কোথাও একটা ষড়যন্ত্র হচ্ছে: তারেক রহমান
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বাংলাদেশের জনগণকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, জাতির বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, 'আমরা প্রায়ই বলি, ষড়যন্ত্র কখনো থেমে থাকে না। আপনারা (বিএনপির নেতা-কর্মীরা) পত্রিকার সাম্প্রতিক খবর থেকে যেমন দেখেছেন, তেমনি বুঝতে পারছেন কোথাও একটা ষড়যন্ত্র হচ্ছে। তাই জনগণের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে এবং তাদের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।'
আজ মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) ঢাকায় এক কর্মশালায় ভার্চুয়াল বক্তব্যে বলেন তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় তারেক রহমান বলেন, তারেক রহমান বলেছেন, যেকোনো মূল্যে জনগণের ভোটের অধিকার রক্ষা করতে হবে।
তিনি বলেন, 'আমরা মানুষের বাকস্বাধীনতা ও ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করছি। তাই যেকোনো মূল্যে জনসচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে এই অধিকার আদায় করতে হবে।'
তিনি আরও বলেন, জনগণের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তি ছাড়া কোনো সংস্কারই কার্যকর হবে না বা জাতির কল্যাণ নিশ্চিত করতে পারবে না। রাজনৈতিক মুক্তি মানে সব জনপ্রতিনিধিকে জনগণের কাছে দায়বদ্ধ হতে হবে।'
তারেক রহমান বলেন, 'সরকার, বিরোধী দল, রাজনৈতিক দল, স্থানীয় নেতা যেমন উপজেলা বা পৌরসভার চেয়ারম্যান, সদস্য বা কাউন্সিলর কাউকেই তাদের ব্যক্তিগত মর্জি অনুযায়ী কাজ করতে দেওয়া উচিত নয়।'
এই বিএনপি নেতা বলেন, 'সবাইকে জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হবে। এটা নিশ্চিত করতে হলে জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। যেকোনো গণতান্ত্রিক ও সভ্য দেশে ভোটের মাধ্যমে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়।'
তিনি বলেন, 'বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে জনগণের রাজনৈতিক, ভোটাধিকার ও অন্যান্য মৌলিক অধিকার পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে লিপ্ত। এটি এমন একটি সংগ্রাম ছিল, যার জন্য অনেক জীবনকে উৎসর্গ এবং গুরুতর নিপীড়ন ও দমনকে সহ্য করতে হয়েছে।'
শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী শাসনামলে 'টেক ব্যাক বাংলাদেশ' স্লোগানের কথা স্মরণ করেন বিএনপি নেতা। এই স্লোগান ছিল মানুষের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং তাদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের মজবুত ভিত্তি স্থাপনের প্রতীক। আমি একজন সহকর্মী হিসেবে আপনাদেরকে অনুরোধ করব এবং নেতা হিসাবে আপনাদেরকে আদেশ করব: আজ থেকে কেউ আমার নামের পাশে 'দেশনায়ক' বা 'রাষ্ট্রনায়ক' ব্যবহার করবেন না।'
ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ মিলনায়তনে বিএনপির ৩১ দফা রাষ্ট্রীয় কাঠামো সংস্কারের রূপরেখা নিয়ে এ কর্মশালার আয়োজন করে বিএনপি। সকালে কর্মশালার উদ্বোধন করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান।
তারেক রহমান বলেন, বিএনপি আগামীতে আবার ক্ষমতায় আসবে যদি তাদের নেতাকর্মীরা দেশের জনগণের ইচ্ছা অনুযায়ী কাজ ও আচরণ করে।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কারের জন্য বিএনপি দেশের সব গণতান্ত্রিক দলের মতামতের ভিত্তিতে ৩১ দফা প্রস্তাব দিয়েছে। তিনি বলেন, 'অনেকেই এখন বিভিন্ন সংস্কারের কথা বলছেন। কিন্তু যখন অন্য কেউ তা নিয়ে ভাবেনি, তখন বিএনপি বহু বছর আগে সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছিল।'
তবে বিএনপির এই নেতা বলেন, ৩১ দফা প্রস্তাব অপরিবর্তনীয় নয়। 'আমরা যেকোনো ভাল প্রস্তাব বা পরামর্শ পেলে তা অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আমরা প্রস্তুত।'
৩১ দফা প্রস্তাব গ্রামীণ এলাকাসহ সারা দেশে ছড়িয়ে দিয়ে জনগণকে অবহিত ও মতামত নেওয়ার আহ্বান জানান বিএনপি নেতা।
তিনি সংস্কার প্রস্তাব সম্পর্কে জনগণকে পরিষ্কার ধারণা দিতে গ্রামাঞ্চলসহ সারা দেশে ছোট ছোট সভা করতে বিএনপি নেতাকর্মীদের উৎসাহিত করেন।
তারেক রহমান দুর্নীতি রোধে প্রাথমিক শিক্ষায় বিনিয়োগ, শিক্ষকদের ভালো বেতন নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি বলেন, 'আমাদের অবশ্যই শিক্ষার্থী ও শিক্ষক উভয়ের শিক্ষার মানের দিকে মনোনিবেশ করতে হবে।'
তিনি মানসম্মত সেবা প্রাপ্তিসহ একটি সুস্থ জাতি গঠনে স্বাস্থ্য খাতের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। ' দুর্নীতি কমাতে পারলে উন্নত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে পারব।'
বৈশ্বিক শ্রমবাজার মূল্যায়ন এবং বাজারের চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দক্ষ ও স্বল্পদক্ষ জনশক্তি তৈরিতে দলের পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন তারেক রহমান।