপর ক্রমাগত চাপ সৃষ্টি অব্যাহত রাখতে সিএফএম-এ 'মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিম সম্প্রদায়ের পরিস্থিতি' নামে একটি প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ সিএফএমের সাইডলাইনে বাহরাইন, সৌদি আরব, তুরস্ক ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সাথেও বৈঠক করেছেন।
এদিকে ২৯শে আগস্ট সিএফএম-এ রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের জবাবদিহিতার বিষয়ে ওআইসি'র অ্যাডহক মন্ত্রী পর্যায়ের কমিটির একটি উন্মুক্ত সভাও অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় পররাষ্ট্র উপদেষ্টা রাখাইন রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরেন, এবং সমস্যার দ্রুত সমাধানের জন্য মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ অব্যাহত রাখার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে আলাদা করার চেষ্টা হচ্ছে। আপনারা সবাই সজাগ থাকবেন। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে বিজয় অর্জিত হয়েছে, সেই বিজয়কে নস্যাৎ করার চেষ্টা চলছে। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে অর্জিত বিজয়কে নস্যাৎ হতে দেওয়া যাবে না।
আজ শনিবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে কুমিল্লার লালমাই উপজেলার ছোট শরীফ এলাকায় বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করতে এসে এসব কথা বলেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, 'আজকে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় বিএনপির ভাবমূর্তি নষ্ট হওয়ার মতো খবর প্রকাশ হচ্ছে। এসব কর্মকাণ্ডের সঙ্গে বিএনপির কোনো সম্পর্ক নেই। চাঁদাবাজদের সঙ্গে বিএনপির কোনো সম্পর্ক নেই। আপনাদের এলাকায় কেউ যদি বিএনপির নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি করতে আসে তবে তাকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেবেন।'
তিনি বলেন, 'নতুন যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, সেটির মাত্র ২০-২২ দিন হলো। আমরা তাদের সময় দিতে চাই। আমরা সরকারের সঙ্গে আলোচনা করেছি, যাতে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তারা তৈরি করতে পারে। নতুন সরকারকে সময় দিতে হবে।'
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, 'আমরা যদি ভালো একটা নির্বাচন করতে পারি, যদি জনগণের মনোনীত সরকারের হাতে ক্ষমতা তুলে দেওয়া যায়, তবেই জনগণের আস্থা ফিরবে। তাই আমরা এই সরকারকে বলেছি, একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করে জনগণের মনোনীত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।'
এসময় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরী, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক সেলিম ভূঁইয়া, বিএনপির ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাজী আমিনুর রশিদ ইয়াছিনসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।