এস আলম ও ইসলামী ব্যাংকের সাবেক ডিএমডির বিরুদ্ধে ২৯ কোটি টাকার প্রতারণা মামলা
প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে এক নারী ব্যবসায়ীর ২৯ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে আলোচিত-সমালোচিত ব্যবসায়ী এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম (মাসুদ) ও ইসলামী ব্যাংকের সাবেক ডিএমডি আকিজ উদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আবু বক্কর সিদ্দিকের আদালতে মামলাটি করেন নারী উদ্যোক্তা নাজমে নওরোজ। তিনি নগরের 'লা অ্যারিস্টোক্রেসি' রেস্তোরাঁর মালিক।
তাঁর আইনজীবী শুভঙ্কর ঘোষ আজ বলেন, আদালত বাদীর বক্তব্য গ্রহণ করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার অভিযোগে বাদী উল্লেখ করেন, 'তিনি একজন নারী উদ্যোক্তা। সে সুবাদে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান এস আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল আলম মাসুদের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। সাইফুল আলম বাদীকে ব্যবসা বাড়ানোর জন্য তাঁর মালিকানাধীন ওই ব্যাংকের কাজীর দেউড়ি মহিলা শাখা থেকে প্রথমে দুই কোটি টাকা ঋণ দেয়। এরপর কয়েক দফায় মোট ৩০ কোটি টাকা ঋণ দেয়।'
'২০১৬ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে এই ঋণগুলো নেওয়া হয়। ইতিমধ্যে সাইফুল আলম তাঁর ব্যক্তিগত সহকারী আকিজ উদ্দিনের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। আকিজ উদ্দিন ও সাইফুল আলম ব্যাংকে ঋণের বিপরীতে থাকা বাদীর সই করা খালি চেকের মাধ্যমে ও ধার হিসেবে নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন ২৯ কোটি টাকা। গত ২২ জুলাই ওই টাকা ফেরত চাইলে বাদীকে অপহরণের হুমকি দেওয়া হয়।'
মামলার বাদী নাজমে নওরোজ বলেন, 'টাকা ফেরত চাইলে বিভিন্ন সময় আমাকে গুম ও খুনের হুমকি দিতেন আকিজ।'
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর সাইফুল আলম মাসুদ আর দেশে ফিরে আসেননি। তিনি নিজেকে সিঙ্গাপুরের নাগরিক দাবি করে সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকে চিঠি দিয়েছেন। আর পলাতক রয়েছেন আকিজ উদ্দিন। এ কারণে দুজনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, লা এরিস্টোক্রেসি, নওরোজ এন্টারপ্রাইজ ও নীলিমা নীল এগ্রো লিমিটেডের কাছে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের তিনটি শাখার প্রায় ২৩৪ কোটি ঋণ আটকে গেছে।
প্রতিষ্ঠান তিনটির মধ্যে লা এরিস্টোক্রেসির কর্ণধার নাজমে নওরোজ।
নওরোজ এন্টারপ্রাইজের কর্ণধার নাজমে নওরোজ, ফার্স্ট সিকিউরিটি মহিলা ব্রাঞ্চের তৎকালীন এক নারী পিয়ন মঞ্জু রানী দাশ ও তাঁর স্বামী অজয় কুমার দাশ।
নীলিমা নীল এগ্রো লিমিটেডের লা এরিস্টোক্রেসির স্টোর কিপার মুজিবুর রহমান চেয়ারম্যান ও ওয়াসিয়া আক্তার নুপুর ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
নামসর্বস্ব এসব প্রতিষ্ঠানের নামে ২৩৪ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার পেছনে নারী উদ্যোক্তা নাজমে নওরোজ, এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদ এবং তাঁর ব্যক্তিগত সহকারী আকিজ উদ্দিন জড়িত রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।