অতীতের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের আগামী নির্বাচনে চান না শিক্ষার্থী প্রতিনিধিরা
গত ৩টি সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে যারা অংশগ্রহণ করেছেন, তারা আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না বলে মন্তব্য করেছেন কয়েকজন শিক্ষার্থী প্রতিনিধি। তারা বলেন, জুলাই আন্দোলনে শিক্ষার্থী হত্যার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরাও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচনি সংস্কার কমিশন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভার আয়োজন করে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত থেকে কমিশনের কাছে তাদের প্রস্তাব তুলে ধরেন।
শিক্ষার্থী প্রতিনিধিরা জানান, আওয়ামী লীগকে কোনোভাবেই পুনর্বাসন বা নির্বাচনে অংশ নিতে দেওয়া যাবে না। তারা আরও হুঁশিয়ারি দেন, প্রয়োজনীয় সংস্কার বাস্তবায়নের আগে নির্বাচন হলে তারা নির্বাচনি কার্যালয়সমূহ ভাঙচুর করবেন।
সভায় সংস্কার প্রস্তাব জনবান্ধব করার দাবি জানান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা।
তিনি বলেন, 'আগামীতে কোনো সরকারকে আর ফ্যাসিস্ট হতে দেব না আমরা। আমাদের সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। আমাদের তরুণদের সজাগ থাকতে হবে। আমাদের ঐক্যে যেন কেউ ফাটল ধরাতে না পারে। কমিশনের সংস্কার প্রস্তাব যেন জনবান্ধব হয়।'
শিক্ষার্থীরা প্রধানমন্ত্রীর জন্য দুই মেয়াদের সীমা প্রস্তাব করেন। তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী একসঙ্গে সরকারপ্রধান এবং দলীয় সভাপতির পদে থাকতে পারেন না।
অন্যান্য প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে সরাসরি রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ব্যবস্থা বাস্তবায়ন, দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট সংসদীয় কাঠামো প্রবর্তন, নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করা, প্রবাসীদের ভোটাধিকার প্রদান, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে গণতান্ত্রিক অনুশীলনের প্রচার, এবং রাজনীতিতে পরিবারকেন্দ্রিক ব্যবস্থার বাইরে যাওয়া।
অন্তর্বর্তী সরকার শুধু ফ্যাসিলিটেটর, কোনো শাসক নয়—প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের এ বক্তব্যের দিকে ইঙ্গিত করে শিক্ষার্থী প্রতিনিধিরা তাদের প্রস্তাবিত সংস্কারের বাস্তবায়ন নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন।
জবাবে, কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. তোফায়েল আহমেদ স্পষ্ট করে বলেন, 'কোনো সরকারকে শুধু একটি ফ্যাসিলিটেটর বলা হলে, এটি সরকার হিসেবে কাজ করতে পারে না। একবার পদে আসীন হলে, এটিকে অবশ্যই একটি গভর্নিং অথরিটি হিসেবে কাজ করতে হবে।'
এছাড়া, কমিশন শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করেছে যে, তাদের প্রস্তাবগুলো গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা হবে।
নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, 'শিক্ষার্থীদের আত্মত্যাগ বৃথা যাবে না। আমার সহকর্মীদের পক্ষ থেকে, আমি আপনাদের [শিক্ষার্থীদের] প্রস্তাবগুলো পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিবেচনা করার অঙ্গীকার করছি।'