রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানার জামিন স্থগিত থাকবে: আপিল বিভাগ
২০১৩ সালে ঢাকার সাভারের বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন রানা প্লাজা ধসে হতাহতের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় ভবনের মালিক সোহেল রানাকে হাইকোর্টের দেওয়া ছয় মাসের জামিনের ওপর স্থগিতাদেশ বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ।
একইসঙ্গে, তার জামিন প্রশ্নে জারি করা রুল দুই মাসের মধ্যে হাইকোর্ট বিভাগে নিষ্পত্তি করতে বলা হয়েছে।
রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে সোমবার (২৮ অক্টোবর) আপিল বিভাগের জেষ্ঠ্য বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল আরশাদুর রউফ। সোহেল রানার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শিশির মনির।
রানার আইনজীবী শিশির মনির সাংবাদিকদের বলেন, "অন্য সকল মামলায় রানা জামিনে রয়েছেন, এই মামলায় জামিন স্থগিত থাকায় কারাগার থেকে অপাতত বের হওয়ার সুযোগ নেই। হাইকোর্টের জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে রায়ের ওপর নির্ভর করছে রানার কারামুক্তির বিষয়টি।"
এর আগে, ১ অক্টোবর বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খান ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ সোহেল রানাকে জামিন দিয়ে রুল জারি করেন। এ জামিন স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।
২ অক্টোবর আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত ওই জামিন স্থগিত করে শুনানির জন্য পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠান।
২০২৩ সালের ৬ এপ্রিল রানার জামিন বিষয়ে জারি করা রুল মঞ্জুর করে বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিনের হাইকোর্ট বেঞ্চ তাকে জামিন দিয়েছিলেন।
পরে রাষ্ট্রপক্ষ জামিন স্থগিত চেয়ে আবেদন করেন। ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে ৯ এপ্রিল তার জামিন ৮ মে পর্যন্ত স্থগিত করেছিলেন আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত। একইসঙ্গে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির দিন ঠিক করেন।
পরে ওই বছরের ৮ মে আপিল বিভাগ ১০ জুলাই জামিন স্থগিত রেখে লিভ টু আপিল শুনানির জন্য দিন রাখেন। সেদিন সেই শুনানি ছয় মাসের জন্য মুলতবি করা হয়। এর ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি বিষয়টি শুনানির জন্য ওঠে।
১৫ জানুয়ারি রানা প্লাজা ধসে হতাহতের ঘটনায় ভবন মালিক ও কারখানা মালিকদের নামে করা মামলা ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে বিচারিক আদালতকে নির্দেশ দেন সাবেক প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ। কিন্তু এ সময়ে নিষ্পত্তি না হওয়ায় ফের জামিন চেয়ে আবেদন করেন রানা।
২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভার বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন রানা প্লাজা (১০ তলা ভবন) ধসে নিহত হয় ১ হাজার ১৩৬ জন মানুষ। এ ঘটনার পাঁচ দিন পর ২৯ এপ্রিল ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পথে সোহেল রানাকে যশোরের বেনাপোল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।