শেখ হাসিনাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে সাবেক সেনা কর্মকর্তার অভিযোগ
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামালসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনে অভিযোগ করেছেন সাবেক সেনা কর্মকর্তা লে. কর্নেল (অব.) হাসিনুর রহমান। বুধবার (৯ অক্টোবর) দুপুরে এ অভিযোগ দাখিল করা হয়।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, 'গুমের ঘটনার বিচার চেয়ে ১১ জনের নাম উল্লেখ করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দাখিল করেছি।'
তিনি দাবি করেন, তাকে দুই দফায় গুম করা হয়। ২০১৮ সালের ৮ আগস্ট থেকে এক বছর ছয় মাস ১৪ দিন আয়নাঘরে গুম ছিলেন তিনি। আয়নাঘরে অমানুষিক ও বর্বরোচিত নির্যাতনের শিকার হন তিনি। সেখানে তিনি গুমের শিকার সেনা কর্মকর্তা আজমিসহ আরও অনেককে দেখতে পান।
হাসিনুর বলেন, 'গুমের ঘটনায় ন্যায়বিচার, ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন চেয়েছি।'
বীরপ্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত হাসিনুর রহমান বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের সাবেক কর্মকর্তা। সেনাবাহিনী থেকে বরখাস্ত হওয়ার সময় তিনি লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদে ছিলেন।
এর আগে চাকরিতে থাকা অবস্থায়ও তাকে দীর্ঘদিন গুম করে রাখা হয়েছিল বলে দাবি করেন তিনি।
এসময় তিনি বলেন, 'শেখ হাসিনার তত্ত্বাবধানে একটি চক্র চরম অন্যায়ভাবে বেআইনি ও অমানবিক কার্যক্রম পরিচালনা করেছিল।'
যা তদন্তে বের হয়ে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
তিনি বলেন, 'সেনাবাহিনীতে চাকরি করা অবস্থায় ২০০৮ সালে তাকে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার সাথে কাজ করতে বলা হয়। তিনি তাতে অনিহা প্রকাশ করলে তাতে ক্ষুব্ধ হয়ে তার উপর নানা নির্যাতন শুরু হয়। ২০১২ সালে তাকে সেনাবাহিনী থেকেও বরখাস্ত করা হয়।'
তিনি আরও বলেন, 'পিলখানায় বিডিআর হত্যার ঘটনায় একজন সেনা কর্মকর্তা হিসেবে উচ্চবাচ্য ও প্রতিবাদ করাও তার ওপর পরিচালিত নির্যাতনের অন্যতম কারণ। চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ফজলে করিম চৌধুরীর একটি অনৈতিক প্রস্তাবে রাজি না হওয়াও তার ওপর নির্যাতনের কারণ ছিল।'
হাসিনুর বলেন, 'গুম নিয়ে মিডিয়ায় কথা বলায় তার বিরুদ্ধে ১০টির বেশি মামলা হয়। তিনি কারাগারে ছিলেন। খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার পরেও জেলখানায় তাকে ডিভিশন দেয়া হয়নি।'
তিনি বলেন, 'র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নে কর্মরত থাকা অবস্থায় জঙ্গিদের আটকে তার সাফল্যের কথা সকলে জানেন।'
জেলে আটক অবস্থায় তাকে জঙ্গি দিয়ে হত্যার অপচেষ্টা চালানো হয়েছিল উল্লেখ করে বলেন, 'নিষিদ্ধ ঘোষিত জেএমবি প্রধান শায়খ আব্দুর রহমানের ছেলে কারাবন্দী নাবিল তাকে হত্যা করা হবে বলে জানিয়েছিলেন। মহান আল্লাহর অশেষ কৃপায় তিনি প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন।'