স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সব নীতিনির্ধারণী পদে স্বাস্থ্য ক্যাডার পদায়নের দাবি
স্বাস্থ্যকে ক্যাডারে অন্তর্ভুক্ত না রেখে আলাদা রাখার জন্য জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন যে সুপারিশ করতে যাচ্ছে, তা প্রত্যাখ্যান করেছে বিসিএস হেলথ ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশন। স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের সব নীতিনির্ধারণী পদে স্বাস্থ্য ক্যাডার কর্মকর্তা পদায়ন এবং উপসচিব পুলে উন্মুক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বিসিএস হেলথ ক্যাডার আয়োজিত "জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন কর্তৃক প্রস্তাবিত স্বাস্থ্য ক্যাডার বিলুপ্তি সংক্রান্ত সুপারিশ প্রত্যাখান ও উপসচিব পদে সকল ধরনের কোটা বাতিলের দাবিতে' আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন চিকিৎসকেরা।
লিখিত বিবৃতিতে বিসিএস হেলথ ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য সচিব ডা. উম্মে তানিয়া নাসরিন বলেন, 'আমরা জেনেছি জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার ও বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারকে ক্যাডার কাঠামোর বাইরে রাখার সুপারিশ করতে যাচ্ছে। বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারের ৩৫ হাজার সদস্যের মুখপাত্র 'বিসিএস হেলথ ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশন এ ধরনের একতরফা সংস্কার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করছে।'
উল্লেখ্য, গত ১৭ ডিসেম্বর সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী জানান, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্যাডার বাদ দেওয়ার সুপারিশ করতে যাচ্ছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। এর পরিবর্তে জুডিশিয়ারি সার্ভিস কমিশনের মতো স্বাস্থ্যের পৃথক কমিশন তৈরি করা হতে পারে।
ডা. তানিয়া বলেন, সংস্কার কমিশন কর্তৃক বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারের প্রতিনিধিদের সাথে কোনোরূপ আলোচনা ব্যতীত এমন প্রস্তাবনা তৈরি এবং গণমাধ্যমে একতরফাভাবে প্রচার করা সুবিবেচনাপ্রসূত নয়। এরূপ সিদ্ধান্তের ফলে দেশের সামগ্রিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা ও জনগণের প্রান্তিক পর্যায়ের স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তির কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিতে পারে।
তিনি আরও বলেন, 'আমরা মনে করি, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল ও নীতিনির্ধারনী পদসমূহে মাঠপর্যায়ের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন স্বাস্থ্য ক্যাডারের দক্ষ কর্মকর্তাদের পদায়ন করে প্রকৃত বিজ্ঞানভিত্তিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা সম্ভব।
'আমরা সংস্কার কার্যক্রমকে সাধুবাদ জানাই। তবে দূরভিসন্ধিমূলক সুপারিশকে সংস্কার প্রস্তাব হিসেবে মানা হবে না। হেলথ ক্যাডারের সাথে আলোচনা ব্যতীত কোনোরূপ সংস্কার প্রস্তাব মেনে নেয়া হবে না।'
আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের সমন্বয়ক ড. মুহম্মদ মফিজুর রহমান বলেন, 'অন্তর্ভুক্ত ২৫টি ক্যাডার নিয়ে মঙ্গলবার সকাল ১১টায় থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এক ঘণ্টা সব অফিসে কর্মবিরতি পালন করা হবে। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সব অফিসে স্ব-স্ব কর্মস্থলের সামনে মানববন্ধন হবে। এছাড়া আগামী ৪ জানুয়ারি ঢাকায় সমাবেশ করা হবে। এই সময়ের মধ্যে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর আলোচনা করে এমন বিভেদ দূর করবে বলে আশা প্রকাশ করছি। তারপরও সমাধান না হলে আমরা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানো হবে।'
স্বাস্থ্যকে ক্যাডারে অন্তর্ভক্ত না করে জুডিশিয়ারি সার্ভিস কমিশনের মতো পৃথক কমিশন করা হলে কি সমস্যা হবে, জানতে চাইলে চিকিৎসকেরা দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, আলাদা কমিশন করা হলে আর্থিক ব্যবস্থাপনা কেমন হবে, স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত নীতিমালা কিভাবে হবে, কমিশন স্বাধীনভাবে কিভাবে চলবে, সে বিষয়ে তারা কিছু জানেন না। জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন শুধু জনপ্রশাসন সংস্কার করুক। স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশন স্বাস্থ্যের সংস্কার করুক।