শ্রমিক অসন্তোষের আড়ালে পোশাক খাতকে ধ্বংসের চক্রান্ত চলছে: পোশাক খাতের উদ্যোক্তারা
দেশের পোশাক শিল্পে চলমান অস্থিরতা কোনো ধরনের শ্রমিক আন্দোলন বা শ্রমিক অসন্তোষের কারণে হচ্ছে না, বরং পরিকল্পিতভাবে এই শিল্প ধ্বংসের জন্য এটি করানো হচ্ছে বলে দাবি করেছেন তৈরি পোশাক খাতের উদ্যোক্তারা।
তারা বলছেন, শ্রমিকদের সব দাবি মেনে নেওয়ার পরেও তাদের আন্দোলন চলমান থাকায় বোঝা যায়, এর পেছনে মূলত তৃতীয়পক্ষই কলকাঠি নাড়ছে।
শনিবার (৫ অক্টোবর) রাজধানীর গলফ গার্ডেনে আয়োজিত 'পোশাক শিল্পের চলমান অস্থিরতা দূরীকরণে করণীয়' শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বিজিএমইএর সাধারণ সদস্যদের সঙ্গে উদ্যোক্তারা এসব কথা বলেন।
বিজিএমইএর নির্বাচনে অংশ নেওয়া মালিকদের প্যানেল, ফোরাম, এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন ফোরামের সভাপতি এম এ সালাম। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন পোশাক খাতের শিল্প উদ্যোক্তারা।
স্বাগত বক্তব্যে ডাকসুর সাবেক সদস্য, ফোরাম সাধারণ সম্পাদক এবং নেক্সাস গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুর রশিদ হোসাইনী বলেন, "পাশের দেশের স্বার্থ রক্ষায় যারা নিয়োজিত- তারা গার্মেন্ট শিল্পে অরাজকতা সৃষ্টি করে শ্রমিক অসন্তোষের নামে দেশের অর্থনীতিকে ধূলিসাৎ করতে চায়।"
তিনি বলেন, যারা শ্রমিকের টাকা পরিশোধ করেন না, টাকা পাচার করেন, তাদের কারণে বেকায়দায় থাকেন সত্যিকারের মালিকরা।
বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক লুৎফে মাওলা আইয়ুব বলেন, "আমাদের বিরুদ্ধে যেভাবে অপপ্রচার হচ্ছে, কিন্তু সলিউশন (সমাধান) নিয়ে কেউ কথা বলছেন না।"
তিনি বলেন, "একজন উদ্যোক্তা কারখানা বন্ধ করবেন, বকেয়া দিয়ে দিচ্ছেন, সার্ভিস বেনিফিট দিতে দেরি হচ্ছে, এজন্য সাভার রোডে দুই দিন ৩০ কি.মি যানজট তৈরি হলো। আর্মির লোক এসে কথা বলে চলে যায়, পুলিশ আসে না। ১৮ বছর ধরে কারখানা চালানোর পর সেই উদ্যোক্তাকে আটক করা হলে এর চেয়ে দু:খজনক আর কিছু হতে পারে না।"
বিজিএমইএর সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি ফয়সাল সামাদ বলেন, "বিগত ৩০ দিন ধরে আশুলিয়ায় যেসব কারখানা আক্রান্ত হয়েছে, তার মালিকগণ আজ হতাশ। আজ আপনার কারখানায় সমস্যা, কাল যে আমার সমস্যা হবে না এর গ্যারান্টি নেই। তাই সবাইকে সমাধানের উপায় নিয়ে কথা বলতে হবে।"
রাইজিং গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদ হাসান খান বাবু বলেন, "এই মুহূর্তে আশুলিয়ায় যা হচ্ছে, সেটি শ্রম সংক্রান্ত কোনো সমস্যা নয়, এটি আইনশৃঙ্খলার সমস্যা।"
"মালিক-শ্রমিক যেই আইন ভঙ্গ করুক, তাকে আইনের আওতায় আনার দাবি অনেকদিন ধরে জানিয়ে আসছি। আইন ভঙ্গের জন্য জেল হলে এ সমস্যার সমাধান হয়ে যেত। অতীতেও এ ধরনের সমস্যা ছিল। তাহলে এখন কেন এটার সমাধান হবে না? এটা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব, তারা দায়িত্ব পালন করছেন না বা করতে পারছেন না," যোগ করেন মাহমুদ হাসান খান বাবু।