লক্ষ্মীপুরে ছাত্র হত্যার আসামি সালাহ উদ্দিন সৌদি আরবে, দোয়া চেয়ে ফেসবুকে পোস্ট
লক্ষ্মীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে প্রকাশ্যে গুলি করে চার শিক্ষার্থীসহ ১২ জন হত্যার ঘটনায় করা মামলায় প্রধান অভিযুক্ত এ কে এম সালাহ উদ্দিন টিপু। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তিনি আত্মগোপনে ছিলেন। তবে আজ শনিবার (১২ অক্টোবর) বিকেল ৩টার দিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তিনি নিজের ছবি দিয়ে একটি পোস্ট করেছেন। যার ক্যাপশনে লিখেছেন 'দোয়ার দরখাস্ত'।
পোস্টটি করার পর তাতে আজ রাজ সাড়ে ৯টা পর্যন্ত ১১ হাজার মানুষ লাইক দিয়েছেন। কমেন্ট করেছেন ছয় হাজার ২০০ জন। পোস্টটি শেয়ার হয়েছে দেড় হাজার। কমেন্টে অনেকেই ৪ আগস্টের ঘটনার জন্য তার সমালোচনা করেছেন।
এ কে এম সালাহ উদ্দিন টিপু লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান এবং পৌরসভার সাবেক আলোচিত মেয়র প্রয়াত আবু তাহেরের ছেলে। ফেসবুক পোস্ট করার পরপরই লক্ষ্মীপুরের কয়েকজন সাংবাদিক তার সাথে যোগাযোগ করেছেন। এ সময় তিনি দুজন সাংবাদিকের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, তিনি বর্তমানে তিনি সৌদি আরবে আছেন। তবে কীভাবে তিনি বিদেশে পাড়ি দিলেন, সে বিষয়ে কিছু বলেননি।
লক্ষ্মীপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত সাদ আল আফনান ও সাব্বির হোসেন হত্যামামলার প্রধান আসামি ও পুলিশের ওপর হামলার মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি সালাহ উদ্দিন টিপু। অভিযোগ অনুযায়ী, তিনি ও তার সহযোগীরা গত ৪ আগস্ট আন্দোলন চলাকালে বাসার ছাদের ওপর থেকে টানা চার ঘণ্টা গুলি চালিয়ে শতাধিক ছাত্র-জনতাকে আহত করেন।
গত ৪ আগস্ট আন্দোলনে গিয়ে গুলিতে নিহত দালাল বাজার ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেনের বাবা আমির হোসেন বাদী হয়ে ১৪ আগস্ট থানায় হত্যামামলা করেন।
সাব্বিরের বাবা আমির হোসেন জানান, 'শিক্ষার্থীদের হত্যার সঙ্গে সালাহ উদ্দিন সরাসরি জড়িত। কিন্ত তিনি এখন ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে তার অবস্থান জানান দিচ্ছেন।'
সাব্বির ছাড়া নিহত অন্য শিক্ষার্থীরা হলেন লক্ষ্মীপুর ভিক্টোরিয়া কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী সাদ আল আফনান, লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী কাউছার হোসেন ও একই কলেজের ওসমান গণি। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও ৮ জন মারা যান এবং আহত হন শতাধিক।
লক্ষ্মীপুর জজ আদালতের আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মী নুর মোহাম্মদ বলেন, সালাহ উদ্দিন চার শিক্ষার্থী খুনের আসামি হয়েও দুই মাসে ধরা পড়েননি। তার গাড়িচালক মো. রাসেল অস্ত্র নিয়ে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করেছেন। তাকেও গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল মুন্নাফ বলেন, শিক্ষার্থী হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার ও হত্যাকাণ্ডের সময় ব্যবহৃত অস্ত্রগুলো উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সাক্ষীদের জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়েছে।