সিলেটে দুর্ঘটনায় কিশোর নিহতের জেরে বাস ভাঙচুর, প্রতিবাদে কর্মবিরতিতে পরিবহন শ্রমিকেরা
সিলেটে বাসচাপায় কিশোর নিহতের ঘটনায় বাস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) থেকে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে সিলেট জেলা বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়ন।
রোববার সকালে সিলেট–জকিগঞ্জ সড়কের কামালগঞ্জ আব্দুল মতিন কমিউনিটি সেন্টারের কাছে ফুটবল খেলার সময় বল রাস্তার ওপর চলে গেলে আবির আহমদ (১৪) সেটি আনতে যায়। এ সময় একটি চলন্ত বাস তাকে চাপা দেয়। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনার পর স্থানীয় বিক্ষুব্ধ জনতা দুর্ঘটনাকবলিত বাসটিকে আটক করে পার্শ্ববর্তী একটি স্কুল মাঠে নিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন। শ্রমিকদের দাবি, এটির পাশাপাশি আরও অন্তত ৩টি বাস ভাঙচুর করা হয়েছে।
এর প্রতিবাদে আজ সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) পরিবহন শ্রমিকেরা সিলেট–জকিগঞ্জ সড়কে বাস চলাচল বন্ধ রাখেন। এছাড়া রোববার রাতে ক্ষতিগ্রস্ত বাসের হেল্পার বাদী হয়ে অজ্ঞাত অর্ধশত ব্যক্তিকে আসামি করে জকিগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগপত্র দায়ের করেছেন।
শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মুহিত বলেন, 'আমাদের বাসচালক অন্যায় করলে আইন অনুযায়ী বিচার হবে। কিন্তু বাস ভাঙচুর ও পুড়িয়ে দেওয়া সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।'
তিনি আরও বলেন, তাদের অন্তত ৪টি বাসে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এ ঘটনার 'প্রতিবাদে ও নিরাপত্তার অভাবে' সোমবার তারা সিলেট–জকিগঞ্জ সড়কে বাস চলাচল বন্ধ রাখেন।
'মঙ্গলবার সকাল থেকে পুরো সিলেট জেলায় কর্মবিরতি পালন করা হবে। আমাদের সঙ্গে অন্য পরিবহন শ্রমিক সংগঠনগুলোও একাত্মতা পোষণ করবে।'
জকিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহিরুল ইসলাম মুন্না জানান, বাস ভাঙচুরের ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে; তদন্ত করা হচ্ছে। উপজেলায় যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য সতর্ক অবস্থানে রয়েছে পুলিশ।
এদিকে, সোমবার সকাল থেকে সিলেট–জকিগঞ্জ সড়কে বাস, মিনিবাস ও মাইক্রোবাস চলাচল বন্ধ থাকায় যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েন। বিশেষ করে অফিসগামী যাত্রীরা বিকল্প যানবাহনে বেশি ভাড়া গুনে যাতায়াত করেন।
পথচারীরা অভিযোগ করেন, বাস শ্রমিকরা বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ করায় সিএনজি অটোরিকশাও চলাচল করতে পারেনি। ফলে জরুরি প্রয়োজনে বের হওয়া লোকজনের ভোগান্তি আরও বেড়ে যায়।
উল্লেখ্য, নিহত কিশোর আবির আহমদ জকিগঞ্জের গণিপুর কামালগঞ্জ স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্র এবং বারঠাকুরী ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামের বাহার উদ্দিনের ছেলে।