গণঅভ্যুত্থানে উত্তরার ৯২ শহিদের তালিকা প্রকাশ
ছাত্র-নেতৃত্বাধীন গণআন্দোলন চলাকালীন রাজধানীর উত্তরায় ১৮ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ৯২ জন শহিদের তালিকা প্রকাশ করেছে 'জুলাই রেভ্যুলেশনারি অ্যালায়েন্স' নামে একটি সেচ্ছাসেবী সংগঠন।
শনিবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরে উত্তরার ৩ নম্বর সেক্টরে ফ্রেন্ডস ক্লাব মাঠে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে শহিদদের তালিকা প্রকাশ করেন সংগঠনটির মুখপাত্র ফান্তাসির মাহমুদ।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে ফান্তাসির সাংবাদিকদের বলেন, 'আমারা ৯২ জন বীর শহিদকে তালিকাভুক্ত করেছি। তবে আমাদের ধারণা, শহিদের এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।'
তিনি আরও বলেন, 'উত্তরায় শহিদ ৯২ জনের মধ্যে ২৫ জন শিক্ষার্থী, ১৯ জন চাকরিজীবী, ১০ জন ব্যবসায়ী, ৫ জন গাড়ি বা রিকশাচালক, ২ জন মসজিদের ইমাম, একজন ডাক্তার, ১১ জন অজ্ঞাত এবং অন্যান্য ১৯ জন।'
ফান্তাসির জানান, শহিদদের মধ্যে ১৮ জুলাই ২০ জন, ১৯ জুলাই ২২ জন, ৪ আগস্ট ৭ জন, ৫ আগস্ট ৪২ জন এবং ৭ আগস্ট ১ জন শহিদ হন।
শহিদদের মধ্যে ২৬ জন ২১–৩০ বছর বয়সি, ১৮ জনের বয়স ৩১–৪০ বছর, ১০–২০ বছর বয়সি রয়েছেন ১৭ জন, ৪১–৫০ বছর বয়সি ১১ জন, ৫১–৬০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ২ জন এবং ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে ও ১০ বছরের নিচে শহিদ রয়েছেন একজন করে।
ফান্তাসির বলেন, 'সরকারি কোনো সহযোগিতা না পেয়ে নিজেদের উদ্যোগে এই তালিকা প্রকাশ করছি। জুলাই বিপ্লবের স্মৃতি বাঁচিয়ে রাখতে ওয়েবসাইট নির্মাণের কাজ করা হচ্ছে, যেখানে সারা দেশের একাধারে শহিদ ও আহতদের তালিকা দেওয়া থাকবে এবং তাদের নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র তুলে ধরা হবে।'
নিহত সজীব সরকারের বোন সুমাইয়া সরকার বলেন, '১৭ জুলাই আমার ভাইয়ের জন্মদিন ছিল। ১৮ তারিখ সেই মানুষটি আর নেই। হাসপাতালে গিয়ে একসাথে রাখা বেশ কয়েকটি লাশের মধ্যে প্রথমেই যে লাশটির কাপড় সরাই, সেটিই দেখি আমার ভাইয়ের লাশ। লাশ দেখে কোনোভাবেই বিশ্বাস হচ্ছিলো না যে আমার ভাইটি আর নেই।'
নিখোঁজ আসাদুল্লাহর স্ত্রী মার্জানা আক্তার বলেন, 'আমার মেয়ে এখনও জিজ্ঞেস করে যে তার বাবা কোথায়। তখন তার কাছে জবাব দেওয়ার মতো কি কোনো উত্তর আমার কাছে আছে? এখনও আমার মেয়েকে তার বাবা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে বলে যে, "আমার বাবা ডিউটিতে আছেন।" আমি আমার স্বামীর লাশটিও খুঁজে পাইনি।'
নিহত নাঈমা সুলতানার মা আইনুন নাহার বলেন, 'আমার মেয়ে বারান্দায় ছিল, আর ছাত্ররা নিচে রাস্তার আন্দোলন করছিলে। আমার মেয়ে কিছু বুঝে ওঠার আগেই তার গায়ে গুলি লাগে। কী দোষ ছিলো আমার মেয়ের?