সমস্যাসংকুল ব্যবসায়িক মডেলে ঘুরপাক খাচ্ছে দেশের এলপিজি খাত
বিশ্বে এমন কোনো ব্যবসা কি আছে যেখানে কোম্পানিগুলো নিজেদের খরচের সামান্য দামে পণ্য বিক্রি করে? হয়তো কেবল দাতব্য সংস্থাগুলো পক্ষে এ ধরনের মডেল অনুসরণ করা সম্ভব, কিন্তু বাণিজ্যিক খাতে এমন কৌশল প্রয়োগ করলে তা সম্পূর্ণরূপে বিপর্যয়ের দিকে নিয়ে যাবে।
তবুও, প্রায় এক দশক ধরে এ অবাস্তব মডেলটি বাংলাদেশের তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) শিল্পে বাস্তবে পরিণত হয়েছে। প্রায় দুই ডজন কোম্পানি একে অপরের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়ে উৎপাদন খরচের অনেক কম দামে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করছে। এমনকি, কিছু কোম্পানি বিনামূল্যে সিলিন্ডারও সরবরাহ করেছে, যাতে গ্রাহকেরা নিয়মিত গ্যাসের রিফিল নিতে উদ্বুদ্ধ হন।
কিন্তু এ কৌশল তাদের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিটি নতুন কোম্পানি আরও কম দামে গ্যাস বিক্রির সুযোগ নিয়ে বাজারে প্রবেশ করেছে, ফলে অভ্যন্তরীণ বাজারে কম দামের এক চক্র তৈরি হয়েছে।
তিন বছর আগেও প্রায় দুই ডজন কোম্পানি এলপিজি আমদানি করলেও এখন তা কমে সাত-আটটিতে এসে ঠেকেছে। এছাড়া এলপিজি সিলিন্ডার বাজারজাত করা ৩০টির মতো কোম্পানির বেশিরভাগই এখন টিকে থাকার জন্য কয়েকটি আমদানিকারকের ওপর নির্ভরশীল।
ব্যবসা শুরু করেনি ৫৮ লাইসেন্সধারী কোম্পানির অর্ধেক
এ খাতে দেশের ৫৮টি এলপিজি লাইসেন্সধারী কোম্পানির মধ্যে অর্ধেক এখনো কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি। শিল্প সংশ্লিষ্টদের মতে, যেসব কোম্পানির কাছে শত শত কোটি টাকার মজুত রয়েছে, তারাই কেবল এ বাজারে টিকে থাকতে পারছে।
জানা গেছে, প্রতিটি সিলিন্ডারের প্রকৃত উৎপাদন খরচ প্রায় তিন হাজার টাকা। অথচ ওমেরা, বসুন্ধরা এবং এমজিআই (ফ্রেশ)-এর মতো শীর্ষ কোম্পানিগুলো সিলিন্ডারপ্রতি ২,১০০–২,২০০ টাকা ভর্তুকি দিয়ে মাত্র ৮০০–৯০০ টাকায় বিক্রি করছে।
ফলে যে কোম্পানি ১০ লাখ সিলিন্ডার বাজারে ছেড়েছে, তাদের ভর্তুকির পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে ২১০–২২০ কোটি টাকা। আর যাদের ৪০ লাখ সিলিন্ডার রয়েছে, তাদের ভর্তুকি এক হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি—যা বেশিরভাগ কোম্পানির জন্য বহন করা সম্ভব নয়।
শিল্প সংশ্লিষ্টদের মতে, দেশের ৪.৫ কোটি সিলিন্ডারের প্রায় ৬০–৭০ শতাংশই ৫০০–৭০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এসব সিলিন্ডার স্ক্র্যাপ হিসেবে বিক্রি হলে মূল্য অর্ধেকেরও কমে নেমে আসে। এতে কোম্পানিগুলোর আর্থিক চাপ আরও বাড়ছে।
জেএমআই গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুর রাজ্জাকের অভিজ্ঞতার কথাই বলা যাক। ২০২০ সালে এলপিজি খাতে প্রবেশ করেই তিনি দেখতে পান, তার ৩২ লাখ সিলিন্ডারের প্রতিটির উৎপাদন খরচ তিন হাজার টাকা হলেও বাজারে মাত্র ৬০০ টাকা করে বিক্রি করতে হয়েছে। তার এ অপ্রত্যাশিত ভর্তুকির পরিমাণ গিয়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় এক হাজার কোটি টাকায়।
রাজ্জাক তার প্ল্যান্ট স্থাপনে সিলিন্ডার উৎপাদন ও গ্যাস বোতলজাতকরণের জন্য ৭০০–৮০০ কোটি টাকা বাজেট করেছিলেন। কিন্তু মহামারি এবং সিলিন্ডারের বিশাল ভর্তুকির কারণে এ খরচ গিয়ে দাঁড়িয়েছে তিন হাজার কোটি টাকায়, যার মধ্যে দুই হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যাংক ঋণ।
তিনি বলেন, 'সিলিন্ডার বিক্রির বিশাল ক্ষতির কারণেই সবচেয়ে বড় আঘাত এসেছে—এক হাজার কোটি টাকার ক্ষতি।'
পয়সাওয়ালা কোম্পানির ব্যবসা
দেশের বৃহত্তম মেডিকেল ডিভাইস প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান জেএমআই গ্রুপ এখন এলপিজি খাতে স্বল্প মার্জিনের মুখোমুখি। এক সময় ১২ কেজি সিলিন্ডারে ৩০০ টাকা লাভ পাওয়া যেত, এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৪০–৫০ টাকায়।
রাজ্জাক দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'এখন এ ব্যবসা শুধু সেসব কোম্পানির জন্যই লাভজনক যাদের বিশাল নগদ মজুত রয়েছে এবং যারা প্রতিদিন নতুন বিনিয়োগ করতে পারে, লাভের আশা করতে পারে ছয় থেকে সাত বছরে।'
এনার্জিপ্যাকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুমায়ুন রশীদ আট বছর আগে তার জি-গ্যাস ব্র্যান্ডের মাধ্যমে এলপিজি খাতে প্রবেশ করেন। এখনো এ খাতের চ্যালেঞ্জগুলো কাটিয়ে উঠতে পারেননি তিনি।
তিনি অভিযোগ করেন, কিছু মাফিয়া-সদৃশ গোষ্ঠী বাজারে নিজেদের আধিপত্য বাড়ানোর উদ্দেশ্যে কারসাজি করছে, বিশেষ করে 'সিলিন্ডার গেম' খেলার মাধ্যমে—যেখানে কম দামে সিলিন্ডার বিক্রির মাধ্যমে বাজারকে প্রতিযোগিতামুক্ত করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
রশীদ বলেন, 'এ প্রভাবশালী গোষ্ঠীগুলো প্রয়োজন হলে বেশি ভর্তুকি দিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীদের বাজার থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। ডিলারদের প্রতি সিলিন্ডার দেড় হাজায় টাকায় স্ক্র্যাপ হিসেবে বিক্রির জন্য উৎসাহিত করা হচ্ছে।'
এনার্জিপ্যাক ৮০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে ২৬ লাখ সিলিন্ডার নিয়ে এলপিজি বাজারে প্রবেশ করে। কিন্তু আট বছর পেরিয়েও কোম্পানিটি লাভের মুখ দেখেনি।
ওরিয়ন গ্যাসের চিফ অপারেটিং অফিসার অনুপ সেন বলেন, ২০০২ সালে ফরাসি কোম্পানি টোটালগাজ যখন বাংলাদেশের বাজারে আসে, তখন কোনো ভর্তুকি ছাড়াই তারা লাভজনকভাবে এলপিজি সিলিন্ডার বিক্রি করেছিল। কিন্তু পরবর্তীকালে আরও কোম্পানি আসায় কেউ কেউ বাজারে নিজেদের শক্ত অবস্থান গড়ে তুলতে সিলিন্ডারে ভর্তুকি দেওয়া শুরু করে।
অপারেটরদের ধারণা ছিল, একবার সিলিন্ডার বিক্রি করলে গ্রাহকেরা মাসে এক বা দুবার রিফিল করবেন, যা সিলিন্ডারের ১৫ বছরের জীবনকাল ধরে একটি লাভজনক ব্যবসায় পরিণত হবে। কিন্তু বাস্তবে ওরিয়নের ১০ লাখ সিলিন্ডারের মধ্যে প্রতি মাসে মাত্র এক চতুর্থাংশই রিফিল করা হচ্ছে বলে জানান সেন।
এনার্জিপ্যাকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুমায়ুন রশীদের বক্তব্যের সুরে সুর মিলিয়ে অনুপ সেন বলেন, 'একটি ১২ কেজি সিলিন্ডার লোহার স্ক্র্যাপ হিসেবে বিক্রি করলে তার মূল্য বর্তমানের এলপিজি অপারেটরদের চার্জ থেকে বেশি।'
ওমেরা পেট্রোলিয়ামের সিইও তানজিম চৌধুরী জানান, ২০১৭ সালে যখন সাত-আটটি কোম্পানি একসঙ্গে বাজারে প্রবেশ করে, তখন এলপিজি অপারেটরদের মধ্যে প্রতিযোগিতা তীব্র আকার ধারণ করে। এর আগে প্রতি সিলিন্ডারে ১০০ টাকা পর্যন্ত ভর্তুকি দেওয়া হতো।
তিনি বলেন, 'বর্তমানে অনেক কোম্পানি প্রতি সিলিন্ডারে আড়াই হাজার টাকা পর্যন্ত ভর্তুকি দিচ্ছে, যা দীর্ঘমেয়াদে টেকসই নয়।'
১৯৯৯ সালে বাংলাদেশের প্রথম বেসরকারি এলপিজি অপারেটর হিসেবে কার্যক্রম শুরু করা বসুন্ধরা গ্রুপ বর্তমানে এ শিল্পের অস্থিতিশীল মূল্যের চাপের মুখে পড়েছে।
বসুন্ধরা এলপিজির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, '২০১৪–১৫ সালে আমরা প্রতি সিলিন্ডারে মাত্র ৩০–৪০ টাকা লাভ করতাম। তখন উৎপাদন খরচ ছিল ১,৮০০ টাকা। এখন আমরা উৎপাদন খরচের পাঁচ ভাগের এক ভাগ দামে সিলিন্ডার বিক্রি করছি।'
৭০ লাখেরও বেশি সিলিন্ডার বাজারে ছাড়ার পরও বসুন্ধরা এখনও অলাভজনক অবস্থায় আছে। এ কর্মকর্তা এ ক্ষতির জন্য বাজারের দামের অস্থিতিশীলতাকে দায়ী করেন।
তিনি বলেন, 'তিন বছর আগে যেখানে ২২ থেকে ২৩টি কোম্পানি এলপিজি আমদানি করত, এখন সেখানে মাত্র সাত–আটটি অপারেটর সক্রিয় রয়েছে, যা এ সেক্টরের আর্থিক চাপে পড়ার প্রমাণ।'
এলপিজি কোম্পানিগুলোর পতন
বেসরকারি খাতে বাংলাদেশে প্রথম এলপিজি অপারেটর হিসেবে কাজ শুরু করে বসুন্ধরা গ্রুপ। এরপর এ তালিকায় যোগ হয় যমুনা স্পেসটেক জয়েন্ট ভেঞ্চার লিমিটেড, ফ্রেঞ্চ কোম্পানি টোটালগাজ, শ্রীলঙ্কান কোম্পানি লাফস এবং অস্ট্রেলিয়ান কোম্পানি ক্লিনহিট।
২০১০ সাল পর্যন্ত একটি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সংস্থাসহ মোট ৬টি অপারেটর বাজারে ছিল। তবে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর সিদ্ধান্ত নেয়, গৃহস্থালী পর্যায়ে নতুন কোনো প্রাকৃতিক গ্যাস সংযোগ দেওয়া হবে না এবং ভবিষ্যতের চাহিদার জন্য কেবল এলপিজিই ব্যবহার করা হবে। এর পরিপ্রেক্ষিতে, ২০২৪ সালের জুন মাস পর্যন্ত মোট ৫৮টি কোম্পানিকে এলপিজি ব্যবসার লাইসেন্স দেওয়া হয়।
শিল্প সংশ্লিষ্টদের মতে, এলপিজি বাজার ২০১৪–১৫ সাল পর্যন্ত স্থিতিশীল ছিল এবং সিলিন্ডারের দাম ছিল নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু পরে প্রতি বছর নতুন দুটি বা তিনটি করে লাইসেন্স দেওয়া শুরু হয়, যা বাজারের প্রতিযোগিতা ও মূল্যে অস্থিরতা সৃষ্টি করে।
ওমেরা এলপিজি, বেক্সিমকো গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ, বেঙ্গল গ্রুপ, এস আলম গ্রুপ, টিকে গ্রুপ, বিএম এনার্জি (বিডি) লিমিটেড, এনার্জিপ্যাক, নাভানা গ্রুপ, ওরিয়ন গ্রুপ, জেএমআই গ্রুপ, ইনডেক্স গ্রুপ এবং সেনা কল্যাণ সংস্থাসহ অনেক বড় প্রতিষ্ঠান এ বাজারে প্রবেশ করে।
এর মধ্যে বেঙ্গল গ্রুপ এটির এলপিজি ইউনিট সিটি গ্রুপের কাছে বিক্রি করেছে, যা এখন সবচেয়ে বেশি স্টোরেজ সক্ষমতা নিয়ে বাজারে প্রবেশ করতে প্রস্তুত। এসব কোম্পানির অনেকগুলোই বর্তমানে তাদের এলপিজি ইউনিট বিক্রি করতে চায়, তবে সিলিন্ডারে প্রদত্ত উচ্চ ভর্তুকির কারণে তাদের পক্ষে তা করা সহজ হচ্ছে না।
বর্তমানে বাংলাদেশের বৃহত্তম এলপিজি অপারেটর ওমেরা পেট্রোলিয়ামের চেয়ারম্যান আজম জে চৌধুরী বলেন, 'এটি একটি খুব পুঁজি-নিবিড় ব্যবসা। বাজারে স্থান পেতে আপনাকে সিলিন্ডার ছাড়তে হবে। তার জন্য উল্লেখযোগ্য নগদ প্রবাহ প্রয়োজন। কিন্তু, অনেক কোম্পানি যেগুলো ব্যবসায় এসেছে, সেগুলো দুর্বল।'
তিনি আরও জানান, 'অনেক গ্রাহকই তিন হাজার টাকা দিয়ে সিলিন্ডার কিনতে পারেন না।'
চৌধুরী জানান, তার এলপিজি ব্যবসা সচল রাখতে এবং প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে তিনি প্রতি বছর ৩ থেকে ৪ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেন। তবে কিছু কোম্পানির মতো সিলিন্ডারকে স্ক্র্যাপে পরিণত করার বিপরীতে তিনি সিলিন্ডারগুলোকে সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করেন, কারণ এগুলো বারবার রিফিল করা যায়।
এলপিজি অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ২০২৩ সালে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন ও চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনকে স্ক্র্যাপ সিলিন্ডারের বিষয়ে অবহিত করেছে।
এলপিজি বাজার
২০০০-এর দশকের গোড়ার দিকে দেশে রান্নার জ্বালানি হিসেবে এলপিজির ব্যবহার বৃদ্ধি পায়। প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুত দ্রুত হ্রাস পাওয়ায় এলপিজিকে কার্যকর, নিরাপদ ও পরিবেশবান্ধব বিকল্প হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
২০১০ সালে দেশে এলপিজি সরবরাহকারীর সংখ্যা সীমিত থাকায় বাজারের আকার ছিল মাত্র ৭০ হাজার মেট্রিক টন। বর্তমানে এ ব্যবহার মাসিক প্রায় ১৪ লাখ মেট্রিক টনে পৌঁছেছে, যা বছরে প্রায় ১.৭ মিলিয়ন মেট্রিক টন।
শিল্প বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, গত এক দশকে এলপিজি বাজারের বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ছিল ১৫–২০%। তাদের অনুমান, ২০৩০ সালের মধ্যে এ বাজার তিন মিলিয়ন মেট্রিক টনে পৌঁছাবে।
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন প্রতি মাসের শুরুতে এলপিজির খুচরা মূল্য নির্ধারণ করে, তবে সিলিন্ডারের দাম নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকে। অক্টোবর মাসে কমিশন ১২ কেজি এলপিজি সিলিন্ডারের দাম খুচরা গ্রাহকদের জন্য ১,৪৫৬ টাকা নির্ধারণ করেছে, যা আগের মাসে ছিল ১,৪২১ টাকা।
এলপিজি বিনিয়োগ নিয়ে ব্যাংকগুলোর উদ্বেগ
এলপিজি সিলিন্ডারের মূল্য কমাতে চলমান প্রতিযোগিতা এবং এর ফলে আর্থিক ক্ষতির সম্ভাবনা নিয়ে ঋণদাতারা উদ্বেগের মধ্যে পড়েছে।
ব্যাংকগুলোর এ খাত নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে, কারণ এগুলো এলপিজি শিল্পে বিনিয়োগ হওয়া ৩০ হাজার কোটি টাকার ঋণের ৬০–৭০ শতাংশ অর্থায়ন করেছে।
সাধারণত, ব্যাংকগুলো এলপিজি শিল্পকে সর্বোচ্চ পাঁচ থেকে ছয় বছরের ঋণ পরিশোধের সময়সীমা দিয়ে থাকে। তবে জেএমআই গ্রুপের রাজ্জাক মনে করেন, এ সময় পর্যাপ্ত নয়। তিনি বলেন, 'কম মুনাফার পুঁজি-নিবিড় খাত হওয়ায় ভারতে এ ঋণ পরিশোধের সময়কাল ১৮ বছর।'
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান জানান, 'এলপিজি শিল্পের চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে আমরা সচেতন। অনেক সিলিন্ডার অপারেটরের কাছে ফেরত আসে না।'
তিনি রাজ্জাকের সঙ্গে একমত প্রকাশ করে বলেন, ঋণ পরিশোধের সময়সীমা অন্তত ৮ থেকে ১০ বছর হওয়া উচিত। তবে তিনি বলেন, ব্যাংকগুলো সীমাবদ্ধতার মধ্যে থাকে, কারণ দীর্ঘমেয়াদী প্রকল্পের জন্য এগুলো স্বল্পমেয়াদী আমানতের ওপর নির্ভর করে।