ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে বলা হয়েছে, হাসিনার বক্তব্য দেওয়া বাংলাদেশ পছন্দ করছে না: পররাষ্ট্র সচিব
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিন বলেন, 'ভারতীয় হাইকমিশনারকে বলেছি শেখ হাসিনা ভারত থেকে যে বক্তব্যগুলো দিচ্ছে তা বাংলাদেশ পছন্দ করছে না। সেটা তাকে জানিয়ে দিতে বলা হয়েছে।'
আজ সোমবার (৯ ডিসেম্বর) ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে বৈঠকের পর এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র সচিব এ কথা জানান।
এসময় তিনি বলেন, 'ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বলেছেন, তার [শেখ হাসিনার] উপস্থিতি আমাদের সম্পর্কের ওপর কোনো প্রভাব ফেলবে না। তারা অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে চায়।'
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে 'বিশ্বাসের ঘাটতি' আছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিন বলেন, 'বিশ্বাসের একটা ঘাটতি ছিল বলেই আমাদের এই প্রক্রিয়া অতিক্রম করতে হচ্ছে। সেটার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে আজকের এই বৈঠক।'
তিনি বলেন, 'আমাদের মতের যে যৌক্তিকতা, আমাদের মনে হচ্ছে তারা সেটা ধীরে ধীরে মেনে নিচ্ছে। আজকের বৈঠকের পর আমরা আশা করি এই ঘাটতি কমবে।'
তিনি আরও বলেন, 'বৈঠকে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি করতে বলা হয়েছে। এছাড়াও বাংলাদেশকে বন্যার পূর্বাভাস জানাতে হবে। পণ্য আমদানি রপ্তানি নিরবচ্ছিন্ন করার আহ্বানও জানানো হয়েছে। নেপাল থেকে জলবিদ্যুৎ আনার বিষয়েও তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। একইসঙ্গে ভিসা প্রাপ্তি সহজ করতে বলা হয়েছে।'
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, 'বাংলাদেশে জুলাই-আগস্ট বিপ্লব এবং বিপ্লব-পরবর্তী সংখ্যালঘুদের প্রতি কথিত বৈরি আচরণ নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমে অপপ্রচার, মিথ্যা তথ্য, এবং বিভ্রান্তিকর বয়ান রয়েছে, সে বিষয়ে আমরা ভারত সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এবিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপের অনুরোধ জানিয়েছি।'
তিনি বলেন, 'সেইসঙ্গে আমরা জোর দিয়ে বলেছি, বাংলাদেশে বসবাসরত সব ধর্ম নির্বিশেষে স্বাধীনভাবে ধর্ম চর্চা করে আসছে এবং এ বিষয়ে কোনো ধরনের বিভ্রান্তি ও অপপ্রচারের সুযোগ নেই।'
তিনি আরও বলেন, 'এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার সরেজমিনে বাস্তব অবস্থা দেখার ও পর্যবেক্ষণ করার জন্য বিদেশি সাংবাদিকদেরও আহ্বান জানিয়েছে। সেইসঙ্গে আমরা এও বলেছি, এটি আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অন্য দেশের মন্তব্য সমীচীন নয়। আমি এও স্মরণ করিয়ে দিয়েছি, বাংলাদেশ অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মন্তব্য থেকে বিরত থাকে এবং অন্যান্য দেশেরও একই ধরনের শ্রদ্ধাবোধ আমাদের প্রতি দেখানো উচিত।'