আজ থেকে খুলছে আশুলিয়ার তৈরি পোশাক কারখানা
আজ শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) থেকে খুলছে আশুলিয়ার তৈরি পোশাক কারখানাগুলো। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, শ্রমিকনেতা ও স্থানীয় রাজনীতিবিদদের কাছ থেকে আশ্বাস পাওয়ার পর তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর নেতারা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
গত কদিনে আশুলিয়ার তৈরি পোশাক কারখানাগুলোতে যে অস্থিরতার ঘটনা ঘটেছে, তা নিয়ে আজ শুক্রবার বিজিএমইএর কার্যালয়ে দুই দফায় শিল্পমালিক, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা, বিভিন্ন সংগঠনের শ্রমিক নেতা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে বৈঠক হয়।
বিজিএমইএর সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে বৈঠকে জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আবদুল্লাহ হিল রাকিব, শ্রমিক নেতা মন্টু ঘোষ, নাজমা আক্তার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বিজিএমইএর জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আবদুল্লাহ হিল রাকিব টিবিএসকে বলেন, 'সব পক্ষই কারখানা সচল রাখার পক্ষে মত দিয়েছে। তারা বলেছে, শিল্প বন্ধ রাখা কোনোভাবে কাম্য নয়। উৎপাদন না হলে দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ব্যবসাও অন্যত্র চলে যাওয়ার শঙ্কা থাকে।'
তিনি আরও বলেন, শ্রমিক নেতারা সাধারণ শ্রমিকদের কাজে ফিরতে আহ্বান জানিয়েছেন। কোনো দাবিদাওয়া থাকলে মালিকপক্ষকে লিখিত দেওয়ার কথা বলেছেন। অন্যদিকে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা বর্তমান পরিস্থিতিতে ঝুট ব্যবসা থেকে বিরত থাকার আশ্বাস দিয়েছেন।
আল মুসলিম ও নাসা গ্রুপের শ্রমিকদের মধ্যে বেতন-ভাতা নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে। এই দুই গ্রুপের শ্রমিকেরা দাবি আদায়ে একাধিক দিন কর্মবিরতিও পালন করেছেন। এ বিষয়ে আবদুল্লাহ হিল রাকিব বলেন, 'আমরা উভয় গ্রুপের মালিকদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা শ্রমিকদের পাওনা বুঝিয়ে দেওয়ার বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছেন।'
তিনি আরও বলেন, আজ রাতেও সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে যৌথবাহিনী অভিযান পরিচালনা করবে। আগের রাতের অভিযানে শ্রমিক অস্থিরতায় উসকানিদান ও জড়িত থাকার অভিযোগে বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়।
উল্লেখ্য, আশুলিয়ায় পোশাক কারখানায় নারী-পুরুষের সমানুপাতিক হারে নিয়োগসহ বিভিন্ন দাবিতে নবীনগর-চন্দ্রা ও বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর সড়ক অবরোধ করে সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) বিক্ষোভ করেন চাকরিপ্রত্যাশী শ্রমিকরা। একপর্যায়ে আন্দোলনরত শ্রমিকরা নবীনগর-চন্দ্রা ও বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে ব্যারিকেড তৈরি করে অবরোধ করেন ও বিভিন্ন কারখানা লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন।
এমন পরিস্থিতিতে বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর সড়কের বাইপাইল থেকে জিরাবো পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে অবস্থিত অন্তত ৩০টি কারখানা কর্তৃপক্ষ তাদের কারখানায় ছুটি ঘোষণা করতে বাধ্য হয়।
পরবর্তীতে সেদিন সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে যৌথ অভিযান পরিচালনার কথা সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন বিজিএমইএ সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম।
বৈঠকে বিশৃঙ্খলায় জড়িত বহিরাগতদের আইনের আওতায় আনার নির্দেশনা দিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা পুলিশ, শিল্প পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন। এছাড়া অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) থেকে সব কারখানা চালু রাখতে মালিকদের অনুরোধ জানান তিনি।