করফাঁকির অভিযোগ অস্বীকার সামিট গ্রুপের, প্রতিবেদনকে ‘ভিত্তিহীন’ দাবি
বিগত সরকারের সময় সুবিধা পাওয়া সামিট গ্রুপের বিরুদ্ধে উৎসে কর ফাঁকির অভিযোগকে 'ভিত্তিহীন' ও 'দায়িত্বহীন' বলে দাবি করেছে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এর তথ্যসূত্রে সাম্প্রতিক সময়ে গণমাধ্যমে আসা এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে সামিট গ্রুপের ঢাকা ও সিঙ্গাপুর অফিস মঙ্গলবার প্রতিবাদ লিপি পাঠিয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, "সামিট গ্রুপ সবসময় দেশের আইনের প্রতি সম্মান রেখে এবং সম্পূর্ণ স্বচ্ছতার সঙ্গে ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। কর ফাঁকির অভিযোগের বিষয়ে এনবিআর অথবা সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেলের (সিআইসি) পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত অফিসিয়ালি কোনো কিছু জানানো না হলেও— অজ্ঞাত কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে সামিটের বিরুদ্ধে অভিযোগমূলক খবর প্রকাশ করা হচ্ছে।
"বাংলাদেশের গণমাধ্যমে অজ্ঞাত একজন কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, সামিট গ্রুপ বাংলাদেশে কর ফাঁকির সঙ্গে জড়িত এবং সিআইসি খুঁজে পেয়েছে যে, সামিটকে কর অব্যাহতির যেসব সুবিধা প্রদান করা হয়েছে– তা বৈষম্যমূলক। কারণ অন্যান্য বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলো এ ধরনের সুবিধা পায়নি।"
সামিটের বক্তব্য হলো, "সংবাদমাধ্যমে অজ্ঞাত সিআইসি কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রকাশিত কর ফাঁকির অভিযোগটি ভিত্তিহীন ও দায়িত্বহীন।…সামিট গ্রুপের বিরুদ্ধে কর ফাঁকি দেওয়ার কোনো প্রশ্ন তোলা অবান্তর।"
সামিট গ্রুপের দুটি কোম্পানির লভ্যাংশ হস্তান্তরের সময় এক হাজার কোটি টাকার বেশি উৎসে কর 'ফাঁকির' তথ্য 'উদঘাটন' করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সাত করবর্ষ ধরে লভ্যাংশ হস্তান্তরের সময় উৎসে কর না কাটায় তা এখন জরিমানাসহ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১১২ কোটি টাকা; যা 'ফাঁকি' দেওয়া হয়েছে বলে দাবি সরকারের প্রধান রাজস্ব আদায়কারী সংস্থাটির সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেলের।
সামিট কর্তৃপক্ষ বলছে, 'বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০' এর অধীনে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি শিল্পখাতকে কর অব্যাহতি সুবিধা দেওয়া হয়। এই আইনের অধীনে এখন পর্যন্ত ১০৪টি প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত আছে, এর মধ্যে সামিটের মালিকানাধীন প্রকল্প মাত্র তিনটি।
"একটি দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠান হিসেবে সামিট গ্রুপ বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহের ক্ষেত্রে একটি সফল ট্র্যাক রেকর্ড রেখেছে। সামিট গ্রুপ বাংলাদেশে (সামিট করপোরেশন) ও সিঙ্গাপুরে (সামিট পাওয়ার ইন্টারন্যাশনাল) সবসময় উভয় দেশের আইনকে সম্মান এবং অনুসরণ করে পরিচালিত হচ্ছে।
"আমরা গণমাধ্যম ও সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ করছি যে তারা গুরুত্বপূর্ণ মতামত দেওয়ার ক্ষেত্রে আরও দায়িত্বশীল হোন যেন আইন তার নিজস্ব গতি অনুসরণ করতে পারে। আমাদের দায়িত্বশীলতা দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশের উন্নয়নে প্রয়োজনীয় আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের আস্থা অক্ষুণ্ন রাখতে সাহায্য করবে।"