পিলখানা হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত ঘটনা মানুষ এখনো জানে না: সাবেক সেনাপ্রধান মঈন ইউ আহমেদ
সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল মঈন ইউ আহমেদ (অব.), যিনি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় বসবাস করছেন, তার ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করা ২৯ মিনিটের একটি ভিডিওতে পিলখানা গণহত্যার বর্ণনা দিয়েছেন।
পিলখানা হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত ঘটনা জনগণের কাছে অজানাই রয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল মঈন ইউ আহমেদ (অব.)।
ইউটিউবে প্রকাশিত একটি ভিডিওতে তিনি বলেন, "গত ১৫ বছরে শুধু সাবেক সরকারের বর্ণনাই শোনা গেছে।"
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় তৎকালীন বিডিআর সদর দপ্তরে একটি নৃশংস গণহত্যা সংঘটিত হয়। এতে আধা-সামরিক সীমান্ত বাহিনীতে নিযুক্ত ৫৭ সেনা কর্মকর্তা সহ ৭৪ জন নিহত হয়।
মঈন উ আহমেদ তখন সেনাপ্রধান ছিলেন এবং বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় বসবাস করছেন, নিজের ইউটিউব চ্যানেলে ঐ হত্যাকাণ্ড নিয়ে নিজের ভাষ্য তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এসব বিষয়ে তিনি আলোচনা করতে পারেননি।
তিনি জানান, তিনি ভিডিওটি তৈরি করেছেন কারণ তিনি বিশ্বাস করেন– সেই সময়ে সেনাবাহিনী কী ভূমিকা পালন করেছিল এবং আসলে কী ঘটেছিল তা জনগণের জানা উচিত।
'সম্ভাব্য বিদ্রোহের কথা জানতেন না বিডিআর মহাপরিচালক'
২৫ ফেব্রুয়ারি সকালের কথা স্মরণ করে মঈন বলেন, কিছু অব্যবহৃত অস্ত্র বিডিআরে স্থানান্তরের বিষয়ে তিনি বিডিআরের তৎকালীন মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদের সঙ্গে কথা বলেন।
পরে হত্যাকাণ্ডে নিহত শাকিল অস্ত্র গ্রহণ করতে রাজি হয়। দুজনের মধ্যে টেলিফোনে হওয়া কথোপকথনের কিছু অংশ তুলে ধরে মঈন বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন যে শাকিল তখন পর্যন্ত কোনও সম্ভাব্য বিদ্রোহ সম্পর্কে অবগত ছিলেন না।
মঈন জানান, সকাল সাড়ে ৯টার দিকে একটি বৈঠকে তিনি প্রথম পিলখানায় কিছু একটা ঘটছে বলে জানতে পারেন।
"আমার প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি কর্নেল ফিরোজ মিটিং রুমে ঢুকে আমাকে কানে কানে বলেন, পিলখানায় গন্ডগোল হচ্ছে। আপনার দিকনির্দেশনা প্রয়োজন।"
মঈন ইউ আহমেদ জানান, প্রধানমন্ত্রী ও বিডিআরের মহাপরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করার জন্য তিনি তাৎক্ষণিকভাবে বৈঠক স্থগিত করেন।
কিন্তু তাদের ফোন ক্রমাগত ব্যস্ত ছিল। সামরিক গোয়েন্দারা তখন তাকে পরিস্থিতি সম্পর্কে জানায়। পরিস্থিতির গুরুত্ব অনুধাবন করে তিনি পরবর্তী নির্দেশের অপেক্ষা না করে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেন।
মঈন জানান, তিনি সেনাবাহিনীর ৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেডকে একটি অপারেশনের জন্য প্রস্তুত হওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন, যা "অপারেশন রিস্টোর অর্ডার" নামে অবিলম্বে শুরু হয়েছিল।
'বিডিআর ডিজিকে প্রথম কল'
সকাল ৯টা ৪৭ মিনিটে অবশেষে তিনি ফোনে বিডিআরের মহাপরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন বলে মঈন জানান। ডিজি সংক্ষেপে একটি ভয়ংকর পরিস্থিতির বর্ণনা দেন।
ফোন কলে বিডিআর ডিজির কথা স্মরণ করে মঈন বলেন, "একটি বৈঠক চলাকালীন দুই সশস্ত্র সৈন্য দরবার হলে প্রবেশ করে। একজন ডিজির পিছনে দাঁড়িয়েছিলেন এবং অন্যজন হলের মধ্য দিয়ে হেঁটে বাইরে চলে যান। কিছুক্ষণ পরেই বাইরে থেকে গুলির শব্দ শোনা যায়। হলের উপস্থিত সৈন্যরা হৈচৈ শুরু করে, উঠে দাঁড়ায়। এবং গুলির শব্দ শোনার সাথে সাথে হল ত্যাগ করে।"
সাবেক সেনাপ্রধান বিডিআরের ডিজিকে উদ্ধৃত করে বলেন, এটি তার (ডিজি শাকিল) কাছে একটি পরিকল্পনার অংশ বলে মনে হয়েছিল এবং সবকিছু পরিকল্পনা অনুসারেই ঘটছিল।
ভিডিওতে তিনি বলেন, "অনেকেই মনে করেন, বিডিআরের ডিজি আমাকে সাহায্যের জন্য ডেকেছেন। এটা সত্য নয়। আমি বিডিআরের মহাপরিচালককে ফোন করে তাকে আমরা কী ব্যবস্থা নিচ্ছি সে সম্পর্কে অবহিত করেছি।"
'হাসিনার সঙ্গে প্রথম কল'
মঈন জানান, অবশেষে সকাল ৯টা ৫৪ মিনিটে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করতে পারেন তিনি।
"তখন তিনি (হাসিনা) ইতোমধ্যেই বিডিআর বিদ্রোহ সম্পর্কে অনেক তথ্য পেয়েছিলেন। আমি যখন তাকে অপারেশন সম্পর্কে অবহিত করি তখন তিনি জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ব্রিগেড প্রস্তুত করতে কতক্ষণ লাগবে। আমি বলেছিলাম সাধারণত ছয় ঘণ্টা লাগে, কিন্তু আমরা তাড়াহুড়ো করলে দুই ঘণ্টার মধ্যে প্রস্তুত হতে পারবে," মঈন বলেন।
তিনি বলেন, হাসিনা ৪৬ ব্রিগেডকে পিলখানায় যাওয়ার অনুমতি দিয়েছিলেন। তিনি উল্লেখ করেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাকিমের নেতৃত্বে ১০ জন অফিসার ও ৬৫৫ জন সৈন্য নিয়ে ব্রিগেড এক ঘণ্টার মধ্যে তাদের যাত্রা শুরু করে।
তিনি বলেন, সকাল সাড়ে ১০টার মধ্যে ব্রিগেডের অগ্রবর্তী দল জাহাঙ্গীর গেট অতিক্রম করে।
মঈন বলেন, বিদ্রোহীরা ততক্ষণে হামলা প্রতিহত করার জন্য বিডিআর গেটের সামনে বিভিন্ন অস্ত্র মজুত করেছিল।
তিনি বলেন, ৪৬ ব্রিগেডের প্রথম গাড়িটি সকাল ১১টায় পিলখানার প্রধান ফটকের কাছে এলে বিদ্রোহীরা একটি পিকআপ ট্রাক লক্ষ্য করে রকেট হামলা চালায়। এর ফলে চালক তাৎক্ষণিকভাবে মারা যান এবং চালকের পাশে বসা আরেকজন গুরুতর আহত হন।
সাবেক সেনাপ্রধান বলেন, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তার কার্যালয় থেকে বিডিআর মহাপরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা ব্যর্থ হয়।
"সম্ভবত ততক্ষণে তাকে হত্যা করা হয়েছে," মঈন বলেন।
'র্যাবকে পিলখানায় ঢুকতে দিলে হতাহতের সংখ্যা কমতে পারত'
লেফটেন্যান্ট কর্নেল শামসের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে অনেক অফিসারকে গুলি করে হত্যা করা হয়। সকাল ১১টার পর সেনা ব্রিগেড সেখানে পৌঁছায়।
মঈন ইউ আহমেদ জানান, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ক্যাপ্টেন শফিক ও তার ৩৫৫ জন র্যাব সদস্যের দল সকাল ১০টার আগেই পিলখানায় পৌঁছায়।
"সে সময় ক্যাপ্টেন শফিক তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে পিলখানায় প্রবেশের অনুমতি চেয়েছিলেন, কিন্তু তা দেওয়া হয়নি," তিনি ভিডিওতে বলেন।
মঈন বিশ্বাস করেন, ক্যাপ্টেন শফিককে অনুমতি দিলে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সহজ হতো এবং সম্ভবত এ ধরনের বড় ক্ষয়ক্ষতি প্রতিরোধ করা যেত।
'সেনাবাহিনীকে সরে যেতে বলেছিল সরকার'
সাবেক সেনাপ্রধান আরও বলেন, সকাল ১১.৪৫ এর দিকে পিএসও এএফডি (প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ) তাকে জানান, সরকার রাজনৈতিকভাবে সমস্যাটি সমাধান করার চেষ্টা করছে।
পিএসও মঈনকে জানিয়েছিলেন, বিদ্রোহীরা আলোচনা শুরুর আগে সেনাবাহিনীকে এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার দাবি জানিয়েছে।
ফলে, সরকার সেনাবাহিনীর সদস্যদের দৃষ্টির আড়ালে চলে যেতে বলে। অন্তত দুই কিলোমিটার উত্তরে চলে যাওয়ার জন্য বলা হয়।
মঈন বলেন, সমঝোতা না হলে তখন সামরিক অভিযান পরিচালনা করা হবে বলে সরকার জানিয়েছিল।
'যমুনায় যেতে বলা হলো'
মঈন বলেন, পিএসও তাকে জরুরিভাবে যমুনায় (২০০৯ সালের জানুয়ারিতে ক্ষমতা গ্রহণের পর গণভবন প্রস্তুত না থাকায় শেখ হাসিনা সরকারি বাসভবন হিসেবে ব্যবহার করতেন) গিয়ে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে বলেছিল। তাই তিনি সেখানে যান।
সাবেক সেনাপ্রধান বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক ও মির্জা আজম দুপুর ১টার দিকে সাদা পতাকা নিয়ে পিলখানায় গিয়ে আলোচনা করেন।
এদিকে, সরকার পিলখানার প্রধান ফটকে সেনাবাহিনীকে থাকার নির্দেশ দেয় এবং র্যাব ও পুলিশ আরও দুটি এলাকা কভার করবে বলে জানায়।
ডেইরি গেট এলাকা অরক্ষিত ছিল।
মঈন বলেন, যমুনায় গিয়ে তিনি অনেক লোককে দেখতে পান যাদের কোনো কাজ ছিল না; কৌতূহলবশত এসেছিলেন।
মন্ত্রিসভার বৈঠক চললেও কোনো সিদ্ধান্ত আসছিল না। সে সময় পিলখানা থেকে পালিয়ে আসা একজন অফিসারের কাছ থেকে তিনি জানতে পারেন, সেখানে অনেককে হত্যা করা হয়েছে।
মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর শেখ হাসিনা তিন বাহিনীর প্রধানদের নিয়ে ছোট একটি বৈঠক ডাকেন।
মঈন জানান, বিমান বাহিনী ও নৌবাহিনীর প্রধানরাও তার যাওয়ার দেড় ঘণ্টা পর যমুনায় আসেন।
'সেনা হস্তক্ষেপের চেয়ে রাজনৈতিক প্রচেষ্টাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে'
শেখ হাসিনা তাদের জানান, সমস্যা সমাধানে রাজনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। শেখ ফজলে নূর তাপস, জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং মির্জা আজম একদল বিদ্রোহীকে নিয়ে যমুনায় আসছিলেন তারা (বিদ্রোহীরা) সাধারণ ক্ষমা চায়।
বিদ্রোহীদের উদ্দেশ্যে তিন বাহিনীর প্রধানের কিছু বলার থাকলে তা বলারও নির্দেশ দেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী।
মঈন বলেন, "তখন আমি তাকে [হাসিনাকে] বলেছিলাম, 'ইতোমধ্যে অনেককে হত্যা করা হয়েছে। তাদের দাবি মেনে নেওয়া যায় না। আপনি তাদের বলবেন, প্রথমত, অফিসার হত্যা এই মুহূর্তে বন্ধ করতে হবে। দ্বিতীয়ত, যাঁদের আটক করা হয়েছে, তাঁদের সবাইকে এখনই মুক্তি দিতে হবে। তৃতীয়ত, অস্ত্রসহ বিদ্রোহীদের আত্মসমর্পণ করতে হবে এবং চতুর্থত, সাধারণ ক্ষমা দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।'"
সাবেক সেনাপ্রধান বলেন, শেখ হাসিনা শেষ পর্যন্ত বিদ্রোহীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। শেখ ফজলে নূর তাপস, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও মির্জা আজম বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন, প্রথম পর্যায়ে আলোচনা তার (মইন) জানা নেই কারণ পরের পর্যায়ে তাকে ডাকা হয়। সেখানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী হাসিনা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে বিদ্রোহীদের আত্মসমর্পণের জন্য বলেন।
বিদ্রোহীরা সন্ধ্যা ৬:৩৭ মিনিটে পিলখানার উদ্দেশ্যে যমুনা ত্যাগ করে এবং সেখানে পৌঁছে তারা ঘোষণা করে, সাধারণ ক্ষমার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত তারা আত্মসমর্পণ করবে না।
তারা গোলাগুলি শুরু করে এবং পিলখানায় অফিসারদের খোঁজ করতে থাকে।
মঈন জানান, মধ্যরাতে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন, শেখ ফজলে নূর তাপস ও তৎকালীন আইজিপি (পুলিশ মহাপরিদর্শক) আলোচনার জন্য পিলখানায় যান।
অবশেষে বিদ্রোহীরা কিছু অস্ত্র সমর্পণ করে এবং আটটি পরিবারকে ছেড়ে দেয়, যার মধ্যে মাত্র তিনটি পরিবার সেনা কর্মকর্তাদের ছিল।
মঈন বলেন, সাহারা খাতুন জানতেন যে অফিসারদের বন্দী করা হয়েছে। কিন্তু তাদের মুক্তি বা তাদের সম্পর্কে আরও খোঁজখবর নেওয়ার কোনো উদ্যোগ নেননি তিনি।
'সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপের খবরে বিদ্রোহীদের আত্মসমর্পণ'
মঈন বলেন, "২৬ ফেব্রুয়ারি বিদ্রোহীরা আবার গুলি চালাতে শুরু করে। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হাসিনা আমাকে ডেকে জানান, বিদ্রোহীরা আত্মসমর্পণ না করলে সামরিক অভিযান চালানো হবে। আমি সাভার থেকে ট্যাংক আনার অনুমতি চেয়েছিলাম, যা মঞ্জুর করা হয়েছিল। আমি সঙ্গে সঙ্গে ট্যাংক মোতায়েন করার নির্দেশ দেই এবং অন্যান্য প্রস্তুতিও নেওয়া হয়।"
মঈন বলেন, সেনাবাহিনীর প্রস্তুতি এবং ট্যাংক আসার কথা শুনে বিদ্রোহীরা নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করতে রাজি হয়। শেখ হাসিনা দুপুর ২টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন, বিদ্রোহীদের আত্মসমর্পণের একটি সময়সীমা নির্ধারণ করেন। সেই পরামর্শ তিনি (মঈন) দিয়েছিলেন বলে জানান।
"সেনাবাহিনীর আক্রমণের প্রস্তুতি দেখে, বিদ্রোহীরা আলোচনা ও আত্মসমর্পণ করতে উদ্গ্রীব হয়ে ওঠে এবং একটি সাদা পতাকা উত্তোলন করে। রাতে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি দল পিলখানায় প্রবেশ করে এবং বিদ্রোহীরা আত্মসমর্পণ করে। এভাবে .৩৩ ঘণ্টার বিদ্রোহের সমাপ্তি ঘটে, যে বিদ্রোহে ৫৭ জন সেনা অফিসার, যারা বাহিনীর মেরুদণ্ড ছিল তারা প্রাণ হারায়," সাবেক সেনাপ্রধান ভিডিওতে বলেন।
২৯ মিনিটের ভিডিওতে মঈন বিডিআর বিদ্রোহের তদন্ত নিয়েও কথাও বলেন।
'সেনাবাহিনীর তদন্তে কোনো সরকারি সহায়তা ছিল না'
মঈন বলেন, "আমি যখন বিডিআর বিদ্রোহের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলা, তখন আমাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, সরকার ইতোমধ্যে যেহেতু তদন্ত চালাচ্ছে তখন আমাদের কেন আরেকটি তদন্ত দরকার।"
জবাবে মঈন বলেন, কেন এত সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করা হলো তা খুঁজে বের করা দরকার।
এরপরে, সরকার বিষয়টি নিয়ে আর আলোচনা করেনি বা তদন্তের জন্য উল্লেখযোগ্য সহায়তা দেয়নি।
সেনাবাহিনীর তদন্ত কমিটির নেতৃত্বে ছিলেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা)।
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী তদন্ত কমিটি পুনর্গঠন করে জড়িতদের চিহ্নিত করতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেন মঈন। তিনি আরও বলেন, নতুন সরকার গঠনের পর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন তিনি।
ভিডিও চলাকালে মঈন আরও বলেন, তিনি বিডিআর হত্যাকাণ্ড নিয়ে একটি বই লিখেছেন যা শীঘ্রই প্রকাশিত হবে।